যুগের কণ্ঠস্বর প্রতিবেদক,
মোবাইল ফোন বেচা-কেনার জন্য রাজধানীরবাসীর অন্যতম পছন্দের মার্কেট মোতালেব প্লাজা। হাতিরপুর এলাকার এ ভবনটির পেছনে একটি বাড়িতে তৈরি হতো নোকিয়া-স্যামসাংসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ফিচার ফোন। সেগুলো আবার বিক্রি হতো বিভিন্ন মার্কেটে। এসব ফোন তৈরিকারী ৬ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর)।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মশিউর রহমান (৪৪), সাগর হোসেন (৩৪), রহমত আলী (২৫), সুজন আলী (৩৫), তরিকুল ইসলাম বাবু (৫০) ও মনির হোসেন (৩৫)। গত কয়েক বছর ধরে তারা এ অপরাধের সঙ্গে জড়িত। বিভিন্ন সময় অভিযোগের ভিত্তিতে কয়েকটি মোবাইল কোম্পানির দেশিয় প্রস্তুতকারী ও পরিবেশকরা মামলা দায়ের করে। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার এক অভিযানে মোতালেব প্লাজা ও মোতালেব টাওয়ার থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর)।
এ সময় ৩১৩টি নোকিয়া ও ২০৬ স্যামসাং ব্র্যান্ডের ফিচার ফোন, মোবাইল তৈরির মেশিন ও বিপুল পরিমাণ যন্ত্রাংশ জব্দ করে পুলিশ।
সোমবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
ডিবি প্রধান বলেন, এসব নকল মোবাইল তৈরির জন্য নষ্ট মোবাইল মেরামত করার কথা বলে চায়না থেকে যন্ত্রপাতি কিনে আনতো চক্রটি। যা খালাস হতো চট্টগ্রাম বন্দরে। এই যন্ত্রপাতি এক জায়গায় করে কোনো নিয়ম না মেনে অবৈজ্ঞানিকভাবে প্রস্তুত করা হতো নোকিয়া ও স্যামসাংয়ের মতো ব্র্যান্ডের মোবাইল। এসব মোবাইল এক থেকে দুই মাসে নষ্ট হয়ে যেত।
তিনি বলেন, প্রস্তুতকারী নিয়ম না মানায় এসব মোবাইলের রেডিয়েশন তারতম্য বা নিয়ন্ত্রণ ঠিক থাকে না। তাই ব্যবহারকারীরা চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকেন। এসব নকল মোবাইল বিস্ফোরণের সম্ভাবনাও থাকে সব থেকে বেশি। আইএমইআই নাম্বার বদলে মোবাইল তৈরির কারণে এসব ব্যবহার করে অপরাধীরা সহজেই অপরাধ করতে পারে। এতে তাদের চিহ্নিত করতে অসুবিধা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ আরও বলেন, চক্রটি পাঁচ-ছয় বছর যাবত এ কাজ করে আসছিল। তারা ঢাকা ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকার নামি মার্কেটে এসব ফোন ছড়িয়ে দেওয়ার বড় ধরনের পরিকল্পনা করেছিল। চক্রের কয়েকজন বিভিন্ন দোকানে স্বল্প মূল্যে ফোনগুলো সাপ্লাই করতো। নকল এসব ফোন বিক্রির কারণে ৮ থেকে ১০ কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে সরকার। চক্রটির সঙ্গে কোনো ব্যবসায়ী জড়িত কিনা, নিশ্চিত হওয়া যায়নি। গ্রেপ্তার রিমান্ডে নিয়ে এসব বিষয়ে খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানান তিনি।
মন্তব্য