তালতলী(বরগুনা) প্রতিনিধি
বরগুনার তালতলী উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক মো. শহিদুল হক ও তালতলী উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ন আহবায়ক আরিফ রাজার ফোনালাপ অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এনিয়ে বিএনপির ভেতরে চলছে আলোচনা সমালোচনা।
ফোনালাপের অডিওতে শোনা যায়, মুঠোফোনের জেলা ছাত্রদলের সদস্য আরিফ বলেন ওখানে কি শুধু আপনি একাই ছিলেন না মোস্তাক ছিল ? উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক শহিদুল ইসলাম বলেন, মোস্তাক ছিলো, কেন্দ্রীয় নেতা মামুন মোল্লা ছিল। মোস্তাক তো বিএনপি করে না ওতো আওয়ামীলীগ করে। তা না হলে এত বড় ঘটনা ও মামলা খাইলো না কেন। আসামি ১২ জনের মধ্যে ৬ জন আমার ফ্যামিলির। শহীদুল হক আরিফ রাজাকে বলেন, শোনেন কাদের জোমাদ্দার আছে আমি আর দুই একজন যুগ্ম আহবায়ক নিয়ে আমরা বসব। বসে ইউনিয়ন কমিটিগুলো ছেড়ে দেব। আমরা সব একসাথে, মোস্তাকের কোন স্থানেই রাখবো না। আরিফ রাজা বলেন মোস্তাক যখন এত বড় ঘটনা ঘটাইছে সামনে আরও বড় কিছু করবে দলের মধ্যে। এ কথার জবাবে শহীদুল হক বলেন, হ্যাঁ হ্যাঁ পারবে ওর সাথে আর নাই। এই উপজেলায় যারা নেতৃত্ব দেয় সবই আমার লোক। আরিফ বলেন, তাহলে ঘটনাটা হয়েছে সেটা নাটক ছিলো প্রমাণ করতে হবে। শহীদুল হক বলেন, হ্যাঁ প্রমাণ হয়ে গেছে। সব সাজানো নাটক।
এর আগে গত শনিবার (৮এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে উপজেলার মালিপাড়া সালেহিয়া মাদ্রাসা মাঠে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে নেতা-কর্মীদের নিয়ে গণ-অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। এ সময় যুবলীগ ছাত্রলীগ ও বিএনপির দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় দুই গ্রুপের লোকজন ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। একদিন পরে রোববার রাতে তালতলী উপজেলা চেয়ারম্যানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী হামলা, ভাঙচুর লুটপাটের অভিযোগে মামলা করেছেন বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মাসুম মোল্লা নামের এক ব্যক্তি।
জানা গেছে, গতবছর ২২ আগস্ট ৪৫ সদস্য বিশিষ্ট তালতলী উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এতে আহ্বায়ক শহীদুল হক ও সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান। কমিটি গঠনের পর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি নিয়ে দলে মিশ্র প্রতিক্রয়া সৃষ্টি হয়েছে। এর আসল কারন হচ্ছে আহবায়ক শহিদুল হক উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর নির্বাচনে অংশ নেন ও বক্তৃতা দেন যার ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে আছে। নেতা কর্মীরা আহ্বায়ক এর কর্মকাণ্ডে হতাশ ও ক্ষুব্ধ। নেতা ও কর্মীদের প্রতি তার অসদাচরণ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের পাত্তা না দেওয়ায় নিজের লোকজনদের কমিটিতে পদ দেয়া ও অফিসে গেলে কাউকে কথা বলতে না দেওয়া। এতে দলীয় কার্যক্রম চলছে অনেকটা সদস্য সচিবের উপর ভিত্তি করে এমন অবস্থায় উপজেলা বিএনপির কর্মকাণ্ডে নেমে এসেছে স্থবিরতা। দলের পুরনো কোন্দলের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন সমস্যা । সম্প্রতি উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক ও সদস্য সচিব এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ পায় অডিও রেকর্ড থেকে।
তালতলী উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম বলেন দলের দুর্দিনে তালতলী উপজেলা বাসী মোস্তাক মিয়াকে ভোট দিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছেন, শুধু বিএনপি করে বিদায়, তার হাত ধরে হাজার হাজার ছাত্রদলের কর্মী তৈরি হয়েছে এখন বিএনপির কর্মী তৈরি হচ্ছে তা অনেকের সহ্য হয় না আমাদের আহবায়ক শহিদুল হক জাতীয় পার্টি করা লোক তিনি উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক যুবলীগ নেতার নির্বাচন করেছে তাই বর্তমান চেয়ারম্যান তার উপর আক্রোশমূলক মামলা দিয়েছেন, তিনি ইউনিয়ন পরিষদে দল যেহেতু নির্বাচন করে না সেখানে সে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছে দলের নাম ভাঙ্গিয়ে তার মতন একজন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এটা পারেনা
যুবদলের সদস্য সচিব রিয়াজুল ইসলাম বলেন সেদিন অবস্থান কর্মসূচিতে উপজেলা বিএনপি আহবায়কের কোন লোক মাঠে ছিল না এমনকি সে অবস্থান কর্মসূচির কোন দায়িত্ব নিজ হাতে তুলে নেন নাই সে এরকম কিছু হবে আগে থেকেই জানতেন আমরা মাইর খেয়েছি এবং আওয়ামী লীগকে ধাওয়া দিয়েছি পরবর্তীতে যে মামলা হয়েছে তা একান্তই তাদের রাজনীতি কৌশল তিনি আরো বলেন সহিদ মেম্বার জাতীয় পার্টির লোক ২০০১ সালের মুল নির্বাচনের আগে তিনি জাতীয় পার্টি করতেন উপনির্বাচনে মতিউর রহমান তালুকদার কে বিএনপি নমিনেশন দেওয়ার পর থেকে তার সাথে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন তখনই মতিউর রহমান তালুকদার তাকে থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বানান তখন তার এবং ভাইদের অত্যাচার থানাবাসী আতঙ্কে ছিল
এ ব্যাপারে আরিফ রাজা বলেন আমার সাথে আরো অনেক কথা হয়েছে অনেক বিষয় নিয়ে কিন্তু কল রেকর্ডটা কিভাবে ফাঁস হয়েছে আমি তা জানি না তবে বিষয়টা নিয়ে আমি চিন্তিত
উপজেলা বিএনপির আহবায়ক শহিদুল হক সাথে যোগাযোগ করতে গেলে তার মুঠফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়
এসব প্রসঙ্গে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা শহীদ জিয়ার আদর্শে খালেদা জিয়ার চেতনায় তারেক রহমানের নির্দেশে রাজপথে লড়াই করছি। কোন দালাল কি বললো তাতে কান না দিয়ে আগামীদিনের সকল আন্দোলন সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য তালতলীর সর্বস্তরের নেতা কর্মীদের আহ্বান জানাচ্ছি।
মন্তব্য