মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪
 

ইউএনওর মানবিকতা: চূড়ামনি পেলেন সুখের নীড়!

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২৩

---
মুনতাসির তাসরিপ, বাউফল প্রতিনিধিঃরাস্তার পাশে মানবেতর জীবন কাটানো চূড়ামনি ও তার দুই এতিম সন্তান গোপাল (২০) ও বিষ্ণু রানী(১২)। বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বশির গাজী তাদেরকে মুজিব শত বছরের একটি ঘর উপহার দিয়েছেন। চূড়ামনির স্বামী সুবল চন্দ্র মিস্ত্রী মারা যাওয়ার পর স্বজনরা এতিম দুই সন্তানসহ তাদেরকে বাড়ি থেকে বেড় করে দেন। সেই থেকে চূড়ামনি ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে জীবন যুদ্ধে চালিয়ে যান। অভাব তাদের স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার মার করে দিয়েছে।

পটুয়াখালীর বাউফলের ইউএনও মোঃ বশির গাজী উপজেলার বগা ইউনিয়নের মুজিব শতবর্ষের নির্মাণাধিন ঘরের অগ্রগতি দেখতে যাওয়ার পথে বগা বাজার ব্রিজের পশ্চিম দিকে রাস্তার পাশে একটি ঝুপড়ি ঘরের দিকে চোখ পরে তার। গাড়ি থেকে নেমেই কাছে গিয়ে দেখেন এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য। দুই সন্তানকে নিয়ে চূড়ামনি বসে রয়েছেন। শোয়ার জায়গাটুকু নেই তাদের। এখানে তারা গত দুই বছর ধরে আছেন। এর আগে বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার পাশে ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করেছেন তারা। কেবল মেয়ের কথা চিন্তা করে বগা বাজারের কাছে থাকছেন তিনি । ইউএনও মোঃ বশির গাজী তাদের কষ্টের কথা শুনে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। তাৎক্ষনিক তিনি মুজিব শতবর্ষের একটি ঘর উপহার দেয়ার কথা বলেন তাদের। ঘরটির নির্মাণ কাজ আগামী ২-৪ দিনের মধ্যে শেষ হবে। চূড়া মনি তাদের দুই সন্তানকে নিয়ে ওই ঘরে উঠবেন।

চূড়ামনি জানান ,‘ ১০ বছর আগে তার স্বামী সুবল চন্দ্র মিস্ত্রী মারা যাওয়ার পর তার কাপালে চিন্তার ভাজ পরে। দুই সন্তানকে নিয়ে বাড়ি থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর রাস্তার পাশে ঝুপড়ি ঘরে কাটাতে হয়েছে তাকে। কোন রকম খেয়ে না খেয়ে দিন কেটেছে তাদের। দুই সন্তানকে ঝুপড়ি ঘরের মধ্যে রেখে কাজের সন্ধানে যেতেন তিনি। সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতেন। তার ছেলে গোপাল এখন বগা লঞ্চ ঘাট এলাকায় বোতলে পানি ভড়ে বিক্রি করেন। যা পান তা মায়ের হাতে তুলে দেন। এই দূরাবস্থার মধ্যে তার মেয়ে বিষ্ণু রানী স্থানীয় গালর্স স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া লেখা করছেন। মেয়েকে সুশিক্ষিত করতে চান তিনি। কেউ তার মেয়ের পড়া লেখা দায়িত্ব নিয়ে দুঃচিন্তা মুক্ত হতেন তিনি।

ইউএনও মোঃ বশির গাজী বলেন, রবিবার(২২অক্টোবর) বগা ডা. ইয়াকুব শরীফ ডিগ্রী কলেজের কাছে মুজিব শত বর্ষের নির্মাণাধিন ঘর পরিদর্শনে যাওয়ার পথে বগা বাজার ব্রিজের কাছে রাস্তার পাশে একটি ঝুপড়ি ঘর দেখতে পাই। গাড়ি থেকে নেমে কাছে গিয়ে দেখলাম অমানুবিক অবস্থা। চোখে পানি আসারমত অবস্থা।ওই হতদরিদ্র পরিবারকে একটি ঘর দিতে পেরে আমি
দায়বদ্ধতা থেকে মুক্তি পেয়েছি। আমি আনন্দিত।

মন্তব্য

সর্বশেষপঠিত

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon