মোঃ মিনহাজ আলম,
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
ঠাকুরগাঁও আওয়ামী লীগ মাত্র কয়েকজনের হাতে জিম্মি। এখন আমরা মিল-চাতালের মালিক হয়েছি। ভারতেও সম্পত্তি কিনেছি। এতো টাকা কথায় থেকে আসছে? সাধারণ মানুষের টাকা, সরকারের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার টাকা নেতারা লুটপাট করছে বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক দপ্তর সম্পাদক, এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য ও সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী কামরুল হাসান খোকন।
শুক্রবার (১৭ মে) বিকেলে সদর উপজেলা রায়পুর ইউনিয়নের ভাউলারহাট এলাকায় এক নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি এসব মন্তব্য করেন।
তার এমন বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।
ভিডিওর বক্তব্যে তিনি বলেন, পনের বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুষ্ঠু নির্বাচন চাইলেও স্থানীয় নেতৃত্বের সীমাহীন জনগণের প্রতি অবহেলা, স্বজন-প্রীতি এবং নানাবিদ কার্যকলাপের কারণে মানুষ ভোটকেন্দ্রে আসছে না। এই ভোট নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বারের ভোটে দেখেছি ইউপি সদস্যটি অল্প ভোটে জিতেছে, বাড়িতে গিয়ে শুনছে সে হারে গেছে। চেয়ারম্যানের ক্ষেত্রেও এমন ঘটনা ঘটেছে। আমি সব জানি। ফলাফলে দেখা যাচ্ছে চেয়ারম্যান জিতছে আর ইউএনও অফিসে তাকে হারায় দিয়ে অন্যজনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা সেবার জন্য চেয়ারে বসছি না। অর্থ উপার্জনের জন্য বসছি।
খোকন আরো বলেন, বিভিন্ন জায়গায় যে নিয়োগ হয় তা ১৩-১৫ লাখ টাকা দিয়ে। ঘুষ দিতে পারে না বলেই উচ্চশিক্ষিত ছেলেটা বাড়িতে বসে আছে। টাকা নাই, চাকুরী নাই। যদি ওই দালালদের ১৫ লাখ টাকা দিতে পারতো তাহলে তার চাকুরী হতো।
আজ ঠাকুরগাঁও জেলায় কর্মস্থানের পরিবেশ তৈরি করতে পারিনি। প্রধানমন্ত্রী যে সুযোগ-সুবিধা দেয় দলীয় নেতাকর্মীদের সীমাহীন দুর্নীতির কারণে সাধারণ মানুষ পাচ্ছে না। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সৌন্দর্য হলো সমস্ত রাজনৈতিক দল থাকবে। ঠাকুরগাঁও জেলায় আওয়ামী লীগ যারা চালাচ্ছে তারা একটা ঘর তৈরি করেছে। তারাই ঘুরেফিরে নেতা, এমপি, চেয়ারম্যান ও সভাপতি হন।
ভোটারদের উদ্দেশ্যে ছাত্রলীগের এই সাবেক নেতা বলেন, জনপ্রতিনিধিরা চেয়ারের জন্য ৩ কোটি টাকা খরচ করছে। কিন্তু এই টাকা তারা জনগণের সেবার জন্য করছে না। একবার চেয়ারে বসতে পারলে ৫০ কোটি টাকার মালিক হয়ে যাচ্ছে।
এর আগে গেল মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকেলে সদর উপজেলা রুহিয়ায় এক নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি বলেন, প্রিজাইডিং অফিসারদের টিকচিহ্ন দিয়ে দেওয়া হয়। কোন সেন্টারে, কোন প্রিজাইডিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবে। ওই প্রিজাইডিং অফিসার পকেটে করে একটা বই নিয়ে যায় আর ফজরের সময় তার মনোনীত প্রার্থীর বাক্সে ঢুকিয়ে দেয়৷ তার এমন বক্তব্যের পর দল ও দলের বাইরে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়।
এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তাদের মধ্যে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান অ্যাড. অরুনাংশু দত্ত টিটো (আনারস প্রতীক) সাধারণ সম্পাদক মোশারুল ইসলাম সরকার (মোটরসাইকেল প্রতীক) সহসভাপতি রওশনুল হক তুষার (ঘোড়া প্রতীক) ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কামরুল হাসান খোকন (কাপ-পিরিচ প্রতীক) এছাড়াও চার চেয়ারম্যান সহ পাচজন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। ১টি পৌরসভা ও ২২টি ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৭ হাজার ১৭৫ জন। এরমধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪৪ হাজার ৯০৩, নারী ২ লাখ ৪২ হাজার ২৬৮ ও হিজরা ৪ জন। আর ১৮৫ টা ভোট কেন্দ্র রয়েছে।
মন্তব্য