শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
 

নারীর পেটে লাথি দিয়ে সন্তান নষ্ট নিজেকে, রক্ষায় মিথ্যা মামলায় হয়রানী

মাহবুবুর রহমান জিসান
প্রকাশ: ২৫ মে ২০২৪

---

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ

ঠাকুরগাঁওয়ে রিপা আক্তার (৩০) নামে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর পেটে লাথি দিয়ে তিন মাসের সন্তান নষ্টের অভিযোগ উঠেছে মো: মাহাবুব (৫৫) গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে। শুধু নির্যাতনেই নয়, নিজেদের বাঁচাতে উল্টো মিথ্যা মামালা দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে অন্তঃসত্ত্বা নারী ও তার পরিবারের সদস্যদের।

নির্যাতনের শিকার অন্তঃসত্ত্বা নারী ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার পৌর এলাকার ইসলামনগরের বাসিন্দা বিপ্লব খানের স্ত্রী। আর অভিযুক্ত মো: মাহাবুব গ্যাং একই এলাকার বাসিন্দা।

এ ঘটনায় অন্তঃসত্ত্বা নারী রিপার পিতা মো: আব্দুর রহিম গত সোমবার (৬ মে) ঠাকুরগাঁও সদর থানায় ১৩ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার এজাহারে জানা গেছে, মো: মাহাবুব গ্যাং বহুদিন আগ থেকেই আব্দুর রহিম (৬০) এর বসতবাড়ির জমি জবর-দখল করার চেস্টা করে আসছেন।

বৃহস্পতিবার (২ মে) সকালে আব্দুর রহিম তার জমিতে পাকা ঘর নির্মানের কাজ করছিলেন। দুপুরে তার অনুপস্থিতে মাহাবুব গ্যাংয়ের লোকজন নির্মিত ঘর ও বাহিরের টাটি বেড়া ভাঙচুর করেন। এতে প্রায় ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয় আব্দুর রহিমের।

এসময় অন্তঃসত্ত্বা নারী রিপা আক্তার, রিক্তা আক্তার ও বিলকিস আক্তার তাদের ভাংচুরের প্রতিবাদ জানালে মাহাবুব এর হুকুমে ১৩ জনের একটি দল সংঘবন্ধ হয়ে লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্রে তাদের উপড় ঝাপিয়ে পড়ে। শুরু করেন এলোপাতাড়ি মারধর ও ভাংচুর । এক পর্যায়ে মো: মাসুদ (২২) ও আব্দুস সালাম (২৩) অন্তঃসত্ত্বা নারী রিপার তলপেটে জোরে লাথি মারে। ফলে তার গর্ভপাত ঘটে। আর খয়রুল (৩০) রিপা আক্তারের গলা চেপে ধরে হত্যার চেস্টা করলে রিক্তা ও বিলকিস অন্তঃসত্ত্বা রিপাকে রক্ষা করার জন্য এগিয়ে আসলে সুজন (২৫), শাহাবুদ্দীন (২৩), রত্না বেগম (৪৫), নাজমুল (৫০), হাসু (৩৫), সালমা (৪০), রেজিনা (৫০), সুফিয়া (৫০) ও সাহেরা বেগম (৪০) তাদের দুইজনকেই মারধর করে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করেন।

এসময় রত্না বেগম রিপা আক্তারের গলা থেকে স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয় ৷ এবং পড়নের কাপড় টানা হেচড়া করে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন৷

মাহাবুব গ্যাংয়ের মারধরের ফলে তাদেরকে গুরুতর অবস্থায় স্থানীয়দের সহযোগিতায় বিপ্লব খান ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের ভর্তির পরামর্শ দেন।

ভুক্তভোগী আব্দুর রহিম জানান, নিজের জমিতে বাড়ি নির্মাণ করতে গেলে হঠাৎ তারা একজোট হয়ে হামলা চালায়। যার ভিডিও ফুটেজ ও ছবি রয়েছে যা তাতে দৃশ্যমান। অথচ তারা কৌশলে গ্রাম্য চিকিৎসকের কাছে শরীর কেটে মিথ্যা একটি মামলা করে। এ বিষয়টি তাদের তদন্ত কর্মকতা সদর থানার এএস আই হিরনময় চন্দ্র অবগত রয়েছেন। মাহবুব তার মামলায় যে ঘটনাস্থল উল্লেখ করেছে সেখানে আসামি ১ নং আকাশ ৩নং বিপ্লব ও ৭নং মকছেদুল উপস্থিত না থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ আনা হয়েছে।

আর বাকি আসামীরা বাসায় উপস্থিত থাকলেও মারপিটের সাথে সম্পৃক্ত ছিল না। উল্টো মাহবুব গংরাই মারপিট করে। যার প্রমান হিসেবে ভিডিওতে দেখা গেছে। তাই ভালভাবে তদন্ত হলে তা বেড়িয়ে আসবে। পরে উপায় না পেয়ে আমি বাদি হয়ে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করি।

আর অভিযোগ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত মো: মাহাবুব এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এবিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবি.এম ফিরোজ ওয়াহিদ বলেন, এ বিষয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। মামলাও হয়েছে। তদন্ত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

মন্তব্য

পঠিতসর্বশেষ

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon