মোঃ মিনহাজ আলম
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
পেয়ারার লোভ দেখিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ে প্রথম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় এক কিশোরকে আসামী করে থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী পরিবার। পরবর্তিতে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাড়ির পাশের রাস্তা বাঁশ দিয়ে বন্ধ করে দেয়ায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃস্টি হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের পাহাড়ভাঙ্গা উত্তর কুরালি পাড়া গ্রামে। অভিযুক্ত ওমর ফারুক (১৭) একই এলাকার হায়দার আলীর ছেলে। সে এবার স্থানীয় এক মাধ্যমিক স্কুল থেকে এসএসসি পরিক্ষা দিচ্ছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, প্রতিদিনের মত নিজ বাড়িতেই খেলা করছিলো সাত বছরের শিশুটি। হঠাৎ গত মাসের ১৬ জানুয়ারি বিকেলে প্রতিবেশী ওমর ফারুক পেয়ারার লোভ দেখিয়ে নিজ বাসায় ডেকে নেয় শিশুটিকে। পরে সবার অগচোরে ধর্ষণ চেষ্টা করেন কিশোর ওমর ফারুক। বিষয়টি জানাজানি হলে ঘটনার দুদিন পর সদর থানায় বাদি হয়ে মামলা করেন শিশুটির বাবা দুলাল। মামলার পরেই পুলিশ গ্রেফতার করে অভিযুক্ত ফারুককে। পরবর্তিতে চারদিন পর জামিনে মুক্ত হয় ফারুক। এরপর আসামি পক্ষ বাদির বাড়ির পাশের একটি সড়ক বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবারটি।
অভিযুক্ত পরিবারের দাবি মামলার সাথে সড়ক বন্ধের কোন সম্পর্ক নেই। জমি ও অর্থের লোভে মিথ্যা মামলা করেছে। নিজ জমিতেই বাঁশের বেড়া দেয়া হয়েছে বলে দাবি তাদের।
ওমর ফারুকের বাবা হায়দার আলী বলেন, মেয়ের পরিবারের লোকজন আমার কাছে দুই লাখ টাকা ও দুই শতক জমি চাচ্ছে। যদি আমি টাকা আর জমি দেয় তাহলে তারা আপোষ করবে না হলে করবে না। আমার পক্ষে তো টাকা, জমি দেওয়া সম্ভব না। আমি গরিব, দিনমজুরী দিয়ে খায়।
তবে চলাচলে কেউ বাধা দিচ্ছে না জানিয়ে ধর্ষনের চেস্টা মামলার বিষয়টি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিচার চাইলেন শিশুটির বাবা। তিনি বলেন, আমি আসামির কঠোর শাস্তি চাই। যাতে আর কোন শিশুর সাথে এমন আচরণ সে না করে।
বৃস্প্রতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ওই একালায় গিয়ে দেখা যায়, বাদীর বাড়ির দুইটি রাস্তার মধ্যে পশ্চিম পাশে যাতায়াতের রাস্তাটি বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেয় জমির মালিক। এতে যাতায়াতের অসুবিধা হলেও বিকল্প পথ দিয়ে তারা চলাচল করছেন। তবে ভুক্তভোগির বাড়ির মুল ফোটক দিয়েই যাতায়াতের ব্যবস্থা রয়েছে। নির্বিঘ্নে চলাচল করছেন তারা।
স্থানীয়রা বলছেন, এলাকার দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া এসএসসি পরিক্ষার্থী ভাল এক কিশোরের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ কোন ভাবেই কাম্য নয়। এতো বড় একটা ঘটনা আমরা এলাকাবাসীরা কেউ জানলাম না। কবে এমন ঘটনা ঘটলো। মামলার পর জানাতে পারলাম যে শিশুটিকে ধর্ষনের চেস্টা করা হয়েছে। ঘটনাটির সুস্ঠু তদন্তের দাবি করছি আমরা।
এব্যাপারে চিলারং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়রাম্যান ফজলুল হক বলেন, ধর্ষণের ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা। মেয়ের পরিবার আমাকে বিষয়টি অবগত করেনি। মামলা হওয়ার পর জানাতে পারি আমার ইউনিয়নে এক শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। তবে মামলার সাথে রাস্তা বন্ধের কোন সম্পর্ক নেই। রাস্তাটি ব্যাক্তি মালিকের।
এবিষয়ে সদর থানার তদন্ত কর্মকর্তা মো: জিয়ারুল ইসলাম বলেন, চিলারং ইউনিয়নের এক শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ পেয়েছি। সার্বিক বিষয়ে তদন্ত চলমান। দ্রুতই প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
মন্তব্য