ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি -
ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে প্রতিদিন অবাধে চলছে অবৈধ যান। বিভিন্ন ধরনের লাইসেন্সবিহীন গাড়ির দৌরাত দিন দিন বেড়েই চলেছে।
গাড়িগুলো বন্ধে কার্যকরী দৃশ্যমান কোন উদ্যোগ নিতে দেখা যাচ্ছে না। ফলে একদিকে যেমন সড়ঁকে বিশৃঙ্খলা দেখা দিচ্ছে অন্যদিকে সড়ঁক দুর্ঘটনার আতঙ্ক বেড়েই যাচ্ছে।
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, উপজেলা প্রশাসনের যথাযথ নজরদারি না থাকায় এই অবৈধ যানবাহনের দৌরাত্ম্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এসব অবৈধ যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি এলাকার বিভিন্ন স্থানে অপরাধ প্রবণতাও বাড়াঁর সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছে অনেকে।
লাইসেন্সবিহীন এসব যানবাহন প্রশাসনের নাকের ডগায় চলাচল করলেও গাড়ির মালিক ও চালকদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।
জানা যায়, উপজেলা সদর ও গাজিরটেক ২ টি ইউনিয়নের প্রধান প্রধান সড়ঁকসহ বিভিন্ন পাড়া মহল্লার সড়ঁকে প্রতিদিন অবৈধ ট্রলি, মাহিন্দ্র, ভটভটি, নছিমন, করিমন, সহ অন্যান্য অবৈধ যানবাহন অবাধে চলছে।
লাইসেন্সবিহীন এসব যানবাহন আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গলী প্রদর্শন করে উপজেলার বিভিন্ন সড়ঁকে চলাচল করছে বিনা বাধাঁয়। এসব যানবাহন চালকদের না আছে লাইসেন্স, না আছে তেমন কোন প্রশিক্ষণ। উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রতিদিন অবাধে এইসব যানবাহন চলাচল করছে। শুধু নজরদারির অভাবে অবৈধ এইসব যানবাহনের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এইসব ফিটনেস ও রেজিষ্ট্রেশন বিহীন যানবাহন থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ার কারণে দূষিত হচ্ছে পরিবেশও।
এছারা এসব অবৈধ যান চলাচলের কারনে প্রতিদিন চরম আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে স্কু-কলেজের শিক্ষার্থী ও পথচারীদের রাস্তায় চলাচল করতে হচ্ছে।
দানবাকৃতির ট্রলি (ট্রাক্টর) নামক গাড়ী মূলত কৃষি কাজের উদ্দেশ্যে তৈরী করা হলেও কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা তাতে অতিরিক্ত চাকা ও বডি সংযোজন করে রাস্তার ধারনক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত মাটি, বালু ও ইট বোঝাই করে উপজেলার ছোট,বড় বিভিন্ন রাস্তায় চলাচল করছে। উক্ত ট্রলি গাড়ী কৃষি কাজে ব্যবহার না করে তা অদক্ষ চালক দিয়ে সড়ঁকে চালানো হচ্ছে। ফলে একদিকে যেমন সরকারের কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত গ্রামীণ আধা-পাকা সড়ঁকগুলো ধ্বংস হচ্ছে।
অন্যদিকে অদক্ষ ও প্রশিক্ষণ বিহীন চালক দিয়ে গাড়ী চালানোর ফলে সড়ঁকে দুর্ঘটনার শংকা দিনদিন বেড়েঁই যাচ্ছে।
সরজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সড়ঁকগুলো ঘুরে দেখা যায়, কিছু অসাধু বালি ও মাটি ব্যবসায়ীরা ব্যক্তি স্বার্থে ও লাভের আশায় বিভিন্ন এলাকায় ফসলি জমি হতে বালি, মাটি কেটে বিক্রি করার কাজে অবৈধ ট্রলি, মাহিন্দ্র ট্রাক্টর গাড়ী ব্যবহার করছে।
চরভদ্রাসন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. হাফিজুর রহমান বলেন, এসব গাড়িগুলো যখন বালি ও মাটি নিয়ে খোলা অবস্থায় রাস্তায় চলাচল করে। তখন রাস্তা দিয়ে প্রচুর পরিমানে ধোলা-বালি ওড়েঁ। আর এসব ধোলার সাথে ক্ষতিকর শিশাযুক্ত থাকে। যা নবজাতক, শিশু ও বয়স্কসহ সব বয়সী মানুষের শরীরের জন্য মারাত্বকভাবে ক্ষতিকর। এসব ধোলা-বালি শরীরের ভেতরে লাঞ্চে গিয়ে ফুসফুসের ক্যান্সার তৈরি করে।
তিনি আরো বলেন, রাস্তা দিয়ে চলাচলের সময় অবশ্যই সবার মাক্স পরিধান করা উচিত। এছারা বালি-মাটি বহন করা গাড়িগুলোকে রাস্তা দিয়ে চলাচলের সময় অবশ্যই ত্রিপল দিয়ে ভালোকরে ঢেকে চলতে হবে। খোলা ও অতিরিক্ত বোঝাই করা গাড়িগুলোকে রাস্তায় চলাচল করতে দেয়া উচিত না। যে রাস্তায় যতটুকু ধারনক্ষমতা। সে রাস্তায় ওই সব গাড়িগুলোকেই চলতে দেয়া উচিত।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানজিলা আক্তার ত্রপা বলেন, এর আগে আমরা সড়ঁকে এসব অবৈধ গাড়ি চলা বন্ধে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে চালকদেরকে জেল-জরিমানা করেছি। এছারা এসব অবৈধ গাড়ি চলাচল বন্ধে সবসময়ই আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলমান রয়েছে বলে তিনি জানান।
মন্তব্য