মোঃ ইমরান হোসেন তালহাঃ
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে অনুষ্ঠিত হলো বিশ্ব ইজতেমা। তাবলিগ জামাত আয়োজিত বিশ্ব ইজতেমায় লাখ লাখ মুসল্লি সমবেত হন। এখানে তাবলিগ জামাতের দেশ-বিদেশের শীর্ষস্থানীয় মুরব্বিরা আখলাক, ঈমান ও আমলের ওপর বয়ান করেন তাবলীগী শীর্ষস্থানীয় বাংলাদেশ ভারত ও পাকিস্তানের মুরুব্বিগ।যদিও গত দুই বছর করোনার কারণে ইজতেমার ময়দানে ইজতেমার কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়নি ।
মহান আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করে মুসলিম উম্মাহর শান্তি-ঐক্য কামনায় বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
(১৫ জানুয়ারি) রোবিবার সকাল ১০টায় আখেরি মোনাজাত শুরু হয়।
সকাল ১০টা থেকে১০টা ২০ মিনিট পর্যন্ত চলে মোনাজাত। আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন তাবলীগ জামাতের আলেম উলামা অনুসারী শীর্ষস্থানীয় মুরব্বি মাওলানা জুবায়ের আহমেদ সাহেব।
আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলো বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আনুষ্ঠানিকতা। এ পর্বে অংশ নেন দেশ-বিদেশের মাওলানা জুবায়েরে সাহেব অনুসারী কয়েক লাখ মুসল্লি।
আখেরি মোনাজাতে আমিন আমিন ধ্বনিতে কম্পিত হয় পুরো ইজতেমার ময়দান ও আশপাশ এলাকা। টঙ্গীর তুরাগ তীরে সমবেত হয়ে অশ্রুভেজা চোখে মুসল্লিরা দেশ জাতি এবং মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি ও যার যার ব্যক্তিগত সমস্যা দুনিয়া ও আখেরাতের আল্লাহর সাহায্য কামনা করেন। ইজতেমা ময়দান ও আশপাশে অবস্থান নিয়ে আল্লাহর দরবারে দুই হাত তুলে সাত আসমান সাত জমিন জান্নাত জাহান্নামের মালিকের কাছে ক্ষমা চেয়ে কান্নায় বুক ভাসান দেশ-বিদেশের মুসল্লিরা।
গোটা দুনিয়ায় পথভ্রষ্ট মুসলমানের আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সঠিক পথে চলা এবং তাবলীগের কাজে সবাইকে নিয়োজিত হওয়ার তাওফিক কামনা করে মহান আল্লাহর রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত প্রার্থনা করা হয়। ইহলৌকিক ও পারলৌকিক কল্যাণ কামনায় দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লি আল্লাহ সুবহানাতায়ালার দরবারে কান্নাকাটি করেন। লাখো কণ্ঠে উচ্চারিত হয় রাহমানুর রাহিম আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব, আমিন আমিন।
গত কয়েকদিন ধরে টঙ্গীর তুরাগ তীরে কনকনে শীত ও ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে ইজতেমা ময়দানে অবস্থান নেন তাবলিগ জামাত অনুসারী ও তাদের সঙ্গে আসা সাধারণ মুসল্লিরা। আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে রোববার ভোর থেকে ঢাকা-গাজীপুরসহ আশপাশের জেলা থেকে হাজার হাজার মুসল্লি পায়ে হেঁটে ইজতেমা স্থলে আসেন। ময়দানে জায়গা না পেয়ে তারা আশপাশের অলি-গলি, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, ফুট ওভার ব্রিজ, বাসা বাড়ি, কল-কারখানা, মার্কেট ও যানবাহনের ছাদে এবং তুরাগ নদীর নৌকায় অবস্থান নিয়ে আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন।
জানা গেছে আখেরি মোনাজাতের জন্য আশে-পাশের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, কল-কারখানাসহ বিভিন্ন অফিস-আদালতে ছুটি ঘোষণা করা হয়।
মন্তব্য