শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪
 

প্রকাশ্য রাস্তায় এমন একটা ঘটনা ঘটল, একজন নিরপরাধ মানুষের এমন পরিণতি হলো, অথচ সরকারের পক্ষ থেকে কেউ খোঁজ নিল না

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

---
মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে স্বামী ভুবন চন্দ্র শীল দুই দিন ধরে হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে আছেন। স্ত্রী রত্না রানী শীল জানেন না তাঁর স্বামীর জ্ঞান আর ফিরবে কি না। চিকিৎসকেরা তাঁকে এখন পর্যন্ত কোনো আশার কথা শোনাতে পারেননি। চিকিৎসকেরা শুধু বলেছেন, ভুবনের জ্ঞান না ফেরা পর্যন্ত অস্ত্রোপচারও সম্ভব নয়। এমন অনিশ্চয়তা নিয়েই একমাত্র মেয়ে ভূমিকা চন্দ্র শীলকে নিয়ে দুই দিন ধরে হাসপাতালের সিঁড়িতে অপেক্ষায় আছেন রত্না রানী শীল। রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় সোমবার রাত ১০টার দিকে প্রাইভেট কার আরোহী এক শীর্ষ সন্ত্রাসীকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায় একদল সন্ত্রাসী। সেই গুলি লেগেছিল মোটরসাইকেল আরোহী ভুবন চন্দ্র শীলের মাথায়। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। পরে ওই রাতেই তাঁকে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

আজ বুধবার বিকেলে পপুলার হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ভুবনের স্ত্রী রত্না রানী শীল ও তাঁর সদ্য এসএসসি পাস করা মেয়ে ভূমিকা চন্দ্র শীল সিঁড়িতে বসে আছেন। তাঁদের বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। কেউই তেমন কোনো কথা বলছিলেন না। প্রথম আলোর পরিচয় পেয়ে কথা বলতে শুরু করেন রত্না রানী শীল। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামীর মতো এমন দুর্ভাগা হয়তো আর কেউ নেই। পথ দিয়ে যাচ্ছিল, হঠাৎ মাথায় গুলি লাগল। এখন তো চিকিৎসকেরাও বলতে পারছেন না, তিনি বাঁচবেন কি না। কোনো আশা দেখাচ্ছেন না।’

ভুবন চন্দ্র শীল গোমতী টেক্সটাইল লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের আইনি পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন। গুলশানে তাঁর কার্যালয়। রাতে কাজ শেষে সেখান থেকে মতিঝিলের আরামবাগের বাসায় ফেরার পথে তিনি গুলিবদ্ধ হন। আরামবাগের বাসায় তিনি একাই থাকতেন। তাঁর স্ত্রী রত্না রানী শীল একমাত্র সন্তানকে নিয়ে থাকেন নোয়াখালীর মাইজদীতে। রত্না মাইজদীর একটি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক। ভুবনের বাবা কৃষ্ণ কুমার শীল মারা গেছেন ২৩ বছর আগে। ভুবনের মা গিরিবালা শীলের বয়স ৭৫ বছর। তিনি ভুবনের স্ত্রী রত্না রানী শীলের সঙ্গে থাকেন। তিনিও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। স্মৃতিশক্তি হ্রাস পেয়েছে, কথা বলতে পারেন না। ভুবন মা–বাবার একমাত্র সন্তান।

রত্না রানী শীল বলেন, নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার তাঁদের। আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো নয়। এমন পরিস্থিতিতে ভুবনের চিকিৎসা ব্যয় নিয়েও আছেন দুশ্চিন্তার মধ্যে। প্রকাশ্য রাস্তায় এমন একটা ঘটনা ঘটল, একজন নিরপরাধ মানুষের এমন পরিণতি হলো, অথচ সরকারের পক্ষ থেকে কেউ খোঁজ নিল না।

রত্নার ভাই তাপস মজুমদার ভগ্নিপতির চিকিৎসকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আশ্বস্ত হওয়ার মতো কোনো কথা চিকিৎসকেরা বলতে পারেননি। ওনাকে লাইফ সাপোর্টে রাখতে প্রতিদিন ৫০ হাজারের বেশি টাকা খরচ হচ্ছে।

মন্তব্য

সর্বশেষপঠিত

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon