সামনে তৈরি পোশাক শিল্পে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে মনে করেন তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ-এর সভাপতি ফারুক হাসান।তিনি বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব সারা বিশ্বে পড়েছে। এর জন্য মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে গেছে। মুদ্রাস্ফীতি ও সরবরাহ কমানোর জন্য সুদহার বাড়াতে হবে। সুদ বাড়ালে উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। এ কারণে বৈশ্বিকভাবে পণ্য কেনার শক্তিটা কমে যাবে। এসব কারণে সামনে তৈরি পোশাক শিল্পে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ।
সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘নেটওয়ার্ক টু ইন্টিগ্রেটেড প্রোডাক্টিভিটি অ্যান্ড অকুপেশনাল সেফটি অ্যান্ড হেলথ ইম্প্রুভমেন্টস (নিপশ)’ শীর্ষক প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ইউনি স্ট্রুপ পিটারসেন গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মুহাম্মদ ফাজলী ইলাহী।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি কীভাবে দক্ষতা বাড়াতে পারি, উৎপাদন বাড়াতে পারি। প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসুরক্ষা, নিরাপত্তা উন্নয়ন করে কর্মীদের সঙ্গে এমনভাবে কাজ করতে চাই যাতে দক্ষতা বাড়িয়ে অপচয় কমাতে পারি। আমরা প্রতিযোগিতায় থাকতে চাই এবং বৈশ্বিক বাজারে যতটুকুই বিক্রি হবে যা মার্কেট শেয়ার এখন আমাদের আছে, তার থেকে বাড়াতে চাই।’
ফারুক হাসান বলেন, ‘আমাদের সংকট শুরু হয়েছে সেপ্টেম্বর থেকে। এ জন্য নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ মাসে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা আরও কমে যাবে। গত মাসে ৭ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি ছিল। চলতি মাসে তার থেকে অনেক বেশি হবে।’
ফারুক হাসান বলেন, ‘আমাদের সংকট শুরু হয়েছে সেপ্টেম্বর থেকে। এ জন্য নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ মাসে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা আরও কমে যাবে। গত মাসে ৭ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি ছিল। চলতি মাসে তার থেকে অনেক বেশি হবে। কারণ অনেক বায়ার অর্ডার হোল্ড (ক্রয়াদেশ স্থগিত) করে দিয়েছে। অনেকে বাদ দিয়েছে। এর পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংকটের কারণে যতটুকু উৎপাদন করার কথা ছিল তাও করতে পারছি না। আমাদের আমদানি-রপ্তানি প্রতিবদ্ধকতা কাটাতে রুলস-রেগুলেশনে আরও উন্নয়ন না করলে বৈশ্বিক বাজারে টিকে থাকতে পারব না। তবে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘আমরা যা রপ্তানি করি, তার দুটি প্রধান কাঁচামাল আছে। একটি কটনবেজ। গার্মেন্টসের জন্য কটন। আর নন-কটনের জন্য ম্যানমেইড ফাইবার। এগুলোর কোনোটিই আমাদের দেশে হয় না। সেটি আমাদের আমদানি করতে হয়। তারপর আমারা এখানে সুতা, ফেব্রিক বানাই। বিভিন্ন অ্যাকসেসরিজ তৈরি করি। এই কাঁচামাল আনতেই অনেক বাধা পেতে হচ্ছে। অনেক হয়রানির শিকার হচ্ছি। কাস্টমসে বন্ডের মাধ্যমে, বন্দরে হয়রানির কারণে পিছিয়ে পড়ছি। তৈরি পোশাকশিল্প সময়ের সঙ্গে বাধা। আমরা যদি সময়মতো শিপমেন্ট করতে না পারি, তাহলে বাদ পড়ে যেতে হয়।’
সরকার আমদানি কমিয়ে রিজার্ভ বাড়ানোর চেষ্টা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা একটা স্ট্র্যাটেজি। তবে এভাবে তো আর ধরে রাখা যায় না। আমদানি কমালে ট্যাক্স কমে যাবে। এই কৌশল আদতে দেশের জন্য ভালো হয় না।’
এর আগে নিপশ প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী কারখানাগুলোকে সার্টিফিকেট ও ক্রেস্ট তুলে দেন তিনি।
এ ছাড়া প্রকল্পে অংশগ্রহণকারী তিনটি সেরা প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়। এর মধ্যে ফোর-এ ইয়ার্ন ডায়িং লি. চ্যাম্পিয়ন, শিন-শিন অ্যাপারেলস লি. প্রথম রানারআপ, ইমপ্রেস নিওটেক্স অ্যান্ড কম্পোজিট টেক্সটাইলস দ্বিতীয় রানার আপ হয়েছে।
মন্তব্য