রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
 

সিএনজি আর ইজিবাইকের নগরী কুমিল্লা

JK0007
প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২২

---
‘কুমিল্লা’ নামটা শুনলে ভ্রমণপিয়াসুদের মাথায় প্রথমেই আসবে শালবন বিহারের নাম, ভোজনবিলাসীরা ভাববে রসে ডুবে থাকা টুসটুসে রসমালাইয়ের কথা। আবার কেউ ভাববে ধর্মসাগর পাড়ের কথা। কিন্তু কুমিল্লা শহরবাসীর মনে আসবে ইজিবাইক ( বড় অটো) কিংবা সিএনজির কথা।

কুমিল্লা নগরীর রাস্তা আর ইজিবাইকের ( বড় অটো) সম্পর্ক যেন বর্তমানে অবিচ্ছেদ্য। যেখানে তাকাবো সেখানেই দেখা পাওয়া যাবে এই ইজিবাইক ( বড় অটো) ও সিএনজি, তা হোক প্রধান রাস্তায় কিংবা শহরের অলি - গতিতে । তবে, এই দেখা পাওয়াটা খুব সুখকর অনূভূতি নয় নগরবাসীর জন্য। অতিরিক্ত এই যানবাহনগুলো সৃষ্টি করে তীব্র যানজটের।

প্রাচীন নগরী কুমিল্লায় এখন অন্যতম প্রধান সমস্যা যানজট। যানজটের সাথে কুমিল্লাবাসী পরিচয় বহু আগে থেকেই। কুমিল্লা অঞ্চল সিটি কর্পোরেশনভূক্ত হওয়ার আগে ও পরে নগরবাসীর এই সমস্যাটির সমাধান হয়নি। আর এই যানজটের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে, ইজিবাইক ( বড় অটো) ও সিএনজির যত্রতত্র পার্কিং, সড়কের উপড় তাদের অবৈধ স্ট্যান্ড, সড়কের সংকীর্ণতা, অনুমোদনহীন তিন চাকার যানবাহনের রাজত্ব।

যত্রতত্র পার্কিংঃ
ইজিবাইক (বড় অটো) আর সিএনজিগুলো পার্কিং-এর ন্যূনতম নিয়ম মেনে চলে না। যেখানে সেখানে দাঁড় করিয়ে যাত্রী নামানো-উঠানো তাদের নিত্য দিনের কাজ। কিন্তু তাদের এই কাজটি সৃষ্টি করে যানজটের, কখনও কখনও দূর্ঘটনার ঘটনাও ঘটে।

অবৈধ স্ট্যান্ডঃ
কুমিল্লা নগর জুড়ে গড়ে উঠেছে যত্রতত্র সিএনজি চালিত ইজিবাইকের (বড় অটো) স্ট্যান্ড। নথিবদ্ধ সাড়ে দশহাজার রিকশা থাকলেও ইজিবাইক (বড় অটো) ও সিএনজির সংখ্যা কত সঠিক তথ্যও নেই সিটি করপোরেশনেও। আর এসব যানবাহনের বাড়তি চাপে গড়ে উঠেছে অবৈধ স্ট্যান্ড। একটি সূত্র মতে, নগরীর কান্দিরপাড়, লাকসাম রোড, টমছম ব্রিজ, রেইসকোর্স, রাজগঞ্জ, শাসনগাছা, ফৌজদারি, ঈদগাহ, কাপ্তান বাজার, আদালত, বাখরাবাদ ও চকবাজারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে সিএনজি ইজিবাইকের (বড় অটো) স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে।-নিয়ম অনুযায়ী হওয়ার কথা নয়।

সড়কের সংকীর্ণতাঃ
সংকীর্ণ সড়কগুলোতে প্রতিনিয়ত বাড়তি চাপে বেড়ে চলেছে যানজটের দৈর্ঘ্য। যানজটের কারণে মানুষের হেঁটে চলাও কষ্টকর হয়ে পড়ে। প্রতিদিন কান্দিরপাড়-টমছম ব্রিজ সড়ক, কান্দিরপাড়-রানীর বাজার সড়ক ও রাজগঞ্জ-চকবাজার সড়কে ভয়াবহ যানজট লাগছে।

অনুমোদনহীন যানঃ
ইজিবাইক (বড় অটো) ও সিএনজিগুলো বেশিরভাগই অনুমোদনহীন। কিন্তু সেগুলো রাস্তায় চলছে আইনের ফাঁক গলেই। সেদিকে খেয়াল রাখতে মাঝেমধ্যে অভিযান চললেও পুনঃপুন আগাছার মতো ফিরে আসছে অবৈধ যানবাহনের সংখ্যা।

ট্রাফিক নিয়মের অনিয়মঃ
অনুমোদনহীন এসব বাহনগুলো রাস্তায় চলে ট্রাফিকের নিয়মের তোয়াক্কা না করেই। এতে যেমন স্বাভাবিক যান চলাচল ব্যাহত হয়ে সৃষ্টি হয় যানজটের তেমনি বেড়ে যায় দূর্ঘটনার সম্ভাবনাও।

একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এবিষয়ে কুমিল্লার ট্রাফিক পরিদর্শক জিয়াউল টিপু বলেন, কুমিল্লা নগরীতে সিএনজি আর ইজিবাইক (বড় অটো) নির্দিষ্ট স্ট্যান্ড নেই। যত্রতত্র স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। এ ছাড়া বেড়েছে অনুমতিবিহীন ইজিবাইক (বড় অটো) ও সিএনজি । এতে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনসহ সিভিল প্রশাসনের ভূমিকা প্রয়োজন। নগরীর বিভিন্ন রোডে গড়ে উঠা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শো-রুমগুলো অনেকগুতেই নেই পার্কিং ব্যবস্থা। ক্রেতারা তাদের গাড়ি রাস্তায় রাখেন।

কুমিল্লার যানজট নিরসনে ও জন দূর্ভোগ কমাতে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ ও তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলেই কেবল নগরবাসী যানজট থেকে স্বস্তি পাবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ইজিবাইক (বড় অটো) আর সিএনজির দৌরাত্ম্য থেকে বাঁচতে এবং যানজট মুক্ত সড়কের চাহিদা এখন জনগণের দাবী।

মঈন নাসের খাঁন (রাফি) 

কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি

 

মন্তব্য

সর্বশেষপঠিত

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon