আবু ইসহাক অনিক, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
গুচ্ছভুক্ত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ভর্তি-ইচ্ছুদের অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক শ্রেনীতে ভর্তিতে মেধা তালিকার পেছনে থাকা শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য মনোনীত হলেও বাদ পড়েছে সামনে থাকা শিক্ষার্থী। যার প্রমান পাওয়া গেছে।
গত শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিজ্ঞপ্তিতে ১৫ ও ১৬ তারিখে সাক্ষাৎকারের জন্য তারিখ দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে কত আসন ফাঁকা ছিল তথ্য দেওয়া হয়নি। তাই শিক্ষার্থীর তথ্য গোপন রাখার অভিযোগ এনেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে। উল্লেখ্য, কেবল নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় এই তথ্য গোপন রেখেছিল।
ফলে অনিশ্চয়তা নিয়ে ১৭০ আসনের বিপরীতে প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী দেশের নানান প্রান্ত থেকে ভাইভায় অংশ গ্রহন করে।
তাদের সামাল দিতে কিছুটা হিমশিমও খেতে হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। ১৭ তারিখে ফাঁকা আসনে ভর্তির জন্য ফলাফল প্রকাশ করলে একাধিক শিক্ষার্থী আশাহত হয়ে পড়ে। তারা দেখতে পায় তাদের পিছনের মেধাতালিকা থেকে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছে। কিন্তু তাদের সকল শর্ত পূরণ ও সাক্ষাৎকারে উপস্থিত থেকেও তাদের নাম তালিকায় নেই।
মেধা তালিকায় ১০১৬ কাজীউল ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, সর্বশেষ ১১০৮ পর্যন্ত বিষয় পেয়েছে অথচ আমি ভর্তি হতে পারি নি। আমি সব শর্ত ফিল আপ করেছি এবং নিয়ম মোতাবেক রুল লিখেছি, সাইন করেছি ও এডমিট কার্ডের ফটোকপি জমা দিয়েচি কিন্তু আমি ভর্তি হতে পারি নি!
মো. রায়হান রাসেল নামের এক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলে, ” আমি ‘বি’ ইউনিটে সাক্ষাৎকার দিয়েছি এবং সিগনেচারও করেছি। আমার পজিশন ১১৮১ ছিল। ফলাফল প্রকাশের পরে দেখি আমার পরে থেকে অনেকের চান্স হলেও আমার চান্স হয়নি। সর্বশেষ ১২৯২ পজিশন যার, তারও নাম এসেছে। কিন্তু আমার নাম আসেনি। আমি আমার ন্যায্য প্রাপ্তি আশা করি। এই অনিয়মের সুষ্ঠু তদন্ত করে এগিয়ে থাকা পজিশনধারীদের মনোনীত করা হোক।”
লামিয়া ইসলাম চাঁদনি নামের এক ভর্তিইচ্ছুর একই রকমের অভিযোগ রয়েছে। ‘বি’ ইউনিটে তার পজিশন ১২৩৯ থাকা সত্বেও তার নাম মেধাতালিকায় আসেনি বলে জানান। ভর্তি প্রক্রিয়ায় স্বজনপ্রীতি হয়েছে বলেও অভিযোগ করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী।
এদিকে আজকে মনোনীতদের চূড়ান্ত ভর্তির তারিখ দেওয়া হলে অনেকেই চূড়ান্তভাবে ভর্তি হচ্ছে। এর সঠিক সুরাহা না পেয়ে আন্দোলন করেছে ভুক্তভোগী ভর্তি-ইচ্ছুকরা। তারা এই অনিয়ম মানতে নারাজ। সুষ্ঠু ভর্তি কার্যক্রম চেয়ে ও নিয়ম বহির্ভূত ভর্তি স্থগিত চেয়ে প্রশাসনিক ভবনের নিচে আন্দোলন করে তারা।
তবে এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবীরের সাথে কথা বললে তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ” আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েছি। ভর্তিকমিটির সাথে মিটিং করে শীগ্রই একটি সমাধান বের করার চেষ্টা করবো।” পরবর্তীতে তিনি বলেন, দুই হাজার টাকা জমা দিয়ে আবেদন করলে বিষয় টি খতিয়ে দেখব।
উল্লেখ্য, ভুক্তভোগীদের কাছে থেকে লিখিত আবেদনপত্র জমা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
মন্তব্য