মুবিন বিন সোলাইমান, চট্টগ্রাম:
রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউনিয়ন হতে পুলিশি অভিযানে দুই মাদক ব্যবসায়ী নারীকে গ্রেফতার করেছে রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশ।
গত ১৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ২০২৩ইং তারিখ সন্ধ্যায় উপজেলার চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউনিয়নে লিচুবাগানস্থ “মুন্নী বিউটি পার্লার” থেকে প্রায় ২ হাজার পিস ইয়াবার বড়ি জব্দ করে তাদের আটক করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন একই ইউনিয়নের দোভাষী বাজার আমতলী এলাকার হামিদুল্লাহ’র স্ত্রী ও বিউটি পার্লারের স্বত্ত্বাধীকারী মুন্নি বেগম (৩২) এবং তার সহযোগী সৎ বোন একই এলাকার আবু ইউসুফের মেয়ে রূপা আক্তার ওরপে আমেনা (২০)। তারা মূলত পার্লারের আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসায় চালাতো বলে জানিয়েছে পুলিশ। একইদিন রাতে তাদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা দেয়া হয়েছে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্র জানা যায়, গ্রেফতারকৃত মুন্নি বেগম দীর্ঘদিন ধরে মারণনেশা ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য পাচার ও বিক্রয়ের সাথে জড়িয়ে পড়ে। মারামারি ও চুরি/ডাকাতির মামলা রয়েছে এই নারীর বিরুদ্ধে। রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার কাউন্সিলার দিলু আক্তারের বাসা ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধে আসামি মুন্নী বেগমের বিরুদ্ধে মামলা হলে জেলেও যায়। জেল থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে মুন্নী আরও বেপরোয়া রূপ ধারণ করে একের পর এক অপরাধজনিত ঘটনার জম্ম দেয়।
উল্লেখ্য, গত ১০-৮-২০২০ ইং তারিখে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নের লিচুবাগান এলাকায় দৌলতুনেচ্ছা ভবনের ৩য় তলায় বসবাসরত কামাল উদ্দিনের স্ত্রী শারমিন আক্তার স্বর্ণা (২৫) মুন্নি বেগমের বিরুদ্ধে মারামারি ও সম্পদ আত্মসাৎ এর মামলা করে। অনুসন্ধানে আরও বেরিয়ে আসে গত ৬-১১-২০২১ ইং তারিখে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পারুয়া ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের কোকানিয়া এলাকার মোহাম্মদ আইয়ুবের ছেলে মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ (৩১) এর সাথে জালিয়াতি, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাৎ করার দায়ে ফৌজদারী মামলা হয় মুন্নি বেগমের বিরুদ্ধে।
রাঙ্গুনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাহবুব মিলকী বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান এলাকার মুন্নী বিউটি পার্লারে অভিযান চালালে তারা পালানোর চেষ্টা করে, অভিযানে মাদক ব্যবসায়ী মুন্নী বিউটি পার্লারের পরিচালক মুন্নী ও তার সহযোগী সৎ বোন রুপাকে মারণনেশা ইয়াবাসহ গ্রেফতার সক্ষম হই। অভিযানের সময় আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে মাদক ব্যবসার কথা স্বীকার করে এবং তাদের শয়নকক্ষের খাটের নিচ থেকে ৭টি নীল রঙের জিপারের প্যাকেটে রক্ষিত প্রায় ২ হাজার পিস ইয়াবা বড়ি পাওয়া যায়। তারা এসব মাদক বিক্রির উদ্দেশ্যে রাখার কথা স্বীকার করেছে।”
ওসি মাহবুব মিলকী আরও বলেন, “জিজ্ঞাসাবাদে তারা পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী বলে স্বীকার করে এবং দীর্ঘদিন ধরে বিউটি পার্লারের আড়ালে মাদক ব্যবসায় চালিয়ে যেতো বলে জানান উপস্থিত এলাকার লোকজন সম্মুখে। এমনকি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর তালিকাভুক্ত শীর্ষ এক মাদক ব্যবসায়ীর ছত্রছায়ায় তারা একাজ চালিয়ে আসছিলো বলে জানা যায়। একাধিক মামলার আসামি মুন্নি বেগমের বিরুদ্ধে স্বর্ণ চুরি, মারধর করে মালামাল চুরির মামলাসহ মোট তিনটি মামলা রয়েছে। তাকে আজ (শুক্রবার) আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হবে।
মন্তব্য