বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪
 

কুমিল্লায় বিশ্বকাপ ফুটবলের আমেজ

JK0007
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২২

---

বিশ্বকাপ ফুটবল শুরু হবে, আর বাংলাদেশের মানুষ মেতে উঠবে না, তা তো হয় না। ২০ নভেম্বর থেকে কাতারে শুরু হতে যাচ্ছে বিশ্বকাপ ফুটবল। এরই মধ্যে কুমিল্লার সর্বত্র দেখা যাচ্ছে বিশ্বকাপ ফুটবলের আমেজ। বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া বিভিন্ন দেশের পতাকা বিক্রির ধুম পড়েছে। ইতোমধ্যে কুমিল্লা নগরীর অনেক বাসার ছাদে পছন্দের দেশের পতাকা উড়তে শুরু করেছে।

শনিবার (১২ নভেম্বর) কুমিল্লাতে বেশ কয়েকজনকে হেঁটে হেঁটে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের পতাকা বিক্রি করতে দেখা যায়। তাদের মধ্যে মো. জুয়েলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে ।

পতাকা বিক্রেতা জুয়েল বলেন, ‌‘বিশ্বকাপের আমেজ কুমিল্লা শহরে এক-দেড় মাস আগে থেকেই শুরু হয়ে গেছে। বিশ্বকাপ ফুটবলে বিভিন্ন দেশের সমর্থকরা তাদের প্রিয় দেশের পতাকা এখন থেকে কিনে রাখছেন। আমি ছোট, বড়, মাঝারি সব ধরনের পতাকা বিক্রি করি। এরমধ্যে ছোট হাতে রাখার যে পতাকা, সেটা বেশিরভাগ বাচ্চারা কিনে থাকে। আর বড় সাইজের পতাকাগুলো বাসার ছাদের ওপর ওড়ানোর জন্য কিনে নিয়ে যায় যুবকরা। অনেকে এর সঙ্গে বাংলাদেশের পতাকাও নিচ্ছে।’

১৯ দিন আগে কিশোরগঞ্জ থেকে ৩০ হাজার টাকা ধার করে কুমিল্লায় এসেছেন পতাকা বিক্রেতা জুয়েল। কুমিল্লার অলিগলি হেঁটে বাংলাদেশ, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, স্প্যান, সৌদি আরব, ইংল্যান্ড, পর্তুগাল, জার্মানিসহ বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা বিভিন্ন দেশের পতাকা বিক্রি করেন তিনি।

জুয়েল বলেন, ‘ফুটবল বিশ্বকাপ সামনে রেখেই মূলত আমি কুমিল্লায় পতাকা বিক্রি করতে এসেছি। এখন তুলনামূলক কম পতাকা বেচাকেনা হয়। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশ, আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের পতাকা বিক্রি হয়েছে।’

মনে কষ্ট আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ঢাকা চকবাজার থেকে আমি পাইকারি পতাকাগুলো কিনে এনেছি। এখন তত বেশি বিক্রি হয় না। সারা দিন ঘুরে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকার পতাকা বিক্রি করি। যা লাভ হয়, তা প্রতিদিনের খাওয়া আর বাসা ভাড়াতেই চলে যায়। তাই মনে অনেক কষ্ট।’

তবে বিশ্বকাপ শুরু হলে বা তার এক সপ্তাহ আগে বেচাকেনা বাড়বে বলে আশাবাদী এই পতাকা বিক্রেতা।

‘এখন ৫ ফুট সাইজের পতাকা ১৫০ টাকা বিক্রি করি। যা আমার পাইকারি কেনা ৭৫ টাকা। আর ছয় ফুট সাইজের পতাকা বিক্রি করি ১৬০ টাকা। এটা পাইকারি কেনা ৮০ টাকা। বিশ্বকাপ শুরু হয়ে গেলে এর দাম কিছুটা বাড়বে’ বলেও জানান তিনি।

জুয়েল আরও বলেন, ‘আমি কুমিল্লা চকবাজারে একটা মেসে থাকি। পরিবার বলতে আমার মা, এক ভাই, এক বোন, স্ত্রী ও তিন মেয়ে আছে। আমি মৌসুমে বিভিন্ন কাজ করি। গ্রামের বাড়িতে কৃষিকাজ করি, এলাকায় রিকশা চালাই। যখন যেটা পাই সেটা করি। আসলে আমার কামাই দিয়েই সংসার চলে। বেচাকেনা একটু কম হলে খারাপ লাগে।’

তার সামান্য এ রোজগারেও বসে চাঁদাবাজের থাবা। অসহায়ত্ব জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কুমিল্লায় বিভিন্ন জায়গা আছে, যেখানে পতাকা বিক্রি করতে গেলে দাঁড়াতেও দেয় না। কেউ ফ্রিতে পতাকা চায় আবার কোথাও দাঁড়ালে অনেকে এর জন্য ১০০ টাকা চায়। এখন পতাকা বিক্রির সময়। এটা নিয়ে আমি একটু বেকায়দায় আছি।’

জুয়েল বলেন, ‘এখন পতাকা বিক্রি করার মৌসুম। কুমিল্লা শহরে চাহিদা বেশি। তাই এক জায়গায় থেকে অন্য জায়গায় যাবো। আশা করি সামনে কয়েক দিনের মধ্যে দুই কিলোমিটারও হাঁটা লাগবে না। সব পতাকা বিক্রি হয়ে যাবে’- একবুক আশা নিয়ে বললেন জুয়েল।

মঈন নাসের খাঁন (রাফি)
কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি

মন্তব্য

সর্বশেষপঠিত

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon