বিশেষ প্রতিবেদক,
রাজধানীর বাড্ডা থানাধীন পূর্ব বাড্ডার টেকপাড়া এলাকার একটি বাড়িতে হাতবোমা তৈরির সময় হাতেনাতে ০৩ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৩; ৬৫ টি হাতবোমা এবং হাতবোমা তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম জব্দ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন ১। মোঃ ফাহিম রহমান আব্দুল্লাহ (২২),২। মোঃ লিমন (২০), ৩। মোঃ আকুল মিয়া (২১)।
বৃহস্পতিবার সকালে র্যাব-৩ এর সদর দপ্তর থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান সহকারী পুলিশ সুপার স্টাফ অফিসার (মিডিয়া) মোঃ শামীম হোসেন।
তিনি জানান র্যাব-৩ এর একটি চৌকষ আভিযানিক দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে (২২ মে) রাত ৯ ঘটিকায় রাজধানীর পূর্ব বাড্ডার টেকপাড়া এলাকায় একটি বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে হাতবোমা তৈরির সময় হাতেনাতে ৩ জন কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকালে তাদের হেফাজত হতে ৬৫ টি প্রস্তুতকৃত হাতবোমা এবং হাতবোমা তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ও অনুসন্ধানে জানা যায় যে, ০৮-১০ দিন পূর্বে গাজীপুরে অবস্থিত কতিপয় দুষ্কৃতিকারী দস্যুতা বা ডাকাতির মত ভয়ংকর অপরাধ সংগঠিত করার জন্য অর্থের বিনিময়ে হাতবোমা সরবরাহকারী নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ডের বাসিন্দা জনৈক মাসুম ও সজিবের কাছে বিপুল পরিমাণ হাতবোমা অর্ডার করে। চক্রটির অন্যতম হোতা মাসুম ও সজিব বোমা বানানোর প্রয়োজনীয় জর্দার কৌটায় কাচের গুড়া, স্পিøন্টার, সাইকেলের বল, বারুদ, গানপাউডার, তারকাটা ও অন্যান্য কেমিক্যাল ও সরঞ্জামাদি জোগাড় করে গ্রেফতারকৃত ফাহিম, লিমন, ও আকুল মিয়াকে টাকার বিনিময়ে হাতবোমা তৈরীর জন্য ভাড়া করে। তারা বোমা তৈরীর জন্য বাড্ডা এলাকার একটি মেস বাড়ির কর্ণারের একটি রুম ভাড়া করে।
গত (২০ মে) তারা বোমা বানানোর তারিখ নির্ধারণ করে এবং সেই অনুযায়ী ঢাকার তেজগাঁওয়ে জড়ো হয়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে দরকষাকষি নিয়ে নিজেদের মধ্যে মারামারি করে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরবর্তীতে সজিব গ্রেফতারকৃত ফাহিম, লিমন এবং আকুল’কে ২৬,০০০/- টাকার বিনিময়ে হাতবোমা বানানোর জন্য ভাড়া করে। এপ্রেক্ষিতে তারা (২২ মে) সন্ধ্যার পর বাড্ডা এলাকায় লোক সমাগম থাকাকালীন কাজ শেষ করার প্ল্যান করে এবং বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে উক্ত এলাকায় জড়ো হয় এবং সন্ধ্যার পর থেকে বোমা বানানোর কাজ শুরু করে। তাদের প্রায় ১০০ টি বোমা বানানোর টার্গেট ছিল। বোমা বানানোর প্রায় শেষ পর্যায়ে র্যাব-৩ এর আভিযানিক দল বাড়িটির চারদিক ঘিরে ফেলে এবং তিনজনকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, তারা মোট পাঁচজন এই বোমা বানানোর কাজে বিশেষজ্ঞ। একেক জন বোমা বানানোর প্রক্রিয়ার একেকটি কাজে অভিজ্ঞ। তারা জানায় যে, সজিব নামের ওই ব্যক্তি তাদেরকে টাকার বিনিময়ে বোমা বানানোর কাজে রাজি করায় এবং উক্ত স্থানে তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে শতভাগ আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। তারা মূলত বোমা তৈরীর কারিগর হিসেবে কাজ করতেন।
উদ্ধারকৃত বোমা এবং বোমা তৈরির সরঞ্জামাদিসমূহ ধ্বংস শেষে গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানানো হয়।
মন্তব্য