সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪
 

সাংবাদিক নির্যাতন ও ডিজিটাল আইন নিয়ে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ৩১ মার্চ ২০২৩

---
মাজহারুল হাসান রাকিব, যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি:

বাংলাদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সাংবাদিকদের যেনো কোনো ধরনের হুমকি প্রদান, হামলা এবং নির্যাতন করা না হয় সেই আহবান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

বৃহস্পতিবার স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিয়মিত ব্রিফ্রিংয়ে বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন সরকার কর্তৃক অব্যাহত সাংবাদিক নিপীড়ন প্রসঙ্গে করা এক প্রশ্নের জবাবে এভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান স্পষ্ট করেন স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রধান উপমুখপাত্র ভেদান্ত প্যাটেল।

এর পাশাপাশি, আওয়ামী লীগ সরকার ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের যে অপব্যবহার করছে সেটা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে উদ্বিগ্ন বলেও জানান তিনি।

সরকারের নির্দেশে সাম্প্রতি সাংবাদিকদের ধরপাকড়, হামলা বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমের উপর কড়াকড়ি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে সরকার। তারা এ ক্ষেত্রে  জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করেছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ব্যবহার করে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দায়েরের ঘটনায় ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রসহ ১২ টি দেশ গণমাধ্যম নিয়ে সরকারের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেছে। গতকালই দেশের অন্যতম শীর্ষ পত্রিকা প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে সাদা পোশাকে তার বাসা থেকে তুলে নিয়ে এসেছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। তারা প্রথম আলোর সম্পাদকের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করেছে। এর আগে মার্চের প্রথম দিকে আল জাজিরায় কাজ করা ইউরোপ প্রবাসী অনুসন্ধানীসাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান সামির ভাই মাহিনুর আহমেদ খানের ওপর হামলা চালিয়েছে দুবৃর্ত্তরা। গণমাধ্যমের ওপর সরকারের এই কড়াকড়ি এবং আক্রমণাত্মক আচরণ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে,

জবাবে প্যাটেল বলেন, “সরকার ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের যে অপব্যবহার করছে সেটা নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। সাংবাদিকদের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চয়তা গণতন্ত্রের জন্য জরুরি বিষয়। বিশেষ করে নির্বাচনের এ বছরটাতে এ বিষয়টা খুবি গুরুত্বপূর্ণ। পেশাগত দায়িত্ব পালনের কারণে কোনো সাংবাদিক যেনো হুমকি, হয়রানি, হামলা কিংবা গ্রেফতারের শিকার না হন।”

উল্লেখ্য, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে ২৬ মার্চ একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছিলেন প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান। সাধারণ মানুষ কতটা কষ্টে দিন কাটাচ্ছে সে বিষয়টিই তুলে ধরেছিলেন জনগণের সামনে।  স্বাধীনতা দিবসে তাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে দিনমজুর জাকির হোসেন বলেন,  ‘পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কী করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব।’ তার এ বক্তব্য ছিলো দেশের চলমান দুর্দশার বাস্তব এক চিত্র। সাধারণ মানুষ তার বক্তব্যকে সমর্থন করে এবং খবরটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ভাইরাল হয়। আর তাতেই শাসক গোষ্ঠীর চক্ষুশূল হতে হয়েছে সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে। ২৯ মার্চ ভোর রাতে তাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে আসে গোয়েন্দা বাহিনী।সেই সঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধেও।

এদিকে, গত ১৭ই মার্চ আল জাজিরায় কাজ করা বৃটেন প্রবাসী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান সামির ভাই মাহিনুর আহমেদ খানের ওপর উপর্যপুরি  হামলা চালিয়েছে সরকার সমর্থকরা। ‘নতুন সাংবাদিক হয়েছ, দেশ নিয়ে লেখো’-এই কথা বলে তারা মারধর করতে থাকেন মাহিনুরকে।

জুলকারনাইন  অভিযোগ করেছেন, মাহিনুরকে মারধর করার সময় তার (জুলকারনাইন) সাংবাদিকতা করা ও সরকারবিরোধী কথা বলার বিষয় হামলাকারীরা উল্লেখ করেছেন।

মন্তব্য

সর্বশেষপঠিত

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon