মোঃ মিনহাজ আলম
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
তীব্র তাপপ্রবাহ ও পশ্চিমা বায়ুপ্রবাহ বিরূপ প্রভাব পড়েছে দিনাজপুরের লিচুবাগানে। শত শত বাগানের লিচু পুড়ে গাছেই শুকিয়ে ফেটে যেতে শুরু করেছে। অতি তাপমাত্রায় লিচুর গা পুরে যাচ্ছে।ফলে লিচু ব্যবসায়ী ও বাগান মালিকদের কোটি কোটি টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।
গতকাল দিনাজপুরের বিরল, উপজেলার বেশ কিছু বাগান ঘুরে দেখা যায় , বিরল উপজেলার মাধববাটি, রবিপুর, মহেশপুর, পাকুড়া, রামপুর, রামচন্দ্রপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের, শত শত লিচু গাছে থোকায় থোকায় লিচু, শুকিয়ে ফেটে গাছেই ঝুলছে।
বিরল উপজেলার উত্তর মহেশপুর গ্রামের এক লিচুবাগান মালিক বলেন, ‘আমার নিজের বাগানের শতাধিক গাছের লিচু বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়ে শুকিয়ে গেছে।’
একই এলাকার আরেক লিচু ব্যবসায়ী জানান, তিনি ও তার এক বন্ধু মিলে চারটি লিচুবাগানের ফল চার বছরের জন্য কিনে নিয়েছেন। আর মাত্র ৭-১০ দিনের মধ্যে লিচু নামানোর সব আয়োজন সম্পন্ন করা ছিল। কিন্তু তার আগেই গত তিনদিনের বৈরী আবহাওয়ায় মাদ্রাজি জাতের লিচু পুরোপুরি এবং বোম্বাই জাতের লিচু ৫০ ভাগ নষ্ট হয়ে গেছে। এর মধ্যে তাদের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৫০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে যাবে। তবে এ ধরনের আবহাওয়া আরো তিন দিন থাকলে গাছ থেকে লিচু পাড়ার প্রয়োজন হবে না বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
বাগান মালিক, ফল ব্যবসায়ী ও পাইকাররা জানান, গত ৩১ মে পর্যন্ত প্রতিটি গাছে লিচু ভালো ছিল। কিন্তু ১ জুন থেকে টানা চারদিন জেলার তাপপ্রবাহ বেড়ে যায়। একই সঙ্গে গরম বাতাস প্রবাহিত হয়। ফলে একদিকে তাপপ্রবাহ অন্যদিকে গরম বাতাসের প্রভাবে গাছের পাকা ও আধপাকা লিচু গাছেই শুকিয়ে ফেটে যাচ্ছে। লিচুর গায়ে পুড়ে যাওয়া দাগ হতে শুরু করেছে।
বিরল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা হাসান ইমাম বলেন, ‘উপজেলায় ২ হাজার ৫৫৮ হেক্টর জমিতে লিচুবাগান আছে। দীর্ঘ অনাবৃষ্টির কারণে উপজেলার ৫০ ভাগ বোরিং থেকে পানি উঠছে না। বৃষ্টি না হওয়ার সুফল যেমন আমরা বোরো ধানে পেয়েছি তেমনি এর বিপরীত চিত্র পাচ্ছি লিচুতে। প্রচণ্ড তাপে হাজার হাজার গাছের লিচু ফেটে ফোসকা পড়ে গেছে। বৃষ্টির মতো করে সন্ধ্যার পর প্রতিটি গাছে পানি স্প্রে করতে বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
মন্তব্য