রাকিবুল হাসান রাকিব, জবি প্রতিনিধি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী আজ। ২০০৫ সালের ২০ই অক্টোবর জগন্নাথ কলেজ থেকে রূপান্তরিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। নানা আয়োজনের মাধ্যমে প্রতিবছর ২০ অক্টোবর পালিত হয় কবি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। এ বছর ২০ অক্টোবর (শুক্রবার) সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়াতে একদিন আগে অর্থাৎ ১৯ শে অক্টোবর দিবসটি পালনের উদ্যোগ নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন। দিবসটিকে ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস কাজ করে। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে শিক্ষার্থীদের ভাবনা তুলে ধরেছেন জবি প্রতিনিধি রাকিবুল হাসান রাকিব ।
গৌরবের সাথে টিকে থাকুক প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয়
আঠারোদের আবর্তনে শুভ হোক তোমার আঠারো থেকে উনিশতমতে পদার্পণ জবি।ব্যস্ত পুরাণ ঢাকার শান্ত বিদ্যাপীঠ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আয়তনে ছোট হলেও এখানে প্রতিনিয়ত অধিকতর প্রাণসঞ্চার হয়। প্রায় দেড়শ বছরের পুরোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তথা একটা পাঠাগার থেকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে ওঠার নজির ইতিহাসে নেই বললেই চলে। বুড়িগঙ্গা নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা এই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ও সমৃদ্ধ ইতিহাস।এখানকার প্রায় ১৮ হাজার শিক্ষার্থীদের পদচারণায় প্রতিনিয়তই মুখোরিত হয় ক্লাসরুম, গণলাইব্রেরি, কাঁঠালতলা, শহীদ মিনার, শান্তচত্বর, ক্যাফিটেরিয়া ও টিএসসি।অল্পসময়ের মধ্যেই জবি গবেষণা, চাকরি পরিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্যের সঙ্গে অবদান রেখে চলেছে। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে এটাই চাওয়া শুভ হোক তোমাতে অধ্যয়নরত প্রতিটা শিক্ষার্থীর স্বপ্ন যাতে তোমায় চিনে সারা বিশ্ব। এগিয়ে যাক প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয়। বেঁচে থাকুক জগন্নাথের আকাশে ঝলঝল করতে থাকা অপার সম্ভাবনাময়ী প্রতিটা গর্বিত জবিয়ান।
জবি আমার আবেগ, আমার ভালোবাসা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বুড়িগঙ্গার তীরে অবস্থিত পুরান ঢাকার একটি স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ যা ২০০৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর আগে ১০০ বছরে এরও বেশি সময় ধরে জ্ঞানের পরশ বিতরণ করে আসছে জবি। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখেছিলাম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী হবো। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার মাধ্যমে আমার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আমার প্রাণপ্রিয় ক্যাম্পাস সাফল্যের দীর্ঘ ১৭টি বছর পার করে আজ ১৮তে পা দিয়েছে। শুভ জন্মদিন আমার আবেগ আমার ভালোবাসার অপর নাম প্রাণপ্রিয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও যেভাবে দুর্বার গতিতে ছুটে চলেছো তুমি আজ এই শুভদিনে আশা রাখি এই সাফল্যধারা যেন অব্যাহত থাকে সবসময়। প্রায় দুই মাসের মত সময় কাটিয়েছি এই ক্যাম্পাসে। কিন্তু এই অল্প কিছুদিনেই মায়ায় জড়িয়ে গিয়েছি এই ছোট্ট নিবিড় ক্যাম্পাসের সাথে। একজন নবীন শিক্ষার্থী হিসেবে আমার চাওয়া আমি যেন আমার বিশ্ববিদ্যালয় কে আরো সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি এবং দেশ ও মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে পারি।
এগিয়ে চলুক প্রিয় জবি
বুড়িগঙ্গা নদীর অদূরে অবস্থিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপ্রাচীন ইতিহাসে রয়েছে বহু পরিবর্তন ও ঘাত-প্রতিঘাতের সাক্ষ্য। ১৮৫৮ সালে ঢাকা ব্রাহ্ম স্কুল নামে যাত্রা শুরু করে ১৮৮৪ সালে এটি পরিবর্তিত হয় কলেজে। সবশেষে ২০০৫ সালে জাতীয় সংসদে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫’ পাশের মাধ্যমে এটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ নেয়। সেই থেকে সব রকম সংকট ও প্রতিবন্ধকতা স্বীকার করেই শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের একতাবদ্ধ প্রচেষ্টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাচ্ছে দুর্বার গতিতে। জবির প্রগতিশীল ও আধুনিক পাঠ্যক্রম, সহশিক্ষা কার্যক্রম এর বিভিন্ন সংগঠন, সেমিনার সে গতিতে যোগ করেছে নতুন মাত্রা। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা, গবেষণাসহ সকল ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা সফলতার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। জবির ১৮তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে এই প্রার্থনা, “জয় হোক সকল শুভ প্রচেষ্টার,
এগিয়ে চলুক প্রিয় জবি।”
একটি বিশ্বমানের শিক্ষাঙ্গন হিসেবে আবিষ্কার করতে চাই
স্বায়ত্তশাসিত দেশসেরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের ঠিকানা নিশ্চিত করা আমার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল। এখন আমি সেই স্বপ্নের একজন গর্বিত সদস্য। ভাবতেই একরাশ ভালোলাগা মনটাকে প্রফুল্ল করে দেয়। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে আমার ভাবনা-বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শতভাগ শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত হোক। রাজনৈতিক কিংবা দলীয় মতাদর্শ যেন কোনভাবেই আমাদের সংকুচিত করে না দেয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে মুক্তচিন্তার অবাধ বিচরণ ক্ষেত্র। এখানে সুস্থ সংস্কৃতি চর্চার মধ্য দিয়ে মনোজগতের উৎকর্ষ সাধিত হয়। সেই সঙ্গে বন্ধ হোক নিয়োগ বাণিজ্য। প্রসাশনের অভ্যন্তরীণ কোন্দল বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে- সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রেখে জাতীয় স্বার্থে সংকীর্ণতা পরিহার করলে বিশ্ববিদ্যালয় অনেক আগাবে। আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি বিশ্বমানের শিক্ষাঙ্গন হিসেবে আবিষ্কার করতে চাই। গবেষণা-উদ্ভাবন এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখায় জবি যেন তার স্বতন্ত্র অবদান রাখতে পারে। জবির উদর থেকেই জন্ম নিক আগামীর শ্রেষ্ঠ সন্তান- সেই প্রার্থনা। প্রিয় প্রতিষ্ঠানকে খুব ভালো পর্যায়ে দেখতে চাই। শিক্ষা, গবেষণাসহ সব দিক থেকেই সমৃদ্ধ হবে জবি। অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলবে সব কিছুকে পার করে এটাই কামনা।
১৯ পা রাখলো জবি
১৯৬৫ সালে পাঠশালা হিসেবে শুরু হয়ে ২০০৫ সালে কলেজ থেকে নব্য বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ নিয়ে ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে মাথা উঁচু করে সগৌরবে দাঁড়িয়ে থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দেশের শিক্ষা, সাহিত্য,গবেষণা, সংস্কৃতি, খেলাধুলা ইত্যাদি অঙ্গনে যে অবদান রেখে চলেছে তা এক কথায় অনবদ্য। আবাসন সমস্যা,প্রয়োজনের তুলনায় ছোট ক্যাম্পাস, অপর্যাপ্ত বাস ব্যবস্থা, লাইব্রেরি সংকট, দুর্বল প্রশাসন ইত্যাদি প্রতিকূল পরিস্থিতি পাশ কাটিয়ে জবি পৌঁছে যাচ্ছে সফলতার শীর্ষে। বিসিএস,ব্যাংক জব সহ অন্যান্য সকল চাকরি পরীক্ষায় জগন্নাথের শিক্ষার্থীদের রয়েছে এক ঝাঁক পদচারণা। একজন যোগ্য,দক্ষ, আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে এবং একটি সুন্দর,পরিপাটি, শিক্ষাবন্ধব ক্যাম্পাস উপহার দিতে জবি যেন সহয়াক ভূমিকা পালন করে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে এটাই প্রত্যাশা। পরিশেষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কে জানাই জন্মদিনের শুভেচ্ছা।
আমরাও ১৮ জগন্নাথের ও ১৮
শুভ জন্মদিন জবি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮ তম ব্যাচ পদার্পন করেছে সাথে নিয়ে এসেছে ১৮তম জন্ম বার্ষিকী।এই একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যা হাতেখড়ি থেকে বর্তমানে সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ বিশ্ববিদ্যালয় । সেই দিনক্ষণ পেরোতে পেরোতে আজ ১৮তম জন্ম বার্ষিকী পালন করা হচ্ছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়তে ।
হয়তো দেশখ্যাত কোনো সেতার বাদক বা শিল্পী আসছে না সেই দিন তবে আসবে এমন এক শুভ সময় যা আমাদেরকে করবে সত রঙে রঙিন কাগজ ফুলের মত সুন্দর আর স্বচ্ছ। ১৮ তম ব্যাচ যেমন আনন্দ উচ্ছাস নিয়ে আসছে প্রাঙ্গণে ঠিক তার থেকে বেশি উচ্ছাসে আছে সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মদিন উপলক্ষে । এভাবেই সত সত বছরের এমন জন্মদিন কামনা করে এইবার জগন্নাথের প্রাঙ্গণ হাসি খুশিতে ভরে উঠুক এই আঠারোর কামনা ।
মন্তব্য