যুগের কণ্ঠস্বর প্রতিবেদক,
কম্বোডিয়ায় সাইবার ক্রীতদাস হিসাবে মানবপাচারকারী চক্রের ০১ জন অন্যতম মূলহোতা কে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃতর নাম মোঃ হারুন মিয়া(৫৪), এসময় তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন ০১ টি, সীমকার্ড ০২ টি এবং ভূয়া এনআইডি কার্ড ০১ টি উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) বিকেল এ র্যাব-৩ প্রেরিত এক বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
র্যাব জানায়, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-৩ এর একটি আভিযানিক দল ২৫ অক্টোবর বিকেল এ রাজধানীর পল্টন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কম্বোডিয়ায় মানবপাচার চক্রের অন্যতম মূলহোতা কে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক অনুসন্ধান ও গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সংঘবদ্ধ মানবপাচার চক্রের অন্যতম মূলহোতা ছিলেন হারুন। সে বাংলাদেশ হতে বিভিন্ন দালালের মাধ্যমে উচ্চ বেতনে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে চাকুরী দেয়ার নাম করে ভিকটিম এবং তাদের অভিভাবকদের প্রলুব্ধ করে। সে দালালদের মাধ্যমে শিক্ষিত, কম্পিউটার বিষয়ে পারদর্শী বেকার যুবক যুবতীদের প্রলুব্ধ করে থাকে। কম্বোডিয়ায় প্রেরণের খরচ বাবদ প্রাথমিক ভাবে তারা ০৪ হতে ০৫ লক্ষ টাকা নিয়ে থাকে। তারপর তাদেরকে বিমানযোগে কম্বোডিয়ায় পাঠানো হয়।
অধিনায়ক জানান, কম্বোডিয়ায় যাওয়ার পর ধৃত হারুন মিয়া ও তার সহযোগী কম্বোডিয়া প্রবাসীদের সহায়তায় প্রথমে ভিকটিমদের কম্বোডিয়ার একটি হোটেলে নিয়ে যায় এবং তাদের নিকট হতে পাসপোর্ট ছিনিয়ে নেওয়া হয়। উক্ত হোটেলে কিছুদিন অবস্থান করার পর তাদেরকে কম্পিউটার বিষয়ে প্রশিক্ষণের জন্য একটি বিদেশী ট্রেনিং সংস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়। ঐখানে বিদেশী প্রশিক্ষকরা ভিকটিমদের গুগল ট্রান্সলেটর এর মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছদ্মনামে একাউন্ট পরিচালনা করে অন্যদের কিভাবে প্রতারণা করা যায়, ভ‚য়া ক্লোন ওয়েবসাইট ব্যবহার করে ক্রেডিট কার্ড হতে টাকা আত্মসাৎ করার কৌশল, ভ‚য়া নাম্বার হতে ফোন দিয়ে বা চ্যাটিং করে স্বল্প সুদে ঋণ দেয়ার নাম করে কৌশলে ডিপোজিট হাতিয়ে নেওয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভয়েস কল ও ভিডিও কল রেকর্ডিং করে পরবর্তীতে ব্লাকমেইল করে অর্থ আত্মসাৎ করার কৌশল শেখানো হয়। মানবপাচারকারীদের ভাষায় সাইবার প্রতারণার বিষয়টি স্ক্যামার হিসেবে পরিচিত। এভাবে তাদের ব্যবহার করে উক্ত মানবপাচারকারী চক্রটি সাইবার অপরাধের কার্যক্রম চালায়।
অধিনায়ক আরও জানান, উক্ত সাইবার প্রতারণার কাজে বাংলাদেশীদের ব্যবহার করার কারন হচ্ছে কোন বাংলাদেশী কম্বোডিয়া যাওয়ার পর তার পাসপোর্ট ছিনিয়ে নিলে সে পালিয়ে যেতে সক্ষম হবেনা বা স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট অভিযোগ করতে সক্ষম হবেনা। বাংলাদেশী ভুক্তভোগীরা উচ্চ বেতনে চাকুরীর প্রলোভনে পড়ে তার পরিচিতজনদের মাধ্যমেই দালালদের খপ্পরে পড়ে সর্বশান্ত হচ্ছে। ভুক্তভোগীরা দেশে ফিরে বাংলাদেশী দালালদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সক্ষম হলেও, কম্বোডিয়া প্রবাসী দালালরা ধরা ছোঁয়ার বাইরেই থেকে যায়।
অধিনায়ক বলেন গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
মন্তব্য