পাথরঘাটা প্রতিনিধি,
বরগুনার পাথরঘাটায় জমি বিক্রি করে আবার দখলের চেস্টায় মেয়েদের দিয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা ও বিভিন্ন রকম হয়রানি করার অভিযোগ স্থানীয় সাবেক প্রাইমারি শিক্ষক মোঃফারুক মাস্টারের বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,মোঃ ফারুক মাস্টার এর কাছ থেকে মোঃরফিকুল ইসলাম সুজন ২০১৮সালে পাথরঘাটা উপজেলা চরদুয়ানী মৌজা, জে এল নং-২২ এর ৬৩২,৬৩৩,৬৩৪,৬৩৫ দাগের ০.১৬৫০ একর (উত্তরে দাতার জমি-দক্ষিণে খাল-পশ্চিমে দাতার জমি-পূর্বে খাল) চৌহদ্দিসহ আরো বিশেষ সুযোগ সুবিদা দিবে (সামনের খাশ জমি গ্রহীতা ভোগ দখল করতে পারবে এই মর্মে মৌখিক ঘোষনায় জমিটি উচ্চ মূল দিয়ে ক্রয়বিক্রয় হয়। এই জমিতে বরফ মিলসহ অন্যান্য স্থাপনা নির্মান করবে এবং মোঃ ফারুক মাস্টার শিক্ষকতায় অবসরপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে তাকে এই কারখানায় ম্যানেজার হিসাবে চাকরি দিবে বলে উভায় পক্ষ একমত হওয়ার কারনে জমি ক্রয়- বিক্রয সম্পন্ন হয়। পরে ২০১৮সাল থেকে কার্যক্রম শুরু করে ওই বছবের মধ্যে মাস্টারের নিজ দায়িত্বে জমির সকল জায়গায় মাটি ভরাট দিয়ে বরফ মিল স্থাপন করা হয়।সেই থেকে মোঃ ফারুক মাস্টার ম্যানেজার পথে চাকরি করে আসছে। চলতি বছর ফেব্রুয়ারী মাসে শেষ পর্যন্ত চাকরি করে মোঃ রফিকুল ইসলাম এর বরফ মিলে তার চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে রফিকুল কাছ থেকে মৌখিকভাবে দেওয়া খাসজমি দাবি করে করেন। যেখানে রয়েছে রফিকুলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অফিস,বিদ্যুৎ ট্র্যান্সমিটার, ফুলুটের গোডাউন, যা সহজেই সরানো সম্ভব নয়।এভাবে দুই পক্ষের মধ্যে মামলা- হামলা চলতে থাকে এবং ফারুক মাস্টার বরফ মিলের বিভিন্ন সময় ক্ষতিসাধন করে যা রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন এবং আইনের দারস্থ হন। এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায় ফারুক মাস্টার রফিকুল কে বিভিন্ন রকম লাভ দেখিয়ে উচ্চ দামে একটি নিচু ও পরিত্যক্ত জমি বিক্রি করে। স্থানীয় চা দোকানদার মোঃ আবু (৫৫) জানান, বর্তমানে জমির সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাওয়ায় দামও বৃদ্ধি পাচ্ছে যার লোভ মাস্টারে সামলাতে পারছেন না, যার কারণে রফিকুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে একের পর এক হয়রানিমূলক মামলা দিচ্ছেন। চরদুয়ানী বাজারের মাছের আড়ৎদার মোঃ খলিলুর রহমান (৪৮) বলেন,মাস্টারের তিন মেয়ে কে ব্যবহার করে রফিকুল কে ঘায়েল করার চেস্টা করছে,এক সময় মাস্টারের পরিবারের সাথে সু-সম্পর্ক ছিলো ও মাস্টার বরফ মিলে চাকরি করত, বর্তমানে তার মেয়েদের সামনে দিয়ে রফিকুর কে হয়রানি করছে এবং একের পর এক মামলা দিচ্ছে। রফিকের শ্বশুর মোঃ জামাল হোসেন ( ৬০) জানান, মাস্টার এই মিলে চাকরি করে বিভিন্ন রকম সুযোগ- সুবিধা নিয়েছে এবং মেয়েদে দিয়ে নারী নির্যাতন মামলা দিয়ে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে আসছে। চাঁদা না দিলে রফিকুল কে এখানে থাকতে দিবেনা বলে বিভিন্ন সময় হুমকি -দুমকি দেয়। শেষ পর্যন্ত খাসজমির এসিল্যান্ড দিয়ে রফিকের স্থাপনা গুড়িয়ে দিয়েছে।
ফারুক মাস্টার এর সাথে কথা বলে জানাযায়, তিনি জানান, আমি রফিকুল ইসলাম এর কাছে ২০১৮ সালে ১৬.৫ শতাংস জমি বিক্রি করেছি এবং বুঝিয়ে দিয়েছি সে জমিতে তার স্থাপনা রয়েছে, এছাড়াও আমার জমি দখল করে চলাচলের পথ বন্ধ করে দিয়ে আমার রেকর্ডীয় ও দাগের মাথায় খাসজমি দখল করে নিয়েছে। তাই আমি এসিল্যান্ড এনে ভেঙে দিচ্ছি। মামলার বিষয় কথা বলতে চাইলে এড়িয়ে যায়।
কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
মামলার বিষয় মোঃ রফিকুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান,ফারুক মাস্টার আমাকে বাগেরহাট থেকে এনে জমি বিক্রি করে বরফ মিল করতে দেয় এবং আমার মিলে চাকরি করার সুবাদে বিভিন্ন রকম সুযোগ সুবিধা নিয়েছে এবং খাসজমির লাভ দেখিয়ে আমার কাছে উচ্চ দামে বিক্রি করে। এখন আমার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়ে হয়রানি করছে এবং প্রত্যেকটা মামলাই মিথ্যা প্রমানিত হচ্ছে আমি এর বিচার চাই এবং যথাযথ আইনের মাধ্যমে আদালতের দারস্থ হবো।
রফিকুল ইসলাম আরো জানান, ফারুক মাস্টার এর কাছ থেকে জমি কিনে আমি আজ নিঃস্ব হয়ে যাওয়া প্রায়। আমাকে বিভিন্ন রকম লাভ দেখিয়ে মিল -কারখানা করতে দেয় কিন্তু যখন দেখছে জমির দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে তখনই চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে আমার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে। আমার বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত যে মামলা গুলো করছে -০৯/০৭/২৩ মামলা দায়ের করেন, সিআর মামলা নং-৭৮/২৩, মামলা দায়ের করেন ১৮/০৭/২৩ দেয়ানি মামলা নং-৫৬৮/২৩, উক্ত মামলা বর্তমানে বিজ্ঞ আদালতে চলমান,আরো মামলা দিবে বলে হুমকি দিলে রফিকুল ইসলাম পাথরঘাটা থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন যার নং-৮৩৮। শেষ পর্যন্ত ফারুক মাস্টার এর মেয়ে মোসাঃ ফাহমিদা আক্তার, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০(সংশোধিত /২০০৩ এর ৯/৪(খ)/৩০
একটি মামলা দায়ের করেন সেখানে এজারের সংক্ষিপ্ত বিবরনে বলা হয়- ফাহমিদা অভিযোগ করে বলেন আমাকে রফিকুল ইসলাম বিভিন্ন সময় নানা রকম কু-প্রস্তাব দেয়। আমি রাজি না হওয়ায় আমার উপর ক্ষিপ্ত হইয়া ইজ্জত নষ্ট করার জন্য সুযোগ খুঁজিতে থাকে। ৩১/০৭/২০২৩ তারিখে রাত্র অনুমান নয় টার দিকে বসত ঘরের উত্তর পাশে পাক ঘরে তরকারি গরম করতে গেলে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে রফিকুল হঠাৎ করে আমাকে পিছন থেকে ঝাপটাইয়া ধরে। তখন মিরাজ (২৬) দরজায় দাড়াইয়া থাকে ও রফিকুল আমার স্পর্শকাতর স্থানে জোড়ে চাপদেয়, স্পর্শকাতর স্থানে আঙ্গুল দিয়া সুরসরি দেয় এবং আমাকে মাটিতে সোয়াইয়া ইজ্জত নষ্ট করার চেস্টা করে।এই মর্মে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন ফারুক মাস্টার এর মেয়ে । যা পাথরঘাটা থানার এস আই মোঃ হারুন অর রশিদ ২৮/০৯/২৩ তারিখে একটি তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করে,সেখানে বলা হয়,ফাহমিদা আক্তার (বাদী) উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে অত্র মামলা রফিকুল ইসলাম ও মিরাজ (বিবাদী) কে হয়রানি করার জন্য মিথ্যা ঘটনা সাজাইয়া বিবাদীদের বিরুদ্ধে অত্র মামলা দায়ের করিযাছে।বাদী কতৃক আনিত অভিযোগ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন২০০০সনের( সংশোধিত /২০০৩)এর ৯/৪(খ)/৩০ধারার অভিযোগের বিষয় কোনো সাক্ষ্য প্রমান পাওয়া যায় নাই।যাহা চূড়ান্ত রিপোর্ট মিথ্যাবলিয়া প্রাথমিক তদন্তকালে প্রমাণিত হয়।এখানে বাদীর বিরুদ্ধে বিবাদীদের হয়রানি ও ক্ষতি সাধনের নিমিত্তে অত্র মামলা দায়ের করা হয়।
মন্তব্য