বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪
 

আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমাবেশ ২৭শে জুলাই এর পরিবর্তে ২৮ জুলাই

JK0007
প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৩

 ---

যুগের কণ্ঠস্বর প্রতিনিধি: আগামীকাল বৃহস্পতিবারের (২৭ জুলাই) নির্ধারিত সমাবেশ এক দিন পিছিয়ে শুক্রবার (২৮ জুলাই) করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম তিন সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ।

শুক্রবার (২৮ জুলাই) বিকেল ৩টায় আগারগাঁওয়ে বাণিজ্য মেলার (পুরনো) মাঠে তাদের শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। বুধবার রাতে গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম।
তিনি বলেন, আগারগাঁওয়ের বাণিজ্য মেলা মাঠটি সমাবেশের জন্য উপযোগী নয়। মাঠটি ব্যবহার উপযোগী করার জন্য এক দিন সময় প্রয়োজন। এজন্য আমাদের শান্তি সমাবেশ এক দিন পিছিয়ে ২৮ জুলাই শুক্রবার করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াও বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

শুক্রবারের সমাবেশ প্রসঙ্গে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু বলেন, মাঠটি ব্যবহার উপযোগী নয়। গণপূর্ত মন্ত্রণালয় আমাদের কাছে এক দিন সময় চেয়েছে। এক দিন সময় দিলে তারা মাঠটি ঠিক করে দিতে পারবে। এ কারণে আমরা কালকের (বৃহস্পতিবার) শান্তি সমাবেশ পিছিয়ে শুক্রবার বিকাল ৩টায় ঠিক করেছি।

‘কয়েক দিন আগে এখানে বৃক্ষমেলা হয়েছিল। এখনও মাঠে বড় বড় গর্ত। রাতের মধ্যে এগুলো ভরাট করা সম্ভব নয়। গর্তগুলো ভরাট করে মাঠ ঠিক করতে এক দিন সময় চেয়েছে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।’

স্বেচ্ছাসেবক লীগের এ নেতা বলেন, আমাদের প্রস্তুতি ছিল শান্তি সমাবেশে তিন থেকে পাঁচ লাখ ছাত্র, যুবকদের উপস্থিতি। সেটি বিবেচনায় নিয়ে মাঠটি আমরা পছন্দ করেছি। এখানে আমাদের নেতাকর্মীরা সহজে অবস্থান করতে পারবেন। সমস্যা হচ্ছে বিভিন্ন জেলা থেকে আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। তাদের জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারপরও শান্তি সমাবেশের তারিখ পরিবর্তনের বিষয়টি তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর আগে রাত ৯টার দিকে আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বাণিজ্য মেলার (পুরনো) মাঠটি পরিদর্শনে যান আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল। দলে ছিলেন- আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য শাহাবুদ্দিন ফারাজি ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম।

আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম তিন সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ এর আগে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) শান্তি সমাবেশ করার অনুমতি চায়। কিন্তু সেটি দেওয়া হয়নি। পরে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়াম মাঠে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে আবেদন করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কছে।

বায়তুল মোকাররম গেটে সমাবেশের অনুমতি না পাওয়া প্রসঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে শান্তি সমাবেশের অনুমিত দেয়নি ডিএমপি। এজন্য আমরা বিকল্প হিসেবে জিমনেসিয়াম মাঠে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছি। যদিও পরে তারা আগারগাঁওয়ের পুরাতন বাণিজ্য মেলা মাঠে শান্তি সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয়। শান্তি সমাবেশ ঘিরে ক্ষমতাসীনরা বিশাল জনসমুদ্রের প্রত্যাশা করছে। তিন সংগঠনের এ সমাবেশে কয়েক লাখ নেতাকর্মীকে টানার টার্গেট রয়েছে তাদের।

নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সমাবেশে আসার জন্য ঢাকা মহানগর যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের সকল ইউনিটের নেতাদের বার্তা পাঠানো হয়েছে বলেও দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
অন্যদিকে বিএনপির মহাসমাবেশ বৃহস্পতিবারের পরিবর্তে শুক্রবার দুপুরে নয়া পল্টনে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, অনেক চেষ্টা করেও পুলিশের অবস্থান বদলায়নি। তবে বিএনপি বারবারই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী।

বুধবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ার পারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান মির্জা ফখরুল। এ সময়, কর্মসূচিতে সরকার কিংবা প্রশাসন কোনো বাধা সৃষ্টি করবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। শুক্রবার কোনো ধরনের উসকানিতে পা না দিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনের আহ্বানও জানান বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে ২৭ জুলাই বৃহস্পতিবারের পরিবর্তে আগামী ২৮ জুলাই শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে দুপুর ২টায় নয়াপল্টনে পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, দলের পক্ষ থেকে গত ২৩ জুলাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অথবা নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানের কথা ডিএমপিকে জানানো হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উচ্চ আদালতের আপত্তি আর কর্মদিবসে নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানে জনদুর্ভোগের অজুহাতে সমাবেশ অনুষ্ঠানে আপত্তির কথা আমাদের জানিয়েছে মহানগর পুলিশ কর্তৃপক্ষ। যদিও ইতোপূর্বে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এবং কর্মদিবসে নয়াপল্টনে অসংখ্য সমাবেশ-মহাসমাবেশের দৃষ্টান্ত আছে।

এর আগে, বৃহস্পতিবার মহাসমাবেশ করার কথা ছিল বিএনপি’র। বিএনপি চাইছিল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অথবা নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশ করার। কিন্তু, এ দুই ভেন্যুতে সমাবেশের অনুমতি দেয়নি ডিএমপি।
এদিকে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। এই উৎকণ্ঠার কারণ হচ্ছে বিএনপি। যারা অনুমতি ছাড়া সমাবেশ করার চেষ্টা করবে, অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা করবে, তাদের কঠোর হস্তে দমন করা হবে।

বুধবার (২৬ জুলাই) রাত ৮টায় কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে আলাপে এ কথা বলেন তিনি। ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত কোনো দলকেই সমাবেশ করার অনুমতি দিইনি। আমরা পরিবেশ পরিস্থিতি অবজার্ভ করছি। ঢাকায় অরজাকাতা বিশৃঙ্খলা এড়াতে ডিএমপির পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।

ডিএমপির অনুমতি ছাড়াই যদি কোনো দল সমাবেশের আয়োজন করে এমন প্রশ্নের জবাবে খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, অনুমতি ছাড়া কারও সমাবেশ করার সুযোগ এ মুহূর্তে নেই। এরপরও কেউ সেটার চেষ্টা করলে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্য

সর্বশেষপঠিত

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon