তালতলী(বরগুনা)প্রতিনিধ: বরগুনার তালতলীতে টানা বৃষ্টিতে ডুবে গেছে আমন ধানের বীজতলা। আর এ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন প্রান্তিক কৃষকরা। অতি বৃষ্টির কারণে বীজতলা ডুবে গিয়ে পচন ধরেছে চারায়।
নিম্নচাপ ও পূর্ণিমার প্রভাবে ৬ দিনের টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার কারণে তালতলীর অধিকাংশ এলাকার আমনের বীজতলা পানিতে তলিয়ে রয়েছে। এতে আমনের বীজতলা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকেরা। নতুন করে বীজতলা তৈরির সময় নেই, এতে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে আমন আবাদ।
স্থানীয় কৃষকরা বলেন, আমন ধান পুরোটাই বৃষ্টির ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় আবাদে খরচ কম লাগে। সাধারণত দেশে আষাঢ়- শ্রাবণ কিংবা জুলাইয়ে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়। আর ওই সময়টা সামনে রেখেই কৃষক আমন রোপণের প্রস্তুতি নেয়। কিন্তু এ বছর জুলাই প্রায় শেষ হলেও আশানুরূপ বৃষ্টির দেখা ছিলনা হটাৎ টানা ৬ দিনের বৃষ্টিতে বীজ তলা তলিয়ে গেছে। দ্রুত পানি নিষ্কাশন এর ব্যবস্থা না করতে পারলে কৃষকদের বড় ধরনের ক্ষতির শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
জানা যায়, তাপপ্রবাহে পুড়ছিল দেশ। ফলে দেশের আবাদি জমিগুলো প্রায় পানিশূন্য ছিল প্রখর রোদে নষ্ট হচ্ছিল বীজতলা। এমন পরিস্থিতিতে অনেকে বিকল্প ব্যবস্থায় সেচের পানিতে আমনের চারা রোপণের চিন্তা করছিলেন কিন্তু টানা ৬ দিনের বিরহীন বৃষ্টিতে বীজ তলা তলিয়ে গেছে তবে বীজের বয়স বেশি হয়ে গেলে ফলন কমে যায়। পাশাপাশি দেরিতে আবাদ হলে রোগবালাই বেশি হয়। এ অবস্থায় আমন আবাদে কৃষকের সার ও কীটনাশকও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি প্রয়োজন হবে। তাছাড়া তীব্র গরমের কারণে শ্রমিকদের কাজে ধীরগতি এসেছে। সব মিলিয়ে আমন চাষে কৃষকের হাল খরচ, সেচ খরচ ও শ্রমিক খরচ বেশি পড়ছে। এতে লাভ এর চেয়ে ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশি।
স্থানীয় কৃষকেরা জানান, ২৫ দিন আগে ব্রি-২৩ ধানের বীজ করেছেন। গত ৬ দিনের টানা বৃষ্টিতে আমন ধানের বীজতলা পানিতে তলিয়ে আছে। পানিনিষ্কাশন না হলে বীজতলার চারা পচে যাবে। তখন আমন রোপন করতে হলে আবার তাঁদের উচ্চ দামে বীজ কিনে খেতে রোপণ করতে হবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে , সদর উপজেলার বড়বগী, সোনা কাটা, নিশানবাড়ীয়া,ছোট বগী এলাকার আমন ধানের বীজতলা হাঁটুসমান পানির নিচে তলিয়ে আছে। এসব বীজতলা থেকে চারা সরিয়ে ফেলছেন কৃষকেরা।
কয়েকজন কৃষক বলেন প্রথমে বীজ তলা করতে পারিনি বৃষ্টি ছিলনা তাই রোদ্রের তাপে বীজ তলা পুরি গেছে পানি ছিলনা তাই জমি চাষ করতে পারিনি হটাৎ করে টানা ৬ দিনের বৃষ্টিতে কোলা তলিয়ে গেছে এই পানি টানতে আরো ১৫ দিনের মত সময় লাগবে এতে করে বীজের বয়স বেশি হয়ে যাচ্ছে আবার কিছু বীজ পঁচে জাবে কি করবো জানিনা
আমন সাধারণত দেরিতে আবাদ করলে ফসলে রোগবালাই বেশি হওয়ার শঙ্কা থাকে। বেড়ে যায় কী- টনাশকের ব্যবহার।
তালতলী কৃষি কর্মকর্তা, সুমন মিয়া বলেন এই নিম্নচাপ ও পূর্ণিমার প্রভাবে ৬ দিনের টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার কারণে তালতলীর অধিকাংশ এলাকার আমনের বীজতলা পানিতে তলিয়ে রয়েছে আমাদের সকল কর্মী মাঠে সব সময় কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে এবং আমি বিভিন্ন ইউনিয়নে ঘুরে দেখেছি এবং আমাদের পরামর্শ পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে স্বল্প জীবন কালীন জাত যেমন ব্রিধান-৩৩, ব্রিধান-৫৬, ব্রিধান-৬২, বিধান-৭১, ব্রিধান-৭৫ আগষ্ট পর্যন্ত রোপন করা যেতে পারে, আলোক সংবেদনশীল জাত যেমন- বিআর ২২, বিআর ২৩, ব্রিধান ৩৪, ব্রিধান ৪৬ প্রভৃতি জাত সমূহ ১৫ আগষ্টের মধ্যে বীজতলা স্থাপন করে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রোপন করা যাবে। বোনা পদ্ধতিতে চাষের ক্ষেত্রে উল্লেখিত জাত সমূহ ৩০ আগস্টের মধ্যে মূল জমিতে বপন করতে হবে।যদি বীজতলার বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয় তাহলে উল্লেখিত জাত সমূহ নতুনভাবে পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে চাষ করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হলো।
মন্তব্য