আবু ইসহাক অনিক
৪১২ টি জিপিএ ৫ নিয়ে এবার ও কুমিল্লা বোর্ডের শীর্ষে, অধ্যাপক আবদুল মজিদ কলেজ।
অধ্যাপক আবদুল মজিদ কলেজটি ১৯৯৫ খ্রি. ২৪ মার্চ কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার প্রাচীন জনপদ রামচন্দ্রপুরে কুমিল্লা জেলার কৃতিসন্তান, হোমনা উপজেলার গর্ব, পপি লাইব্রেরির স্বত্বাধিকারী, জীবন্ত কিংবদন্তি, শিক্ষা গবেষক আলহাজ্ব অধ্যক্ষ মো. আবদুল মজিদ ৫ একর জমির উপর কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা বিনির্মাণে তিনি নিজ জন্মভূমিকে উপেক্ষা করে জাতির বৃহত্তর স্বার্থে রামচন্দ্রপুরে এ কলেজটি
প্রতিষ্ঠা করেন।
ওই সময়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ একত্রিত হয়ে আলহাজ্ব অধ্যক্ষ মোঃ আবদুল মজিদ স্যারকে সার্বিক সহযোগিতা করেন।
১৯৯৫-৯৬ শিক্ষা বর্ষে ৭৬৩ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে কলেজটির যাত্রা শুরু করে। ১৯৯৭ সালে ৫২৮ জন
শিক্ষার্থী
পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। মুরাদনগর উপজেলার বাইরে হোমনা উপজেলার রামকৃষ্ণপুর কলেজে এইচএসসি পরীক্ষা
অনুষ্ঠিত হয়।
প্রথম বছরেই কলেজ থেকে মোট ০৭ জন শিক্ষার্থী কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে মেধাতালিকায় স্থান
করে নিয়ে কলেজটির যাত্রা শুরু করে।
১৯৯৮ সালে মোট ৩৫৭ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়। মোট ০৯ জন শিক্ষার্থী সম্মিলিত মেধাতালিকায় স্থান করে নেয়। ১৯৯৯ সালে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২৭৬ জন। মেধাতালিকায় স্থান করে নেয় ১৩ জন। ২০০০ সালে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৪৩৫ জন। এর মধ্যে
২৪ জন শিক্ষার্থী মেধাতালিকায় স্থান করে নেয়। ২০০১ সালে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৬৩৮ জন। মেধাতালিকায় স্থান করে নেয় ১৮ জন। ২০০২ সালে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৭২৮ জন। ১৫ জন শিক্ষার্থী মেধাতালিকায় স্থান করে নেয়। ৬ বছরে মোট ৮৬ জন শিক্ষার্থী সম্মিলিত মেধাতালিকায় স্থান দখল করে এক অনন্য রেকর্ড সৃষ্টি করে।
২০০৩ সালে জিপিএ পদ্ধতি চালু হলে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে কেউ ই জিপি ৫ পায়নি।
২০০৪ সালে মোট ৮৪৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে, জিপিএ ৫.০০ পায় ১৯ জন। ২০০৫ সালে জিপিএ ৫.০০ পায় ২০ জন, ২০০৬ সালে ৩৪ জন, ২০০৭ সালে ৩৫ জন, ২০০৮ সালে ৭৫ জন, ২০০৯ সালে ২৩, ২০১০ সালে ৫০ জন, ২০১১ সালে ৩৮ জন, ২০১২ সালে ৬০ জন, ২০১৩ সালে ৬০ জন, ২০১৪ সালে ৪২ জন, ২০১৫ সালে ৪০ জন, ২০১৬ সালে ২০ জন, ২০১৭ সালে ০২ জুন, ২০১৮ সালে ৩৫ জন, ২০১৯ সালে ৬৯ জন, ২০২০ সালে ৭৮ জন, ২০২১ সালে ২৭০ জন জিপিএ ৫.০০ পেয়ে গ্রাম পর্যায়ে এই কলেজটি বিরল খ্যাতি অর্জন করে। বর্তমানে ২০২২ সালে বিজ্ঞান থেকে ৩৪১ জন, মানবিক থেকে ২২০ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ১৪৮ জনসহ সর্বমোট ৭০৯ জন শিক্ষার্থী বোর্ড পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে বিজ্ঞানে জিপিএ ৫.০০ পেয়েছে ৩০৮ জন, মানবিকে ৬১ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৪৩ জন। সর্বমোট ৪১২ জন শিক্ষার্থী জিপিএ ৫.০০ পেয়ে এক অনন্য রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। পাসের হার ৯৯.২৯%। উল্লেখ্য, এ ব্যাচে এসএসসি পরীক্ষায় মোট ৮১ জন শিক্ষার্থী জিপিএ 4.00 পেয়ে অত্র কলেজে ভর্তি হয়েছিল।
এই চমৎকার ফলের পেছনে অত্র কলেজের প্রতিষ্ঠাতা, সাবেক অধ্যক্ষ ও পরিচালনা পর্ষদের সম্মানিত সভাপতি আলহাজ্ব অধ্যক্ষ মো. আবদুল মজিদ স্যারের দিক-নির্দেশনা ও অধ্যক্ষ মো. ফেরদৌস আহমদ চৌধুরীর শাসন ও স্নেহ, সুপরিকল্পিত তত্ত্বাবধান, সার্বক্ষণিক নজরদারী, শিক্ষক মন্ডলীগণের নিয়মিত ক্লাস, টিউটোরিয়াল পরীক্ষা, সেমিস্টার পরীক্ষা গ্রহণ, দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ক্লাস সহ শতভাগ উপস্থিতি, ক্লাসের বাইরে হোস্টেলে নিবিড় পরিচর্যা, অভিভাবকদের সচেতনতা, সর্বোপরি পরিচালনা পর্ষদের সার্বিক সহযোগিতা এবং বছরের শুরুতেই তাদের বার্ষিক একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রদান ইত্যাদি কার্যক্রমের জন্যই এই সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, বর্তমানে ১১ টি ছাত্রীনিবাসে মোট ২৭১ জন ছাত্রী ও ২৩ টি ছাত্রাবাসে ৫৫০ জন ছাত্র নিয়মিত অধ্যয়নের সুযোগ আছে। অধ্যক্ষের নেতৃত্বে মোট তিনটি টিমের মাধ্যমে প্রতিদিন নিয়মিত হোস্টেলগুলো পরিদর্শন করা হয়।
ভালো ফলাফল করায় সকল শিক্ষক মন্ডলী, কলেজের ম্যানিজিং কমিটির সদস্যগণ ও অভিভাবকগণ সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন
মন্তব্য