ইমরান হোসেন তালহা,নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও নগরীর বাজারগুলোতে বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে সবজি। এ ছাড়াও মাছ, মাংস ও অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম প্রায় স্বাভাবিক থাকলেও বেড়েছে ডিমের পাইকারি দর।
অপরদিকে খুচরা বাজারে চালের দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। শনিবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে নারায়ণগঞ্জ শহর ও শহরতলীর বাজারগুলোতে ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
সরেজমিনে শহরের পাইকারি বাজার দিগুবাবুর বাজার, কালির বাজার, শহরতলী ফতুল্লা ও নারায়ণগঞ্জের বাজারগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে, মরিচের কেজি বিক্রি হয় ৭০ থেকে ১০০ টাকায়। দুই থেকে তিন দিনের ব্যবধানে দাম বাড়ে ৩০ থেকে ৪০ টাকা।
প্রতিটি ফুলকপি ও বাঁধাকপি এখনও ২৫ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ১৫ দিন আগেও এগুলোর দাম প্রায় অর্ধেক ছিল। একটি লাউ বিক্রি হয় ৬০ থেকে ৯০ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা।
করলার কেজি ফের ৮০ টাকায় পৌঁছেছে। ১০ থেকে ১২ দিন আগেও এটি বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকায় কিছুদিনের ব্যবধানে দাম বেড়েছে অনেক। শিম ২৫ থেকে ৪০ টাকা, মুলা ২০ থেকে ৩০ টাকা, বেগুন ৩০ থেকে ৪০ টাকা, টমেটো ৩৫ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা ও গাজর ৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়।
পেঁয়াজের কেজি ৩৫থেকে ৪৫টাকা। কিছু দিনের ব্যবধানে কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে চীনা আদা ২৬০ টাকা, কিছুদিনের ব্যবধানে বেড়েছে রসুন কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে ১৮০ টাকা। এসবের বাইরে দেশি আদা ও রসুন ১৫০ ও ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
দিগুবাবুর বাজারে আসা একজন মধ্যবিত্ত বেসরকারি চাকুরিকজীবি মোঃ ওয়ালিড হাসান বলেন, কিছু কিছু সবজির দাম তো অনেক বেশি ইচ্ছা থাকলেও কিনতে ভয় হয়। আবার কিছু সবজির দামও কমেছে। তবে এভাবে বাড়তে থাকলে শীঘ্র্ই তার ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে যাবে।
অপরদিকে খুচরা বাজারে চালের দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
দেশের বাহির থেকে চাল আমদানির প্রভাবে এর দাম কমছে বলে জানিয়েছেন খুচরা দোকানদার মিলন নামে বিক্রেতারা। প্রতি কেজি গুটিস্বর্ণা বিক্রি হয় ৫০ টাকায়, যা আগে ছিল ৫৫ টাকা। ৫ টাকা কম দরে বিক্রি হচ্ছে বাজারে মিনিকেট ৭০ টাকা, আটাশ ৫৫ টাকায় বিক্রি হয়। এ ছাড়া নাজিরশাইল ৫ থেকে ১০ টাকা কমে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়।
তবে সব প্রকার চাল দাম কমলেও পোলাও চাল বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। ভালো পোলাও চাল ১৪৫ থেকে ১৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যেটা কিছু দিন আগেও ১০০ টাকা ছিল।
পাইকারি বিভিন্ন চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমানে চালের দাম কম থাকবে। ইন্ডিয়া থেকে চাল আসতে থাকলে বাংলাদেশে দাম বাড়ে না। চৈত্র মাসের দিকে গিয়ে আবার দাম বাড়বে।
অপরদিকে, ১২২ টাকা ডর্জন ডিমের দাম বেড়ে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা পর্যন্ত হয়েছে, তবে এখনও খুচরা বাজারে ফার্মের মুরগির প্রতি হালি ডিম ৩৮ থেকে ৪০ টাকা, হাঁসের ৭০ টাকা এবং দেশি মুরগির ডিম ৬০ টাকা হালি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ডিম বিক্রেতা নিশাদ বলেন, গত ১০ থেকে ১৫ দিন ধরে দাম বাড়ছে ডিমের। প্রতি দিনই ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। আগে ১০০টি ডিমের দাম ছিল ৮০০ থেকে ৮২০ টাকা।
এখন সেটা ৯৬০ টাকায় ঠেকেছে। এভাবে আমাদের ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা পর্যন্ত বেশি দিতে হচ্ছে, তবে আমরা খুচরা বাজারে আগের দরেই বিক্রি করছি।
মাংসের বাজারে ব্রয়লার ছাড়া সব ধরনের মুরগি ও মাংসের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে ব্রয়লার বিক্রি হয় ১৪৫ থেকে ১৬০ টাকায়। এ ছাড়া অপরিবর্তিত থেকে সোনালি ২৫০ টাকা, লাল লেয়ার ও সাদা কক ২৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
গরুর মাংসের কেজি বিক্রি হয় ৭০০ টাকায়। আর মহিষের মাংসের কেজি ৮০০ টাকা। খাশির মাংস ১ হাজার ৫০ থেকে এক হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হয়। ছাগলের মাংস বিক্রি হয় ৯০০ টাকা কেজি।
মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীতে কমেছে ইলিশ মাছের চাহিদা। এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয় ১১০০ থেকে ১২০০ টাকায়। এক কেজির কম ইলিশ বিক্রি হয় ১০০টাকার নিচে।
বিক্রেতারা বলছেন, শীতকালে ইলিশের স্বাদ থাকে না, যার কারণে চাহিদা কমে যায়। শীতের শুরু থেকেই ছোট বড় মাঝারি সাইজের ইলিশের দাম কেজিতে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা কম।
মন্তব্য