বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪
 

ঠাকুরগাঁওয়ে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগ

মাহবুবুর রহমান জিসান
প্রকাশ: ২৬ আগস্ট ২০২৩

---

মোঃ মিনহাজ আলম, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁও সদরের ভুল্লী থানা এলাকায় সড়কের পাশের সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে জহিরুল ইসলাম ও আব্দুল রাজ্জাক বাপ্পী নামে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। তবে কী কারণে সরকারি গাছ কর্তন করেছে তা খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান স্থানীয় প্রশাসন। শুক্রবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে গাছগুলো কাটার সময় স্থানীয়রা তাদের আটক করে পুলিশে খবর দেয়।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, কিছুদিন আগে সদরের ভুল্লী বাজারের সড়কের পাশে কয়েকটি সরকারি ইউক্যালিপটাস গাছ ঝড়-বৃষ্টিতে ভেঙ্গে পড়ে। এ সুযোগে জহিরুল ইসলাম ও আব্দুল রাজ্জাক বাপ্পী ভুল্লী ডিগ্রি কলেজের পাশে অবস্থিত এক স”মিলে বিক্রি করতে গেলে মিজান নামে এক গাছ ক্রেতা গাছগুলোর দাম বলেন ৫০০০ হাজার টাকা। এসময় মিজান তাদের কাছে গাছ কর্তনের অনুমতি আছে কিনা তা দেখতে চাইলে তারা বলেন বনবিভাগের অনুমতি নিয়েই তারা গাছগুলো বিক্রি করছে। একথা শুনে জহিরুল ইসলাম ও আব্দুল রাজ্জাক বাপ্পীকে নগদ ৩ হাজার টাকা দেয় মিজান। আর বাকি টাকা গাছ কর্তনের পর আর দিবে। সে অনুযায়ী গতকাল গাছ কাটতে গেলে জহিরুল ইসলাম ও আব্দুল রাজ্জাক বাপ্পী হেলাল নামে এক শ্রমিককে নিয়ে গাছ কর্তন করতে গেলে স্থানীয়রা বাঁধা দেয়। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে গাছ গুলো উদ্ধার করে।

গাছ ক্রেতা মিজান জানান, জহিরুল ইসলাম ও আব্দুল রাজ্জাক কিছুদিন আগে আমার কাছে গাছ বিক্রি করতে আসেন। আমি গাছের দাম ৫ হাজার টাকা বলি এবং নগদ ৩ হাজার টাকা তাদের হাতে দেয়। পরে জানতে পারি গাছগুলো সরকারি। তাদের কাছে বনবিভাগের গাছ কর্তনের অনুমতি পত্র দেখতে চাইলে তারা আমাকে মোবাইল ফোনে বলে দিনাজপুর আসছি গাছ কাটার অনুমতি চাইতে এখানে টাকা আপনি বাকি টাকাগুলো আমাদের পাঠায় দেন।

অন্যদিকে শ্রমিক হেলাল বলেন, জহিরুল ইসলাম ও আব্দুল রাজ্জাক আমাকে গতকাল রাস্তার পাশে পড়ে থাকা গাছ কাটার জন্য নিয়ে যায়। গাছ কাটার সময় স্থানীয়রা আমাদের বাঁধা দেয়। বলে যে এগুলো সরকারি গাছ। পরে পুলিশ আসলে আমি চলে যায়।

অভিযোগ রয়েছে, জহিরুল ইসলাম ও আব্দুল রাজ্জাক বাপ্পীর নানান কু-কীর্তি ও চাঁদাবাজীতে বিব্রত ভুল্লীর ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা। তারা রাজনৈতিক পরিচয় ও স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তির আদেশে এমন চাঁদাবাজী করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

তবে সচেতনমহল বলছেন, জাল কার্ডধারী সাংবাদিকরা নানা অপকর্ম করে পার পেয়ে যাচ্ছে। নিজেদের কখনো সাংবাদিক কখনো বা মানবাধিকার কর্মী পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন প্রতারণা চালিয়ে আসছে একটি প্রতারকচক্র। সাংবাদিকতার নাম ব্যবহার করে যারা প্রতারণা করছে তাদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হোক এমনটাই দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

নাম প্রকাশেঅনিচ্ছুক ভুল্লী থানার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, জহিরুল ইসলাম ও আব্দুল রাজ্জাক স্থানীয় টোকায়দের নিয়ে কথিত ভুল্লী থানা প্রেসক্লাব নামে একটি দোকান খুলে বসেন। যাদের মাধ্যমে সমাজের নানা অনিয়ম, অন্যায়, দূর্নীতি সাধারন মানুষের জানার কথা তারাই আজ অন্যায় ও সাধারন মানুষকে নিউজ করার ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করে। শুধু চাঁদাবাজী নন সরকারি গাছ থেকে শুরু করে বাজারে ডিম বিক্রি করতে আসা ব্যক্তিদের কাছেও চাঁদা আদায় করছে। ভুল্লী থানা কর্তৃপক্ষ কাউকে আটক করে নিয়ে আসলে সেখানেও তারা অর্থের বিনিময়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ছাড়িয়ে দেন। এবং থানায় কেউ অভিযোগ দিতে আসলে তাদের অনুমতি ছাড়া অভিযোগ গ্রহণ করা হয়না। তবে ক্ষমতাশীন দলের কিছু নেতার ছত্রছায়ায় তারা এমন কাজ করছে বলে অভিযোগ তাদের।

অভিযোগ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত জহিরুল ইসলাম ও আব্দুল রাজ্জাক এর সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তারা কথা বলতে রাজী হননি।

বালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভুট্রো চৌধুরী বলেন, রাস্তার পাশে পড়ে থাকা সরকারি গাছ কর্তন করে বিক্রি করা হয়েছে বলে শুনেছি। আমি প্রশাসনকে বিষয়টি জানাবো।

ভুল্লী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল উদ্দীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জহিরুল ইসলাম ও আব্দুল রাজ্জাক বাপ্পীর বিরুদ্ধে সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মোঃ শামসুজ্জামান জানান,অনুমতি ছাড়া কেউ সরকারি কাজ কর্তন করতে পারবে না। যদি কেউ কর্তন করে থাকে তাহল তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্য

সর্বশেষপঠিত

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon