পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি
বরগুনার পাথরঘাটায় লিজা আক্তার (১৮) নামে এক মুসলিম নারীকে জোরপূর্বক হিন্দু বানিয়ে বিবাহ করার অভিযোগ উঠেছে নেপাল ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার পাথরঘাটা থানায় মামলা দায়ের করা হলে নেপাল ও তার মা রাধা রানীকে আটক করেছে পাথরঘাটা থানা পুলিশ। শুক্রবার তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত ১০ মে রাতে পাথরঘাটা কেন্দ্রীয় মন্দিরে বিবাহের এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ শাহ আলম হাওলাদার।
ভুক্তভোগী মোসাঃ লিজা আক্তার গাইবান্দা জেলার ফুলঝুরি থানার পশ্চিম ডাকাতিয়ার চর এলাকায় মোহাম্মদ আশ্রাফ আলী মুসুল্লীর মেয়ে। অভিযুক্তরা হলো পাথরঘাটা উপজেলার হাতেমপুর গ্রামের মৃত নিরঞ্জন শীলের ছেলে নেপাল চন্দ্র শীল (২৫) ও তার মা রাধা রানী ও বোন হাসি।
ভুক্তভোগী লিজা জানান, ঢাকার গাজীপুর এলাকায় বাসা ভাড়া করে থাকেন তিনি। সেখানে বসে হাসির সাথে পরিচয় গড়ে উঠে। হাসি নানা ভাবে ফুঁসলিয়ে গত ৮ মে পাথরঘাটায় তাদের বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে আসে। এরপর হাসি, তার মা রাঁধা রানি ও নেপাল বিভিন্ন রকম ভয়ভীতি ও মারধর করে ১০ মে বেলা ২টার দিকে পাথরঘাটা কেন্দ্রীয় মন্দিরে নিয়ে গিয়ে পুরোহিতের মাধ্যমে জোর করে মৌখিকভাবে হিন্দু বানিয়ে নেপালের সাথে বিয়ে সম্পন্ন করে। পরে তাদের বাড়িতে নিয়ে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে হাতে শাঁখা ও মাথায় সিঁদুর পরিয়ে আমাকে কয়েকদফা ধর্ষণ করে নেপাল। এরপর (১১ মে বৃহস্পতিবার) রাতে নেপালের বাড়ি থেকে পালিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যের কাছে আশ্রয় নেই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আল আমিন জানান , নেপাল বিবাহের জন্য দীর্ঘদিন ধরে তার পরিবারকে চাপ দিয়ে আসছিল। বিবাহ না দেয়ায় গত ৭ জুন বাবাকে পিটিয়ে হত্যা করে জেলে যায় নেপাল। কিছুদিন আগে জামিনে এসে তার মা ও বোনের সহায়তায় এই কান্ড ঘটিয়েছে। ঐ পরিবারের সবাই উশৃংখল। এলাকার কারো সাথেই তাদের ভালো সম্পর্ক নেই।
পাথরঘাটা থানা সূত্রে জানা যায়, নেপালের বিরুদ্ধে হত্যা, মারামারি ও চুরির মামলা রয়েছে। এছাড়াও হাসির বিরুদ্ধেও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। লিজার অভিযোগের ভিত্তিতে অপহরণ, ধর্মান্তরিত, ধর্ষণ ও মারধরের মামলা হয়েছে।
এবিষয়ে পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শাহ আলম হাওলাদার জানান, লিজা আক্তার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে বাউল গান পরিবেশন করে। হাসির প্ররোচনায় সে পাথরঘাটায় বেড়াতে এসেছে। এ ঘটনায় নিয়মিত মামলা হয়েছে। মামলার ভিত্তিতে মা ও ছেলেকে আটক করে আদালতে মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য