মোঃ জিয়াউল ইসলাম
বরগুনার পাথরঘাটায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রাকাশ নিউজ করায় পৃথক মামলায় ৫ সাংবাদিক সহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আল মামুন ও মোঃ সহিদুর রহমান মেম্বর নামে দুই ব্যক্তির কতৃক পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি নিয়ে আল-মানুনের চাচাতো ভাই লিটন হাওলাদার ও সহিদুর রহমান নিজে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। রবিবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাথরঘাটা থানার ওসি তদন্ত সাইফুজ্জামান।
মামলার আসামিরা হলেন, সংবাদ সম্মেলনকারী ভুক্তভোগী আসমা আক্তার, চরদুয়ানী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মজিবর রহমান, আজকের পত্রিকার পাথরঘাটা উপজেলা প্রতিনিধি ও স্থানীয় অনলাইন পোর্টাল পাথরঘাটা নিউজের সম্পাদক তারিকুল ইসলাম ওরফে কাজী রাকিব, দৈনিক কালবেলার পাথরঘাটা প্রতিনিধি আল আমিন ফোরকান, মোহনা টেলিভিশনের পাথরঘাটা প্রতিনিধি সুমন মোল্লা ও অলি উল্লাহ নামে এক যুবক ও পাথরঘাটা উপজেলা সদর ইউনিয়ন ৭নং ওয়ার্ড হাড়িটানার বর্তমান ইউপি সদস্য মোঃ সহিদুর রহমান সাইবার ট্রাইবুনালে মামলা করেন তার মামলায় মোঃ জিয়াউল ইসলাম পিতা মোঃ আর্শ্বেদ আলি, দৈনিক আলোকিত প্রতিদিন পাথরঘাটা প্রতিনিধি ও স্থানীয় অনলাইন পেজ দেশ দর্পণনের এ্যাডমিন কে প্রধান আসামি করে মোট পাঁচ এর নামে মামলা করেন।অন্য অন্যদের মধ্যে রয়েছেন বাদীর ভাইয়ের ছেলে মোঃ হানিফ(৪০) আঃ জব্বার পিতা- , আর টিভি এর পাথরঘাটা উপজেলা প্রতিনিধি মোঃ তাওহীদুল ইসলাম শুভ (২২) পিতা- বাদল মুন্সি, মোঃ সুজন(৩০)পিতা-সুলতান খান, ও ফাহিমা(২৪) স্বামী -মোঃ সুজন।
জানা যায়, আল মামুন নামে এক প্রবাসী ভুক্তভোগী আসমার স্বামী মনিরকে সৌদি আরব নিয়ে যায়। এরপর থেকে আসমার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ হয়। পরে মামুন দেশে এসে আসমাকে বিভিন্ন অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দেয়। আসমা এ
প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তার স্বামী মনিরকে সৌদি আরবে বসে মামুনের লোকজন জিম্মি করে নির্যাতন করে আসমাকে তালাক দিতে চাপ প্রয়োগ করে। পরে মামুন দেশে এসে সৌদী আরবে জিম্মি রাখা মনিরকে হত্যা করার ভয় দেখিয়ে আসমাকে এক মাস আটকে রেখে ধর্ষণ করে।
এদিক পাথরঘাটা উপজেলার সদর ইউনিয়ন হাড়িটানা ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ সহিদুর রহমানের ভাইয়ের ছেলে মোঃ হানিফ মিয়া এর সাথে দীর্ঘদিন ধরে জমি জমার সংক্রান্ত ঝামেলা চলে আসছিল তার ধারাবাহিকতায় হাদিস মিয়ার সূর্যমুখী ক্ষেতের চারা গাছ ইউপি সদস্য মামার শহিদুর রহমানের গরুতে খাওয়া নিয়ে চাচা ভাতিজার ধমকাধমকি চরম পর্যায় পৌঁছায়, এমন পর্যায়ে ভাইয়ের ছেলে মোঃ হানিফ মিয়া সাংবাদিকদের শরণাপন্ন হলে ঘটনাস্থলে দুজন সাংবাদিক উপস্থিত হয়ে দুই পক্ষের কথা শুনে এমন ভিডিও ধারণ করে দেশ দর্পণ নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করায় ইউপি শহিদুর রহমান সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন।
পরবর্তীতে আসমাকে তালাক দিতে মনির দেশে পাঠায় মামুন। মনির তার স্ত্রী আসমাকে তালাক না দেয়ায় বিভিন্ন জেলায় মনির ও আসমার বিরুদ্ধে ১৩ টি মামলা দায়ের করায় আল মামুন। এর একটি মামলায় গত ফেব্রুয়ারি মাসে গ্রেফতার হয় মনির। এতে অতিষ্ঠ হয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাথরঘাটা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী আসমা। এই সংবাদ সম্মেলনের জের ধরে সাংবাদিক সহ ছয় জনের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করান আল মামুন। সে সময় আরও বেশ কয়েকজন সাংবাদিককেও মামলার হুমকি দেয়।
এদিকে পাথরঘাটার ৫ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক জাফর ইকবাল ও পাথরঘাটা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি জয় বিশ্বাস ও আরিফ তাওহীদ। তারা অতিশীঘ্রই এ মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান
পাথরঘাটা প্রেসক্লাবে সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, এক ভুক্তভোগীরা প্রেসক্লাবে এসে উপস্থিত হয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন ও চাচা ভাতিজার দুই পক্ষের বক্তব্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশ সাংবাদিকরা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করবে। যদি সাংবাদিকরা ভুক্তভোগীদের অভিযোগ প্রকাশ করে মামলার শিকার হয় তাহলে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা কোথায়? অতি শীঘ্রই সাইবার ট্রাইবুনাল আইন বাতিলসহ এ মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
পাথরঘাটা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুজ্জামান জানান, চলতি মাসের চার তারিখে বরিশাল সাইবার ট্রাইবুনালে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা দুইটি তদন্তের জন্য আদালত কর্তৃক পাথরঘাটা থানায় প্রেরণ করা হয়েছে।
মন্তব্য