মো আরফাত ছিদ্দিকী:
অপহৃত ভিকটিম ১৬ বছর বয়সের সনাতন ধর্মাবলম্বী কিশোরী এবং স্থানীয় একটি স্কুল থেকে ২০২৩ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জিপিএ-৩.৬৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। অপহৃত ভিকটিমের সাথে আসামী বখাটে মোহাম্মদ টিটু (৩০) এর মোবাইল ফোনে পরিচয় হয় এবং এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি জানতে পেরে ভিকটিমের পরিবার আসামী মোহাম্মদ টিটু’র পরিবারকে অবগত করেন। এতে মোহাম্মদ টিটু ক্ষিপ্ত হয়ে ভিকটিম এর পিতা-মাতাকে হুমকি দেয় যে, যেকোন সময় তার মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যাবে।
পরবর্তীতে গত ৩১ জুলাই ২০২৩ ইং তারিখ দুপুর আনুমানিক ১৪:৩০ ঘটিকায় ভিকটিম কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বাহির হলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আসামী মোহাম্মদ টিটু এবং তার ০১ জন সহযোগী ভিকটিমকে অপহরণ করে একটি মাইক্রোবাস যোগে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ভিকটিম সময়মত বাসায় না ফেরায় ভিকটিমের বাবা-মা আত্বীয় স্বজনদের বাসাসহ সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে অপহরণের ঘটনাস্থালে এসে প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছে জানতে পারে যে, তার মেয়েকে মোহাম্মদ টিটু নামক এক যুবক তার অপরাপর সহযোগীদের সহায়তায় একটি মাইক্রোবাস যোগে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছে।
উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে গত ০৩ আগস্ট ২০২৩ইং তারিখ চট্টগ্রাম জেলার ভূজপুর থানায় মোহাম্মদ টিটু’কে প্রধান আসামী করে অজ্ঞাতনামা ২/৩ জনকে আসামী করে একটি অপরহণ মামলা দায়ের করেন, যার নং-০১/৮৭, তারিখ-০৩/০৮/২০২৩খ্রিঃ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সং/০৩) এর ৭/৩০।
মেয়েকে উদ্ধার এবং অপহরণকারীদের আটকের জন্য ভিকটিমের মা চন্দনা রানী দে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করেন। উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম ভিকটিমকে উদ্ধার এবং অপহরণকারীদের গ্রেফতারের লক্ষে গোয়েন্দা নজরধারী এবং ছায়াতদন্ত অব্যাহত রাখে। নজরধারীর এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সূত্রে জানতে পারে যে, অপহরণকারীরা চট্টগ্রাম জেলার ভূজপুর থানাধীন দাঁতমারা এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ০৬ আগস্ট ২০২৩ইং তারিখে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি অভিযানিক দল বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী ১। মোহাম্মদ টিটু (৩০), পিতা-আহমুদুল হক, সাং-হাইদচকিয়া, থানা-হাটহাজারী, জেলা-চট্টগ্রাম, ২। আমজাদ হোসেন রুমেন (২৩), পিতা-দুলাল মিয়া, সাং-হাইদচকিয়া, থানা-ফটিকছড়ি, জেলা-চট্টগ্রাম এবং ৩। রুবি বেগম (৩৮), স্বামী-জাহাঙ্গীর আলম, সাং- বারমাসিয়া, থানা-ভূজপুর, জেলা-চট্টগ্রামদের’কে আটক এবং ভিকটিম এর মা’র সনাক্ত মতে তার নাবালিকা কিশোরী মেয়েকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে মোহাম্মদ টিটু এজাহার নামীয় আসামী মর্মে স্বীকার করে এবং আমজাদ হোসেন রুমেন অপহরণের কাজে যানবাহন সহায়তাকারী এবং রুবি বেগম আসামী এবং ভিকটিমকে তাহার বাড়িতে আশ্রয় দানকারী মর্মে স্বীকার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
মন্তব্য