চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি :
২০২১ সালের ৬ই অক্টোবর। জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশে দীর্ঘ ১৪ বছর পর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ বাহাউদ্দীন নাছিম।
পরে সম্মেলনের ১৮ দিন পর ২৫শে অক্টোবর বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু স্বাক্ষরিত পত্রে কেন্দ্র থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
স্বাক্ষরিত পত্রে তিন বছর অর্থাৎ ৩৬ মাসের জন্য ঘোষিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আংশিক কমিটিতে মো. আব্দুল আওয়াল গণি জোহাকে সভাপতি এবং এইচএম ফায়জার রহমান কনককে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। আর একই পত্রে পরবর্তী এক মাসের মধ্যেই কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল কেন্দ্র থেকে। তবে কমিটি ঘোষণার ২২ মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারেননি এই দুই নেতা। জেলা কমিটিতো বটেই নিজেদের অধীনে জেলার ৫টি উপজেলা ও ৪টি পৌরসভার ইউনিটে এখনও পূর্নাঙ্গ কমিটি দিতে পারেনি জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ।
দলীয় সূত্র বলছে, ১৪ বছর পর ২০২১ সালে কেন্দ্র থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। এতে আশাবাদী হয়েছিলেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। কিন্তু দীর্ঘ ২২ মাসেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে সংগঠনটির পদ প্রত্যাশী নেতাদের মধ্যে। আর তাই এখন তারা কোন আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন না। কেননা সভাপতি আর সাধারণ সম্পাদক এখন দুই মেরুতে বিভক্ত।
জানা যায়, ঘোষিত আংশিক কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিজেদের মধ্যে সমন্বয় না করেই কেন্দ্রে কমিটি জমা দিয়েছেন। আর এতে পদ প্রত্যাশীরা হতাশ হয়েছেন। কেননা যেখানে কমিটির প্রধানদের নিজেদের মধ্যেই সমন্বয় নাই সেখানে ভালো কিছু আশা করা বৃথা বলে মনে করেন তারা। ফলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে বলেও অভিযোগ স্থানীয় নেতাকর্মীদের।
এ বিষয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এইচএম ফাইজার রহমান কনক বলেন, দীর্ঘদিন যারা আমাদের সঙ্গে সাংগঠনিক কাজে সময় দিচ্ছেন তাদের একটা দলীয় পরিচয় প্রয়োজন। আর তাই অনেক আগেই একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা কেন্দ্রে জমা দেয়া হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্র থেকে এখনও অনুমোদন দেয়নি। বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপর নির্ভর করছে। কিছুদিন আগে আমাদের বিভাগীয় সমাবেশ ছিল। সেখানে গিয়েও কমিটির বিষয়ে বলেছি। কিন্তু কাজ হয়নি। কনক আরও বলেন, কমিটিটা আমাদের দরকার ছিল।
তবে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আব্দুল আওয়াল গণি জোহা বলেন, ২০২২ সালের এপ্রিলে একটা পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ মারা যান। পরে চলতি বছরের মার্চ মাসে আবারও কমিটি পাঠানো হয়েছে। আমি ও সাধারণ সম্পাদক কনক আলাদাভাবে ৯৯ জনের নাম পাঠিয়েছি। কেন্দ্রীয় নেতারা সেটি সমন্বয় করে কমিটি ঘোষণা করবেন। শোকের মাস আগস্টের পরেই জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন এই নেতা।
উল্লেখ্য, প্রায় দেড় দশক পর ২০২১ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন হয়। এর আগে সর্বশেষ সম্মেলন হয় ২০০৭ সালে। তবে ওই বছর সমঝোতার ভিত্তিতে কমিটি হয়।
মন্তব্য