মোঃ জিয়াউল ইসলাম :
গভীর বঙ্গোপসাগরে আশানুরূপ মাছ না পাওয়ায় জেলেদের মারামারি কে ডাকাতি রুপ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ট্রলারের জেলেদের (ঠুয়া) বিরুদ্ধে।
একই ট্রলারের স্টাফদের মধ্য নিজেরা মারামারি করে সাত জন গুরুতর আহত। পরবর্তীতে এই মারারমারি কে ডাকাতি করতে বলা হয়েছে এমন অভিযোগ তুলে সত্য ঘটনাকে অন্যদিকে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন সহকারী মাঝি বেলাল ,অভিযোগ মাঝি জয়নালের । এঘটনায় আহত সাতজনকে সোমবার সকালে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এর আগে রোববার (২৮ জানুয়ারি) সন্ধা ৭টার দিকে পাথরঘাটা থেকে ১২০ কিলোমিটার দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে এ ঘটনা ঘটে। মারামারির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সহ-সভাপতি আবুল হোসেন ফরাজী।
জানা যায়, গত ২৬ জানুয়ারি বিকেলে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্যঘাট থেকে পাথরঘাটার আলম মোল্লার মালিকানাধীন এফবি শাহ্ মোহসেন আউলিয়া- ৩ ট্রলারটি ১৭ মাঝিমাল্লা নিয়ে সাগরে মাছ শিকারে যায়।
এর মধ্যে ট্রলারের মাঝি জয়নালের নেতৃত্বে ৯ জন ও সহযোগী মাঝি বেলালের নেতৃত্বে ঠুয়া চুক্তি সাপেক্ষ্যে ৬ জন জেলে সাগরে যায়।
সহযোগি মাঝি বেলাল জানান, আশানুরূপ মাছ না পাওয়ায় জয়নাল মাঝি ট্রলারে থাকা সবাইকে ডাকাতি করার কথা বলে। এতে ট্রলারে থাকা অন্যরা প্রস্তাবে রাজি নাহলে তাদের মধ্যে বাকবিতান্ডা হয় এবং মাঝি ক্ষিপ্ত হয়ে ট্রলার চালিয়ে পাথরঘাটার দিকে যায়। বিষখালী নদী সংলগ্ন নিশান বাড়িয়া নামক স্থানে পৌছালে মাঝি ট্রলার মালিক আলম মোল্লাকে ডাকাতির করতে রাজি না হওয়ায় কথা জানালে আলম মোল্লা ১০/১৫ জনসহ আরেকটি ট্রলার নিয়ে আমাদের ট্রলারে এসে জেলেদের মারধর করে।
অভিযোগ অস্বীকার করে জয়নাল মাঝি গনমাধ্যম কে বলেন ট্রলারে জেলে ঘাটতি থাকায় বেলালের নেতৃত্বে একট্রিপে প্রতি জেলে চার হাজার টাকার চুক্তিতে (ঠুয়া) ৬ জেলে সহ মোট ১৭ জেলে নিয়ে সাগরে যাই। যাওয়ার পর থেকেই ঐ ছয়জন অস্বাভাবিক আচরণ করতে ছিল। রবিবার সাগরে ফালানো জাল উঠানোর সময় জাল ছিড়ে যায়। ঐ জাল জেলেদের টানতে বললে ঐ ছয় জেলে জাল টানতে অপারগতা প্রকাশ করে। এ নিয়ে ঝগড়া ও হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে বেলাল আমার গলায় দাও ধরে মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে ঘাটের দিকে ট্রলার চালাতে বলে। পরে রবিবার বিকেলে নেটওয়ার্কের মধ্যে এসে মালিককে জানালে তার আরেক ট্রলার কাছাকাছি থাকায় তারা আমাদের সহযোগিতা করে।
ট্রলার মালিক আলম মোল্লা বলেন, জাল টানা নিয়ে উভয়ের মধ্যে মারামারি হয়েছে। তাদের সমাধান করে দিয়ে উভয়দের রেফ কাগজে লিখিত রেখে মিলিয়ে দিয়েছি। পরে কারো পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে আমার ট্রলারের মুল জেলেদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সহ-সভাপতি আবুল হোসেন ফরাজী জানান, সাগরে জাল টানা নিয়ে জেলেদের মধ্যে ঝগড়া ও মারামারি হয়েছে। রবিবার রাতে উভয়ের বক্তব্য শুনে মিলমিশ করে দেয়া হয়েছে। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে কতেক জেলে ডাকাতির প্রস্তাবের নাটক সাজাচ্ছে বলে জানান আবুল হোসেন ফরাজী।
পাথরঘাটা থানা তদন্ত ওসি সাইফুজ্জামান বলেন, বঙ্গোপসাগরে জেলেদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা শুনেছি। তদন্ত চলছে, তবে এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত দেয়নি।
মন্তব্য