জহরুল ইসলাম, বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ-
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষকদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গত ৯ নভেম্বর থেকে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে । বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি এক বিজ্ঞপ্তিতে উক্ত একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধের ডাক দেন।
বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয় “শিক্ষক সমিতি ও শিক্ষকবৃন্দের অভিন্ন নীতিমালা নির্দেশিকাটি হুবহু গ্রহণ করার ব্যাপারে তীব্র আপত্তি থাকা সত্ত্বেও, শিক্ষকদের সাধারণ সভার পরামর্শ মোতাবেক একাডেমিক কাউন্সিল কর্তৃক গঠিত অভিন্ন নীতিমালা পর্যালোচনা কমিটির কোনো সুপারিশ গ্রহণ না করে; রিজেন্ট বোর্ডে ইউজিসি কর্তৃক প্রেরিত অভিন্ন নীতিমালা নির্দেশিকাটি হুবহু অনুমোদন করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয় ইউজিসি কর্তৃক প্রেরিত অভিন্ন নীতিমালায় শিক্ষকদের নিয়োগ ও পদোন্নতির বিভিন্ন শর্তের অস্পষ্টতা ও অসামঞ্জস্যতা বিদ্যমান থাকায় এবং অভিন্ন নীতিমালা পর্যালোচনা কমিটির কোনো সুপারিশ গ্রহণ না করায় বশেমুরবিপ্রবির শিক্ষকবৃন্দ জরুরী সাধারন সভায় নীতিমালাটি প্রত্যাখ্যান করে। উক্ত বিষয়ে দৃশ্যমান সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার সর্বসম্মতিক্রমে সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দকে আগামী ৯-১১ ২০২২ তারিখ হতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।”
একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণায় শিক্ষার্থীদের ক্লাস,পরীক্ষাও বন্ধ আছে।শিক্ষকদের আন্দোলনের ফলে বেশ কয়েকটি বিভাগের শেষ হয়নি সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা। এছাড়াও চলতি বছরে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের একাধিক আন্দোলনের ফলেও পিছিয়ে পড়েছে বশেমুরবিপ্রবি।
বর্তমান সময়ে যেখানে অন্য বিশ্ববিদ্যালয় গুলো তাদের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবর্ষের ২য় সেমিস্টার শেষ করছে সেখানে বশেমুরবিপ্রবির বেশ কয়েকটি বিভাগ তাদের শিক্ষাবর্ষের প্রথম সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শুরুই করতে পারিনি!!ফলে ইতিমধ্যেই অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেশ পিছিয়ে পড়েছে বশেমুরবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা।
ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।তারা তাদের শিক্ষা জীবন শেষ করতে পারবে কিনা এটা নিয়েও চিন্তিত।
অনেকে মনে করছেন অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তারা পিছিয়ে পড়ায় চাকরির বাজারেও তারা পিছিয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবদুস সালাম জানান, “আমরা ইতিমধ্যেই সেশন জটে আছি। চরম হতাশার মধ্যে আমাদের দিন কাটছে। বারবার একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ হওয়ায় আমরা পড়াশোনায় ঠিকমতো মন দিতে পারছিনা। দ্রুত এটার সমাধানে আসা উচিত”
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড.মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের পুষিয়ে দিব।তারা পিছিয়ে থাকবে না।তাদের বিষয়টা নিয়ে আমাদেরও চিন্তা আছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য ড.এ.কিউ.এম মাহবুব বলেন-”তোমাদের শিক্ষকরা কোনো নিয়মনীতি মানতে চাচ্ছে না,এখন আমি কি করবো বলো। তোমাদের মোট ৩৫০ জনের মতো শিক্ষক এর মধ্যে ১০০ জন বাইরে আছে। এখন আমার শিক্ষক লাগবে কিন্তু আমি কিছুই করতে পারছিনা। তারপরেও আমি আবার তাদের সাথে বসবো এবং রিজেন্ট বোর্ডে বিষয়টি আবার তুলবো।”
তিনি আরো বলেন ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ থাকলে দিন শেষে শিক্ষার্থীরাই সমস্যায় পড়বে। আমি চেষ্টা করছি সমাধান করার জন্য। আমি শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করেই দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করছি।
মন্তব্য