জহরুল ইসলাম: বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি,
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামই ভুলভাবে লেখার অভিযোগ তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। একই নামে পিরোজপুরে নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয় গঠিত হয়েছে যার ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিচয় প্রদানে বিড়ম্বনায় পড়ার শঙ্কায় আছেন অনেকে। তার মধ্যে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট এবং ট্রান্সক্রিপ্টে দুইরকম বানান থাকায় তা চাকরি এবং বিদেশে উচ্চশিক্ষায় আবেদনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের আরও ভোগান্তিতে ফেলবে বলে তারা ধারণা করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রভিশনাল সার্টিফিকেট বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম লেখা হয়েছে ‘Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman Science and Technology University’ এবং একাডেমিক ট্রাসক্রিপ্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম লেখা হয়েছে ‘Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman Science & Technology University, Gopalganj। তবে ২০০১ সালে জাতীয় সংসদে পাসকৃত বশেমুরবিপ্রবি আইনের ধারা ৩ এর ১ নং উপধারায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, ‘Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman Science and Technology University’।
এ বিষয়ে আইন বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হাসান মাহমুদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম হবে ইউনিক। যেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবিধান “বশেমুরবিপ্রবি আইন, ২০০১ এ আছে, শুধু মাত্র সেই নামটাই ব্যবহার করা যাবে। একটা কমা ও এদিক সেদিক করা যাবেনা। কিন্তু বর্তমানে সার্টিফিকেট তুলতে গিয়ে আমরা দেখতেছি, ট্রান্সক্রিপ্ট এবং সার্টিফিকেট দুই জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম দুই রকম। এটা একটা গাফিলতি এবং এর দায়ভার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিতে হবে। শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রান্সক্রিপ্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের বানানেই ভুল থাকাটা কখনোই কাম্য নয়। এধরণের ভুলই প্রমাণ করে শিক্ষার্থীদের কাজগুলো কতটা অবহেলার সাথে করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৪-৫ হাজার শিক্ষার্থী পাস করে বিদায় নিয়েছেন। তাদের সকলের হাতেই ভুল নামের বানানের ট্রান্সক্রিপ্ট তুলে দেওয়া হয়েছে। এটাকে ভুল বলার কোনো সুযোগ নেই। এটা অপরাধ। এর সাথে যারা জড়িত তাদের সকলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পর এখন যদি বিষয়টি সমাধান করাও হয় তাহলেও এটি ভবিষ্যতে যারা সার্টিফিকেট নিবে তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে, কিন্তু আমরা যারা সার্টিফিকেট ইতোমধ্যে উত্তোলন করেছি তাদের ক্ষেত্রে কি হবে? আমাদের কি সারাজীবন এই ভুল নামের সার্টিফিকেটই বয়ে বেড়াতে হবে? একজন শিক্ষার্থী হিসেবে মনে করি বিশ্ববিদ্যালয়ের উচিত অতিদ্রুত সঠিক বানানে সাটিফিকেট প্রদানের ব্যবস্থা করাসহ ইতোপূর্বে যারা সার্টিফিকেট উত্তোলন করেছিলো তাদের সকলকে নিজ উদ্যোগে পুনরায় সঠিক বানানসহ সার্টিফিকেট ও ট্রান্সক্রিপ্ট প্রদানের ব্যবস্থা করা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুলের জন্য যেনো শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে না হয়।’
এ বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম গোলাম হায়দার বলেন, ‘আমাদের সাটিফিকেট ও একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্টের বিষয়ে একটি কমিটি রয়েছে। লেখা সহ সকল বিষয়ে মূলত কমিটি সিদ্ধান্ত নেয়। ইতোমধ্যে নামের বিষয়টি সমাধানের জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে। আশা করছি দ্রুতই বিষয়টি সমাধান হবে।’
যারা ইতোপূর্বে সার্টিফিকেট ও একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট নিয়েছে তাদের কি হবে এবং তাদের ফি ব্যতিত নতুনভাবে সার্টিফিকেট-ট্রান্সক্রিপ্ট প্রদান করা হবে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘সমাবর্তনের মাধ্যমে যখন মূল সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে সেখানে কোনো ভুল থাকবে না। আর যারা ইতোমধ্যে সার্টিফিকেট-ট্রান্সক্রিপ্ট নিয়েছে তাদের নতুন করে এগুলো আবার দেয়া যায় কিনা এ বিষয়ে আমি একা কিছু বলতে পারবো না। আমরা আমাদের পরবর্তী মিটিংয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো এবং শিক্ষার্থীদের যাতে কোনোরূপ ভোগান্তি না হয় সেই চেষ্টা করবো।’
মন্তব্য