—বুটেক্স প্রতিনিধি
বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুটেক্স) আবাসিক হলগুলোতে সঠিক তদারকির অভাবে অবৈধ শিক্ষার্থীদের অবস্থান ও রুম দখলদারিত্বে তীব্র আবাসন সংকট দেখা দিয়েছে।
বুটেক্সের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা আবাসিক হলে সিট বরাদ্দ না পেলেও দ্বিতীয় বর্ষ থেকে পেয়ে থাকেন। কিন্তু গেলো কয়েক বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা তীব্র আবাসন সংকটে ভুগছেন। আবাসিক হল জি.এম.এ.জি ওসমানী হলের দেখা যায় বুটেক্সের প্রথম বর্ষ (৪৮তম ব্যাচ), দ্বিতীয় বর্ষের (৪৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থীরা কেউই হলে সিট বরাদ্দ পাননি। ৩য় বর্ষের (৪৬তম ব্যাচ) প্রায় ৪০জন শিক্ষার্থী এলোটমেন্ট নিয়ে এবং বিনা এলোটমেন্টে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী হলের গণরুমে এবং কয়েকটি রুমে থাকছেন।
হল প্রশাসন চলমান তিনটি ব্যাচকে আবাসন সুবিধা দিতে না পারার কারণে শিক্ষার্থীদের মাঝে একটি চাপা ক্ষোভ কাজ করছে। জানা গেছে হলে রুম দখলদারিত্ব, হলে ছাত্রত্ব শেষ এমন শিক্ষার্থীদের হলে অবস্থান, পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থীর অবস্থান এসব কারণে শিক্ষার্থীরা আবাসন সংকটে ভুগছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে সিট বরাদ্দ না পাওয়া ৪৭তম ব্যাচের জাহিদ নামের এক শিক্ষার্থী জানান, ‘বাসায় বাবা-মাকে বলেছিলাম প্রথম বর্ষে হলে সিট পাওয়া যাবে না, কষ্ট করে বাইরে থাকতে হবে। আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হিসেবে কষ্ট করে এক বছরের বেশি সময় ধরে বাহিরে থেকে খরচ যুগিয়ে যাচ্ছি। ঢাকা শহরে এতো খরচ করে বাইরে থাকা এক প্রকার অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। হল প্রশাসনের কাছে অনুরোধ আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের দ্রতসময়ে হলে সিট বরাদ্দ যাতে দেন।’
৪৬তম ব্যাচের আরেক শিক্ষার্থী জানান, ‘২-৩ মাস আগে হলের গণরুমে উঠেছিলাম, পড়াশোনার জন্য কোনো ব্যবস্থা সেখানে নেই। এমনকি রিডিংরুমে বসার চেয়ারও নেই। পরে আবার ব্যাচেলর রুম ভাড়া নিয়ে উঠেছি। হল প্রশাসনের কাছে দাবি যেন অছাত্রদের হল ত্যাগে বাধ্য করেন এবং অতিদ্রুত আমাদের রুমে সিট বরাদ্দ দেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম হলের চিত্র আরো ভয়াবহ। সেখানে ৪৮তম, ৪৭তম এবং ৪৬তম ব্যাচেরও কোনো এলোটমেন্ট হয়নি। বিনা এলোটমেন্টে থাকছে ৪৬তম ব্যাচের ১৮-২০ জন শিক্ষার্থী এবং ৪৭তম ব্যাচের ১০ জন শিক্ষার্থী। এক থেকে তিন বছর আগে পাশ করা কিছু শিক্ষার্থী রুম দখল করে থাকছেন এমন রুমের সংখ্যা ৬টি যেখানে প্রতি রুমে ১ থেকে ২ জন থাকেন। এদিকে গেলো ৪ মাস ধরে হল প্রভোস্টদের হলে সিট বরাদ্দ, অবৈধদের হল ত্যাগে বাধ্য করা এছাড়াও উল্লেখযোগ্য কোনো কার্যক্রম করতে দেখা যায়নি।
এই বিষয়ে কথা বলার জন্য জি.এম.এ.জি ওসমানী হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সামিউল ইসলাম চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমাদের সময়ে আমরা যতটুকু পেরেছি চেষ্টা করেছি, এখন নতুন হল প্রভোস্ট আসবেন ওনারা ব্যাপারটা দেখবেন।
মন্তব্য