শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪
 

প্রেম করে বিয়ে না করায় প্রেমিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারী ২০২৪

---

মাহবুবুর রহমান জিসান,
রায়পুর,লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি,

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মোটা অংকের দেনমোহরে বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় মেয়ের প্রেমিক ও তার পরিচিতজনের নামে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন মানিক মিয়া (ছদ্মনাম) নামীয় এক ব্যাক্তি। মামলা সূত্রে জানা যায়, প্রধান আসামী শুভ ইসলাম রিফাত (১৯) ধর্ষণ করে মানিকের মেয়েকে। এমনকি আসামীর সঙ্গীয় মোঃ হাছান সাগর(১৯) ও মুরাদ হোসেন (২৮) মিলে করে ধর্ষণকার্যে সহোযোগিতা। সূত্র বলছে, ঘটনাটি ঘটে গত ২০২৩ সালের ২৬ অক্টোবর রায়পুর উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের রাস্তার মাথা সংলগ্ন একটি পরিত্যক্ত ঘরে। স্থানীয়ভাবে জানা যায়, প্রধান আসামী রিফাতের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো মেয়েটির। পরে এই সম্পর্কের জেরে মেয়েকে বিয়ে দেয়ার জন্য শুভর পরিবারের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ও দেনমোহর বাবাদ পনেরো লাখ টাকা দাবি করে মেয়ের বাবা। এতে ছেলের মা রাজি না হলে মামলায় যায় মেয়ের পরিবার। দায়েরকৃত সে মামলায় ৬ জনকে অভিযুক্ত করা হলে প্রধান আসামী রিফাতসহ তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনার খবর জানতে স্থানীয় লাল গাজী মিঝি বাড়ি এলাকায় গেলে জানা যায়, আসামী শুভ ইসলাম রিফাত গাড়ির কাজ করতো মেয়ের বাবা মানিক মিয়ার। কাজের দীর্ঘ তিন বছরে সেখানে পাকাপোক্ত হয় মেয়ের সাথে শুভর সম্পর্ক। সেই থেকে শুরু করে মামলার আগপর্যন্ত বেশ কয়েকবার শর্ত সাপেক্ষে বিয়ের বন্দোবস্ত করার কথাও জানায় মেয়ের পরিবার। পরে শর্তের বিয়েতে ছেলের পরিবার রাজি না হলে মামলায় যায় মেয়ের বাবা। গ্রেফতার আসামীদের একজন সাগরের মা হাসিনা বেগম (৪০) বলেন, আমার ছেলে ও রিফাত পরিচিতজন। রিফাত ধর্ষণ করেছে কি না তা জানি না। তাদের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। তবে আমার ছেলে নির্দোষ। সাগরের বাবা জাহাঙ্গীর আলম (৫০) বলেন, ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে। ছেলে নির্দোষ। গ্রেফতার হওয়া মুরাদ হোসেন (২৮) নামের অপর এক আসামির মা ফাতেমা বেগম (৬০) বলেন, আমার ছেলে বিদেশ থেকে এসেছে। সে এসবের কিছুই জানে না। তাকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে।

পুলিশ ও দশম শ্রেণি পড়ুয়া ওই মাদ্রাসা ছাত্রীর বাবা জানান, অভিযুক্ত যুবকরা নেশাগ্রস্ত ও তাস খেলে। তারা গত ২৬শে অক্টোবর ওই ছাত্রীকে মাদ্রাসা থেকে যাওয়ার পথে কথা আছে বলে পাশের একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে কোমল পানীয়ের সঙ্গে নেশাদ্রব্য মিশিয়ে তাকে পান করায়। ওই সময় শুভ ইসলাম রিফাত ছাত্রীটিকে ধর্ষণ করে ও মুরাদ হোসেন সেই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে রাখে। ঘরের বাইরে পাহারায় থাকে মো. হাছান সাগর। পরে গত দু’দিন আগে তারা ভিডিওগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয় এবং পরিবারের সদস্যদেরকে মেসেজ আকারে পাঠায়।

তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বেশ কয়েকটি পেইজ ও আইডি ঘুরে ধর্ষণের শিকার দাবি মেয়ের সাথে আসামী শুভ ইসলাম রিফাতের অন্তরঙ্গ ছবি দেখা গেছে। একেবারে নেতিবাচক ছবি কিংবা ভিডিও কারো চোখে না পড়লেও শুভ ও মেয়েটির পাশাপাশি ছবির হরেক রকম পোস্ট দিয়েছে আলোচনার জন্ম। সেসব পোস্ট থেকেই মেয়ের বাবা এমন স্বীদ্ধান্ত নিতে পারেন দাবি এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দার।

জানা যায়, সোনাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইউসুফ জালাল কিসমত এক শালিসি বৈঠকের জন্য ডাকলে সেখান থেকে ১৫ জানুয়ারি দুপুরে শুভসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ।
এ বিষয়ে মেয়ের বাবা বলেন, আসামীদের এসব দাবি ভিত্তিহীন। আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি।

গ্রেফতার নিয়ে রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াছিন ফারুক মজুমদার বলেন, নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করার পর অভিযুক্ত ৩ যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

মন্তব্য

সর্বশেষপঠিত

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon