মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪
 

চালুর প্রথম মাসেই বাণিজ্যিকভাবে বেশ ভালো সারা পাচ্ছে ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানাটি

মাহবুবুর রহমান জিসান
প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২৩

---
মোঃ মিনহাজ আলোম ;ঠাকুরগাঁও,

বন্ধের ২১ বছর পর চালু হয়েছে ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানাটি। গত ৩এ আগস্ট বৃহস্পতিবার বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় চালু হয় কারখানাটি। কারখানাটি বর্তমানে চলছে ‘সুপ্রিয় রেশম কারখানা নামে ।

দীর্ঘ ২১ বছর বন্ধ থাকার পর নতুন করে কারখানাটি আবারো চালু হওয়ায়, চালুর এক মাসেই জেলায় এবং জেলার বাইরে বেশ সারা পাচ্ছে কারখানার উৎপাদিত বস্ত্র ।

চালুর পর এরিই মধ্যে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে স্থানিয়দের। সেই সাথে দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ থাকা তুঁত চাষে আগ্রহী হয়েছে তুঁত চাষিরা । ঠাকুরগাঁও বাসির দীর্ঘদিনের আশা আকাঙ্কক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে কারখানাটির চালুর মাধ্যমে।

পনেরো ধরনের কাপড় শাড়ি পাঞ্জাবি পর্দাসহ বিভিন্ন বস্ত্র উৎপাদনে এরই মধ্যে বর্তমানে ৩০ থেকে ৩৫ জন শ্রমিক-কর্মচারী কাজে যুক্ত করা হয়েছে। উৎপাদন বৃদ্ধির সাথে সাথে আরও কর্মচারি নিয়োগ হবে বলে জানান কারখানা কর্তিপক্ষ।

সেসময়ে কারখানাটিতে ৭৫ জন কর্মী সহ জেলায় ১০ হাজার তুঁত চাষি কাজ করতো। পরবর্তীতে এক দশকে সংস্কারের অভাব ও অব্যবস্থাপনার কারণে প্রতিবছর লোকসানে পড়ছিল কারখানাটি। একপর্যায়ে কারখানাটি বন্ধ হয়ে গেলে ১৯৯৫ সালে আধুনিকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। পরে ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৯ সালে সংস্কার ও আধুনিকীকরণের কাজ শেষ হয়।
পরে আবার কারখানাটি পুনরায় চালু হলে ২ বছর চলে। এরপর লোকসানের অজুহাতে আবার ২০০২ সালে কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সেই সাথে বন্ধ হয় রেশম চাষের মূল উপাদান তুঁত চাষ ।

কারখানার কর্মীরা জানান, তারা প্রত্যেকে এই কারখানায় প্রায় ১৮ থেকে ২০ বছর কাজ করেছেন। কারখানাটি বন্ধ হওয়ার পর জীবিকা নীর্বাহের তাগিদে বেছে নিয়েছিলেন অন্য পেশা । আবারো নতুন উদ্দমে পুনরায় কারখানাটি চালু হওয়ায় আশার আলো ফিরেছে তাদের । আবার তারা ফিরেছে পুরোনো পেশায়।

এ বিষয়ে সুপ্রিয় গ্রুপের চেয়ারম্যান বাবলুর রহমান বলেন, কারখানাটিতে ২০টি পাওয়ার লুম (তাঁত) ও ১৬টি হ্যান্ড লুম আছে। এতে দক্ষ শ্রমিক নিয়োগ করে প্রতি ৮ ঘণ্টায় ১০০ মিটার সিল্ক কাপড় প্রস্তুত করা যায়। বর্তমানে প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা কারখানা চালুর পরিকল্পনা থাকলেও বাজারে চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উৎপাদন কার্যক্রম বাড়ানো হবে। যেহেতু ঠাকুরগাঁও সিল্কের দেশে ও বিদেশে খ্যাতি আছে, তাই এই কারখানায় পণ্য উৎপাদন করে ভালো লাভ করা সম্ভব হবে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে উৎপাদিত পণ্য বিদেশে রপ্তানি করারও ইচ্ছে আছে আমাদের।

কারখানার ব্যবস্থাপক মো. বেলায়েত হোসেন প্রধান বলেন , কারখানার চালুর অল্প দিনেই আমরা বেশ সারা পাচ্ছি। আমাদের কারখানাটি আগামী এক মাসের মধ্যেই পুরো চালু হয়ে যাবে। আমাদের কারখানার উৎপাদিত বস্ত্র স্থানিয় বাজার সহ সারা বাংলাদেশের সব জাগায় বিক্রী হবে বলে আমরা আসাবাদি। কারখানাটিতে ইতি মধ্যেই আনেক লোকের কর্ম সংস্থান হয়ে গেছে ,কারখানাটি পুরোপুরি চালু হলে একশ লোকের কর্ম সংস্থান হবে । রেশম চাষিরাও উৎশাহী হয়েছে তুঁত চাষে। তারা আবারোও রেশম চাষে ফিরবে বলে আমার ধারনা। কারখানাটি ভবিষত্বে অনেক ভালো করবে বলে জানান তিনি।

রেশম উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া তথ্য মতে, ১৯৭৫-৭৬ অর্থবছরে শহরের গোবিন্দনগর এলাকায় প্রায় সাড়ে তিন একর জমিতে নির্মাণ করা হয় কারখানাটি। জাতীয়করণ করা হয় ১৯৮১ সালে। পরে ২০০২ সালের ৩০ নভেম্বর তৎকালিন সরকার লোকসানের অজুহাতে বন্ধ করে দেয় কারখানাটি।

মন্তব্য

সর্বশেষপঠিত

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon