স্টাফ রিপোর্টারঃ
খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের স্টেনো কাম টাইপিস্ট (পেশকারের দায়িত্ব পালনকারী) শেখ ডালিম হোসেনের বিরুদ্ধে কু প্রাস্তাবে রাজি হলে মামলার দায় দায়িত্ব নেওয়া, জাবেদা নকল ও জামিন মঞ্জুর করাতে ঘুষ গ্রহণ সহ নানাবিধ অভিযোগ উঠেছে । এবিষয়ে গত বুধবার মোছাঃ ময়না খাতুন কয়রা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক দেলোয়ার হোসেন বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।একই ব্যক্তির বিরুদ্ধে গত ১৪ সেপ্টেম্বর আফরিন সুলতানা ও ২৭ অক্টোবর রোকেয়া খাতুন নামের দুইজন মহিলা খুলনা জেলা জজ আদালতের জজ বাহাদুর বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। যার কপিগুলো গত বৃহস্পতিবার এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।
অভিযোগের কপি থেকে জানা গেছে,স্টোনো ডালিম কয়রা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদলতে দ্বিতীয় দফায় যোগদানের পর থকে অদৃশ্য ছায়া শক্তিতে আদলত নিয়ন্ত্রণ করছেন। ঘুষ না দিলে কোন কাজ করেন না তিনি। গত ১৯ অক্টোবর জি আর ১৯/২২ মামলায় চার্জ গঠনের দিন দার্য থাকায় ওই দিন সকালে অভিযোগকারী রোকেয়া খাতুন স্টোনোর অফিস রুমে দেখা করতে গেলে তার কাছে পঁনের হাজার টাকা ঘুষ ও শারীরিক মেলামেশার প্রস্তাব দেন।মেলামেশা করলে মামলার দায় দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
কয়রা সহকারী জজ আদালতের মিস ৭/২২ নং মামলার আদেশ সবুর আলী গাজীর পক্ষে আদেশ করিয়ে দেওয়ার জন্য বিশ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ। সবুর আলী গাজীর পক্ষে আদেশ করিয়ে না দিতে পারায় বিচারকে জানালে উক্ত টাকা বিচারকের আদেশে ফেরৎ প্রদান। সি আর ২২৩/২২ মামলার আসামিকে জামিন প্রদানের জন্য আসামির স্ত্রী ময়না খাতুনের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ। জামিন করাতে না পারলে উক্ত টাকা ফেরৎ চাহিলে পুনরায় জেল হাজতে পাঠানোর হুমকি প্রদান।এছাড়াও স্হানীয় এক দুই সন্তানের জননীকে পরকীয়ার মাধ্যমে ভাগাইয়া নিয়ে যাওয়ার উল্লেখ রয়েছে অভিযোগ পত্রে।
উকিল ও মহুরার সাথে কথা বলে আরও জানা গেছে,সি আর ৬২৮/২১ মামলায় দিলরুবা খাতুনের কাছে বিশ হাজার, নন জি আর ৭২/২১ মামলায় নাছির কাছে এক হাজার, সি আর-৬১৫/২২ মামলার আসামী রিমি বাদশা এর কাছ থেকে ওয়ারেন্ট আটকানো ও জামিন করা বাবদ ছয় হাজার নেন স্টোনো ডালিম। বনবিভাগের করা মামলায় আসামিদের জামিন করিয়ে দেওয়ার কথা বলে স্হানীয় এক ইউপি সদস্য কাছ থেকে বিশ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ। পরবর্তীতে জামিন করাতে না পারলে উক্ত ইউপি সদস্য কোর্ট চত্বরে স্টোনোকে মারপিট করতে গেলে সাথে সাথে টাকা ফেরৎ দেন।
মোছাঃ রোকেয়া খাতুন বলেন,আমি দীর্ঘদিন কয়রা উপজেলার অফিসারদের রান্নির কাজ করি।শেই সুবাধে স্টোনো ডালিমকে চিনি।আমার ফুফাতো ভাই মাসুদ সানার বিরুদ্ধে কয়রা কোর্টে একটি মমলা চলমান আছে। গত ১৯ আক্টোবর ওই মামলার চার্জ গঠনের দিন থাকলে ওই দিন সকালে তার অফিসে ডেকে পনের হাজার টাকা ঘুষ ও তার শারীরিক মেলামেশার প্রস্তাব দেন।তার প্রস্তাবে রাজি হলে মামলার দায়িত্ব নেওয়ার কথাও বলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আইনজীবী বলেন,স্টোনো ডালিম কয়রার কিছু রাজনৈতিক নেতাকে ম্যানেজ করে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।ঘুষ ছাড়া কোন কাজ করেন না তিনি। তার কাছে মামলার কোন বিষয় নিয়ে কোন গরিব সুন্দরী মহিলা/মেয়ে গেলে তাদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে অনৈতিক সম্পর্ক স্হাপনের প্রস্তাব দেন।সে (স্টোনো)আইনজীবী ও মহুরারদের সাথেও খারাপ আচরণ করেন বলে আইনজীবীরা জানান।এছাড়াও জামিন হওয়ার পরও আসামীরা বের হলো কিনা, বা কোন ভুলে জেল হাজতে আটকা আছে কিনা সে ব্যাপারে ও কোন খোজখবর রাখেন না বলেও তারা জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আইনজীবী সহকারী জানান, বন বিভাগ ও পুলিশ কর্তৃক ধৃত মাছ নিজস্ব লোকজন দিয়ে নিলামে অংশগ্রহণ করিয়ে অল্প দামে কিনে বাইরে চড়াও দামে বিক্রি করে। তারা এটাও বলেন সাত লক্ষ সাতাশি হাজার টাকার শুটকি মাছ মাত্র ছাব্বিশ হাজার টাকায় নিজের লোক দিয়ে নিলাম থেকে কিনে নিয়েছিলো। বাইরের কেউ নিলামে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছে প্রকাশ করলে তাদেরকে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়না বলেও একথা তারা বলেন।
এ বিষয়ে জানতে কয়রা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের স্টোনো টাইপিস্ট এস কে ডালিমের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে বলেন, আমার রুমের চাবি হারিয়ে গেছে। আমি ১০ মিনিট পরে আপনাকে ফোন ব্যাক করছি।এক ঘন্টা অতিবাহিত হলেও তিনি আর ফেন দেন নি।এরপর তাকে কয়েক বার ফোন দিলে তিনি ফোন ধরেন নি।
মন্তব্য