বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
 

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে শামীম ওসমানকে চায় তৃণমূল আ.লীগ

কণ্ঠস্বর ডেস্ক, ঢাকা
প্রকাশ: ৮ অক্টোবর ২০২২

---

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: মোঃ ইমরান হোসেন তালহা,

আগামী ২৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। জেলা আ.লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন নেতার অনুসারীরা নিজেদের নেতাকে দেখতে চান জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষপদে। নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য একে এম শামীম ওসমানের সমর্থকরাও জেলার শীর্ষ পদে দেখতে চান শামীম ওসমানকে। জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মুখে মুখে এখন আলোচনায় ওসমান পরিবারের এই সদস্যকে। তার অনুসারী সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরাই চাচ্ছেন তাকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দেখতে।

তৃনমুল আওয়ামী লীগ কর্মীদের দাবি নারায়ণগঞ্জের অন্যান্য আসনের সংসদ সদস্যরা সংশ্লিষ্ট এলাকার আওয়ামী লীগের শীর্ষ পদে থাকলেও একমাত্র শামীম ওসমানেই পদ পদবী থেকে দূরে রয়েছেন। আর তাই এবার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাকে দূরে না দেখে জেলার শীর্ষ পদে দেখতে চাচ্ছেন।

দলীয় সূত্র বলছে, আগামী ২৩ অক্টোবর শহরের ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সম্মেলনকে সফল করার লক্ষ্যে বর্ধিত সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে নির্ধারিত দিনেই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। আর এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের অনেক নেতাই আলোচনায় রয়েছেন। তাদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানও আলোচনায় রয়েছেন। নেতাকর্মীদের মুখে মুখে রয়েছেন তিনি। যেন তার অপেক্ষায় প্রহর গুণছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের রূপগঞ্জ আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে রয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী সেখানকার তথা নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী। ২০১৯ সালের ১৩ জুলাই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে রূপগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদটি দখল করে নেন গোলাম দস্তগীর গাজী। সেই সাথে গত ৬ সেপ্টেম্বর পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার মধ্য দিয়ে সহ সভাপতি হিসেবে জায়গা করে দিয়েছেন তার ছেলে গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পাকে। তিনি একজন সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রী হওয়ার পাশাপাশি আবার তার এলাকার আওয়ামী লীগের পদটিও তার দখলে রেখেছেন।

একই সাথে আড়াইহাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে রয়েছেন সংশ্লিষ্ট তথা নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু। ২০১৯ সালের ২২ জুলাই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে তিনি এই সভাপতি পদে জায়গা করে নেন। সেই সাথে ২০২১ জানুয়ারিতে ঘোষিত পূর্ণাঙ্গ কমিটিতেও তার অনুসারিদের জায়গা করে দিয়েছেন। টানা তিন মেয়াদ ধরে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করার পাশাপাশি থানা উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পদটিও তার দখলে রেখেছেন।

পাাশপাশি সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে জায়গা করে নিয়েছেন সেখানকার তথা নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত। গত ৩ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সম্মেলনের মধ্য দিয়ে তিনি সাধারণ সম্পাদক পদে জায়গা করে নিয়েছেন। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও মনোনয়ন প্রত্যাশী। তারপরেও তিনি তার এলাকার শীর্ষ পদে রয়েছেন।

বিপরীতে নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের কোনো পদেই নেই এখানকার তথা নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। যেখানে সভাপতি হিসেবে রয়েছেন এম সাইফউল্লাহ বাদল এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন শওকত আলী। এখানে আসারও চেষ্টা করেননি তিনি।

সবশেষ ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ঘোষিত ফতুল্লা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে শামীম ওসমান ও তার স্ত্রী সালমা ওসমান লিপি এবং ছেলে ইমতিমান ওসমান অয়নকে কার্যকরি সদস্য হিসেবে জায়গা দেয়া হয়। কিন্তু সেখানেও থাকতে রাজী হননি তিনি। সেই সাথে তারা নিজ ইচ্ছায় ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের কার্যকরি সদস্যের পদ থেকে সরে যান। বর্তমানে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের কোনো পদে নেই।

এদিকের সামনের দিনগুলোতে আন্দোলন সংগ্রামের দিকে এগোচ্ছে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী দল বিএনপি। ইতোমধ্যে তারা নারায়ণগঞ্জে কয়েক দফায় নিজেদের শক্তিমত্তার পরিচয় দিয়েছেন। আর তাই তাদের প্রতিরোধ করার জন্য হলেও একজন প্রভাবশালী নেতার প্রয়োজন। আর এসকল দিক বিবেচনায় নেতাকর্মীরা জেলা আওয়ামী লীগে প্রভাবশালী নেতা শামীম ওসমানকেই চাচ্ছেন।

নেতাকর্মীদের মতে, শামীম ওসমানই নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যোগ্য নেতা। তিনি মাঠে নামলে অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা মাঠে নামার সাহস পাবে না। অতীতেও তিনি জেলা আওয়ামী লীগরে সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই সাথে দক্ষতারও পরিচয় দিয়েছেন। তার নেতৃত্বে জেলা আওয়ামী লীগের সে সময়ের নেতাকর্মীরা নারায়ণগঞ্জের রাজপথে সরব ভূমিকা পালন করেছিল। রাজপথ দাবাড়িয়ে বেড়াতেন তারা। যে কারণে শামীম ওসমানকে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আনতে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের মোড় ঘুরে যাবে। যা সারাদেশেই প্রভাব পরবে।

এর আগে ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর আবদুল হাইকে সভাপতি, সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে সহ সভাপতি এবং আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদলকে সাধারণ সম্পাদক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট জেলা আওয়ামীলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্র। এর ১৩ মাস পর নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ৭৪ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্র।

মন্তব্য

পঠিতসর্বশেষ

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon