মোঃ জিয়াউল ইসলাম: একেরপর এক নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে একাধিক সংসার ভাঙ্গার অভিযোগ উঠেছে বরগুনার পাথরঘাটার আবুল কালাম মৃধা (৪০) নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এঘটনার অভিযুক্ত আবুল কালামের বিচারের দাবিতে শনিবার সকালে উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের কয়েক শতাধিক নারী-পুরুষ সহ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
অভিযুক্ত আবুল কালাম মৃধা একই ওয়ার্ডের মৃত নুর মোহাম্মদ মৃধার ছেলে। সে পেশায় মৎস্য জীবি। তার লালসায় নিপিড়ন ও পরকীয়ার বলি হয়েও প্রতিকার না পাওয়ায় মানববন্ধন করেছে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী। মানববন্ধনে এমন অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
এক ভুক্তভোগী জোৎস্না বলেন, কালাম মৃধা তার স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও বিবাহ গোপন রেখে আমাকে ২য় বিবাহ করে। বর্তমানে তিন বছরের একটি মেয়ে সন্তান সহ বিনা কারণে তালাক দেয়। আমার মত এই গ্রামে আরো কয়েকজন বিবাহিত নারীর সাথে তিনি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। ভুক্তভোগী নুরুন্নাহার জানান, “আমার স্বামী ফটিক হোসেনের প্রথম স্ত্রী জোৎস্নাকে পাচ বছর আগে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করে আবুল কালাম। এরপর আমাকে বিবাহ করে ফটিক। আবুল কালাম আমাকেও কুপ্রস্তাব দেয়। বিষয়টি আমি স্থানীয়দের জানালে তখন ফের এমন করবেনা বলে ক্ষমা চান জানান আবুল কালাম”। আরেক ভুক্তভোগী বিধবা নার্গিস জানান, “দুই বছর আগে আমার বাড়িতে ডুকে আমাকে ধর্ষণ করে আবুল কালাম। এঘটনায় বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা হলে চার মাস জেল খেটে জামিনে বের হয়েছে। কয়েকদিন আগে আবার মজিবরের স্ত্রী লিমাকে নিয়ে পালিয়েছে”। মজিবর রহমান জানান, আমার স্ত্রী ফুঁসলিয়ে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার কে নিয়ে পালিয়েছে আবুল কালাম। এনিয়ে চলতি বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছি।
স্থানীয় বাসিন্দা হাবিবুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির, ফজিলা বেগম মানববন্ধনে বলেন, আবুল কালাম মৃধা একই এলাকার বেশ কয়েকটি সংসার নষ্ট করেছে। অদৃশ্য শক্তির প্রভাব বিস্তার করে একেরপর এক নারীর সংসার ভেঙ্গে বিয়ে করছে। আবার সেই সংসারে সন্তান জন্ম দেওয়ার পর তাদেকেও তালাক দিচ্ছে আবুল কালাম। এছাড়াও কালমেঘা বাজার ও কুপধন বাজার এলাকাতে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয়ে ধরা পরলে জুতা পেটা করে ছেড়ে দেয়া হয়। তার কু নজর থেকে বাঁচতে অনেকে তাদের স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে এলাকা ছেড়ে চলে গেছে। তার প্রভাবের কারণে ভুক্তভোগীর আইনের সহায়তা নিতেও সাহস পাচ্ছে না।
স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য. আব্দুস সোবহান বিষয়টি নিশ্চিত করে আজকের পত্রিকাকে জানান, আবুল কালামের বিরুদ্ধে এলাকায় কেউ কিছু বলতে সাহস পাচ্ছে না। তার কারনে অনেক নারীর সংসার ভেঙ্গে গেছে।
অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত আবুল কালামের স্ত্রী মুক্তা জানান, তার স্বামীর বিরুদ্ধে প্রতি পক্ষের লোকজন মিথ্যা ছড়াচ্ছে। তার স্বামী ভালোভাবে জীবন যাপন করে এটা তারা সয্য করতে না পেরে এমন দুর্নাম ছড়াচ্ছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত কালাম মৃধা মুঠোফোনে বলেন, গত দুই বছর আগে আমার সাথে একটি ঝামেলাকে কেন্দ্র করে এলাকার কিছু লোকজন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান চিকিৎসার জন্য বিদেশে থাকার কারণে তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শাহ আলম হাওলাদার বলেন, মানববন্ধনের বিষয়টি আমাদের জানা নেই। তাছাড়া এখন পর্যন্ত কেউ তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেয়নি। তারপরও খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোর্টের মামলার বিষয় জানতে চাইলে ওসি বলেন এখন পর্যন্ত আদালতের কোন নির্দেশনা পাইনি।
মন্তব্য