কাজী নাফিস ফুয়াদ মাদারিপুর প্রতিনিধিঃ
গ্রীষ্মের তপ্ততায় যখন হাঁপিয়ে উঠেছে প্রকৃতি, সেই সময়েও চারদিকে সবুজের বুক চিরে রক্তিম লাল আভা জানান দিচ্ছে প্রাকৃতির বুকে আগুন লেগেছে । জানিয়ে দিচ্ছে কৃষ্ণচূড়া যেন গ্রীষ্মকালেরই প্রতীক।
লাল টুকটুকে কৃষ্ণচূড়া ফুল প্রকৃতিকে অপরূপ সাজে সাজিয়ে রঙিন করে তুলেছে এখন।
মাদারিপুরের ডাসারে রাস্তাঘাট বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায় স্কুল, কলেজ, মসজিদ, উপজেলা ভবন ও সরকারি অন্যান্য ভবনের আনাচে-কানাচে কৃষ্ণচূড়া গাছে লাল রঙয়ের কৃষ্ণচূড়া ফুলে ছেয়ে গেছে। বৈশাখ এলেই যেন প্রকৃতির ভালোবাসার কথা জানান দিতে লাল হয়ে হেসে উঠে কৃষ্ণচূড়া ফুল।
মোহনীয় রূপে প্রকৃতির শোভা বর্ধনকারী এ বৃক্ষ এখনো গ্রামবাংলার পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন স্থানে দেখা যায়। প্রকৃতিতে গ্রীষ্মের ছোঁয়া পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই কৃষ্ণচূড়া তার রক্তিম আভা ছড়ানোর মাধ্যমে জানান দেয়-সে এখনও টিকে আছে প্রকৃতিকে সাজাবে বলে।
প্রকৃতির এই রূপ নিসর্গপ্রেমীদের দারুণভাবে মোহিত করছে। বাহারি এ ফুলের আগুন লাগানো সৌন্দর্য প্রকৃতিতে এনেছে উচ্ছলতা। কবি, সাহিত্যিক ও শিল্পীর কণ্ঠেও কৃষ্ণচূড়া ফুলের বর্ণনা আছে নানাভাবে। কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি পথিকের ক্লান্তি ভুলিয়ে দেয়। ডাসার এখন কৃষ্ণচূড়ার রঙে আচ্ছাদিত।
কৃষ্ণচূড়ার আদি নিবাস পূর্ব আফ্রিকার মাদাগাস্কার। বিদেশ থেকে আমদানিকৃত এ বৃক্ষ যেন এখন বাঙালির ঐতিহ্যের একটা অংশ হয়ে গেছে সবার অলক্ষে। এদেশে এসে পরিচিত হয়েছে নতুন নামে। অনেকেই মনে করেন, শ্রীকৃষ্ণের নাম থেকে এ গাছ ও ফুলের নাম হয়েছে কৃষ্ণচূড়া। এর সবচেয়ে বড় খ্যাতি হচ্ছে মোহনীয় রক্তিম আভা। সবুজের বুক চিরে বের হয়ে আসা লাল ফুল এতটাই মোহনীয় যে, পথিচারীরাও থমকে দাঁড়াতে বাধ্য হন।
প্রকৃতির শোভা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে গাছগুলো রোপণ করেন সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আলহাজ্ব সৈয়দ আবুল হোসেন। বর্ধনকারী এ বৃক্ষের উচ্চতা তেমন একটা বেশি হয় না। সর্বোচ্চ ১২ মিটার পর্যন্ত উপরে উঠলেও তার শাখা-প্রশাখা বিশাল এলাকাজুড়ে বিস্তৃত থাকে। কৃষ্ণচূড়া পুরো গ্রীষ্ম ও বর্ষায় প্রকৃতিকে মাতিয়ে রাখে। বিভিন্ন দেশে এই ফুল বিভিন্ন সময়ে ফুটলেও বাংলাদেশে ফুটে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত। এই পুরো সময়টাতেই কৃষ্ণচূড়া প্রকৃতিকে মাতিয়ে রাখে উজ্জ্বল লাল আভায়। মানুষের দৃষ্টিগোচর হতে থাকে তার সৌন্দর্য। তখন আর আলাদা করে তার খোঁজ নেওয়ার দরকার হয় না। দূর থেকে দেখে মনে হয়-সবুজের বুকে হয়তো আগুন লেগেছে।
মন্তব্য