মোঃ ইব্রাহিম শেখ চট্টগ্রাম ব্যুরো:
দিনভর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরেছে একটি ভিডিও। যেখানে দেখা যায়, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা প্রসূতি রোগীকে এক নার্স চিকিৎসা না দিয়ে পাঠিয়ে দিচ্ছেন বেসরকারি
হাসপাতালে।
জান্নাতুল মাওয়া নামের এক নারী এই ভিডিও শেয়ার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, ‘দালালের খপ্পর থেকে মুক্তি চায় পটিয়াবাসী। পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতে রোগী বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর ও টাকা লেনদেন করছেন সেবিকা নুর নাহার বেগম ও সহায়তা করছেন তার সহকারী লাকি, যিনি সরকারি কোনো কর্মচারী নন’।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে. ঘটনাটি সপ্তাহখানেক আগের। বিকেল ৩টার দিকে প্রসূতি নারীকে নিয়ে পটিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসেছিলেন এক ব্যক্তি। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি না করিয়ে নূর নাহার নামে হাসপাতালের এক নার্স ওই রোগীকে পাঠিয়ে দেন বেসরকারি হাসপাতালে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, প্রায় প্রতিদিনই দুপুরের পর রোগীদের বিভিন্নভাবে প্ররোচিত করে হাসপাতালের বাহিরে বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয় একটি সংঘবদ্ধ দালাল চক্র। এ চক্রের একজন হাসপাতালে দায়িত্বরত নার্স নূর নাহার। সরকারি নার্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও নিজের সুবিধার্থে তিনি রোগীদের পাঠিয়ে দেন অন্যত্র। অভিযোগ আছে, ওই নার্সের স্বামী ও সন্তানের নামে বেসরকারি হাসপাতালে শেয়ার থাকায় রোগীদের সেখানে পাঠানো হচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নার্স নূর নাহার বিষয়টি অস্বীকার করেন। উল্টো সামশুন্নাহার নামে এক ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার ভিজিটর বাহিরে চেম্বার করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তবে সামশুন্নাহার নামে এই পদবীর কেউ চাকরি করেন না বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা।
হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ম্যের কথা স্বীকার করে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. সব্যসাচী নাথ বলেন, হাসপাতালে প্রসূতি রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য আমাদের সব ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে। আমার চেষ্টা করি নরমাল ডেলিভারি করাতে। তবে পরিস্থিতি খুবই জটিল হলে সেক্ষত্রে সিজার করানোর পরামর্শ দেই। এত সুবিধা থাকা স্বত্ত্বেও রোগীদের সেবা দিতে পারছি না শুধুমাত্র দালালের দৌরাত্ম্যের কারণে। তবে আমরা হাসপাতাল দালাল মুক্ত করতে কাজ করছি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও আমাদের সহায়তা করছেন। সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া হাসপাতালের রোগী ভাগিয়ে দেওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এমন একটি ভিডিও দেখেছি। আমরা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে দেখবো। যদি কেউ এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য