রিপোর্ট:- মোঃ জাহাঙ্গীর আলম পলক,
★ লেগুনা ড্রাইভার থেকে হয়েছেন কোটিপতি ও এলাকার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান।
★ নিজের ও আত্মীয় স্বজনের নামে ২৭ টি ব্যাংক একাউন্ট।
★ লোভ দেখিয়েও বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাত।
★ রেন্ট এ কার ব্যবসার নামে অভিনব কায়দায় প্রতারণা।
গাড়ি ব্যবসার নামে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের দেওয়া তথ্যে ভিক্তিতে আরো ২০টি মাইক্রোবাস উদ্ধার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগ।
গ্রেফতারকৃত মোঃ জাকির হোসেন কুমিল্লা জেলার মেঘনা থানার ২নং মানিকাচর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান।
বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর ) সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ ।
তিনি বলেন , গত ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখ রাজধানীর মুগদা থানায় একটি প্রতারণার মামলা রুজু হয়। মামলাটি গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগ ছায়াতদন্ত শুরু করে। তদন্তকালে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত জাকির চেয়ারম্যান বন্দর থেকে স্বল্প দামে গাড়ি ক্রয় করে দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে টাকা নেয়।
পরে ক্রয়কৃত গাড়ি রেন্ট-এ কারের মাধ্যমে মাসিক ভাড়ায় পরিচালনা করার জন্য চুক্তিবদ্ধ করে। পরবর্তীতে একই গাড়ির বিপরীতে একাধিক ব্যক্তির সাথে ভুয়া কাগজপত্র দ্বারা চুক্তি সম্পাদন করেন। তাছাড়া একই রেজিস্ট্রিশন নম্বর সম্বলিত গাড়ি একাধিক ব্যক্তির নিকট জাল দলিলের মাধ্যমে বিক্রয় করতো। অধিকাংশ ক্ষেত্রে শুধু ইঞ্জিন নম্বর ও চেসিস নম্বর দিয়ে গাড়ি বিক্রির চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করেন। গাড়িটি নিজেই ভাড়া নিয়ে মাসিক ভাড়া পরিশোধের ভিত্তিতে পরিচলনা করার কথা বলে কিছুদিন ভাড়া পরিশোধ করে। পরবর্তীতে ভাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেয় ও গাড়ি ক্রয়ের অর্থ আত্মসাৎ করেন। এছাড়াও পূর্বের বিক্রয়কৃত গাড়ী স্বল্প মূল্যে মালিকানা হস্তান্তরের লোভ দেখিয়েও বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন বলে জানা যায়।
তিনি আরো বলেন, সেপ্টেম্বর মাসের ২১ তারিখ কুমিল্লা জেলার মেঘনা থানা এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগের তেজগাঁও জোনাল টিম। এসময় তার হেফাজত হতে ২টি মাইক্রো বাস উদ্ধার করা হয়েছে। পরে পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আরো ২০টি মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারক জাকির প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের সাথে প্রতারণা করেছেন বলে শিকার করেন। যাদের মধ্যে ব্যবসায়ী, সরকারী কর্মকর্তা ও সরকারের এমপি রয়েছেন। একটি গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নাম্বার দেখিয়ে ৩৭ জনের নিকট ষ্ট্যাম্প করে বিক্রি করেছেন।
তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারকৃত জাকির ৫-৬ জনের সহযোগীর সহায়তায় সে প্রতারণা করতো। সে আনুমানিক হাজার কোটি টাকা বিভিন্ন প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছেন। তার আত্মীয় স্বজনের নামে ২৭ টি ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে। তার নামে বিভিন্ন থানায় ১২ টি প্রতারণার মামলাও রয়েছে।
মন্তব্য