মোঃ মিনহাজ আলম,
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ
জ্বীনের ‘সোনার হাড়ি’ পেয়ে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণে যদি সন্ধান মিলে মাটি খুঁড়লেই পাওয়া যাচ্ছে সোনা। তাই গভীর রাত পর্যন্ত ইট ভাটার মাটি খুঁড়তে নেমে পড়েন ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার শত শত মানুষ! সেখানে পরিস্থিতি এতটাও জটিল হয়ে পড়ে যে, স্থানীয় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করতে বাধ্য হয়। এমনকি সরিয়ে নেয়া হচ্ছে ইট ভাটার মাটির স্তূপ।
ইটভাটার মাটির স্তূপকে স্থানীয়রা বলছেন, ‘স্বর্ণের পাহাড়’। নানা বয়সের হাজারো মানুষ যখন রাত-দিন এক করে সেখানে স্বর্ণের লোভে মাটি খুঁড়ে যখন আলোড়ন ফেলে দিয়েছে ঠিক তখনেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪৪ ধারা জারির ঘোষণা আসে।
শনিবার (২৫) রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার কাতিহার আরবিবি ইট ভাটার চারপাশে ১৪৪ ধারা জারি করে একটি প্রজ্ঞাপন দেন প্রশাসন। এরপর পুরো এলাকা লাল কাপড়ের চিহ্ন দিয়ে ঘিরে দেয়া হয়।
প্রজ্ঞাপনে প্রশাসন জানায়, মো: রুহুল আমিনের মালিকানাধীন আরবিবি ইট ভাটায় মাটির স্তূপ খুঁড়ে সোনা পাওয়া যাচ্ছে- এমন খবরে স্থানীয় লোকজন বেশ কয়েক দিন যাবৎ খুন্তি, কোদাল, বাশিলা দিয়ে মাটি খোঁড়াখুঁড়ি করে প্রতিদিন সোনার সন্ধান করছেন। এতে আগ্রাসী লোকজন স্বর্ণ পাওয়ার আশায় ঝগড়া-বিবাদ ও দ্বন্দ্বে লিপ্ত হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে যেকোনও সময় ঘটনাস্থলে মারামারি, খুন, জখমসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের জুডিশিয়াল মুন্সীখানা শাখা থেকে ওই স্থানে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: রকিবুল হাসান ইট ভাটা এলাকা ও আশপাশে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৪৪ ধারা জারি করেন।
১৪৪ ধারা জারির পর স্বর্ণের সন্ধানে নামা জনতা তাড়াহুড়ো করে এলাকা ছাড়েন। মুহূর্তেই পুলিশ পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়। বর্তমানে জনশূন্য ইটভাটার আশপাশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নতুন করে যাতে আগের মতো পরিস্থিতি তৈরি না হয় সেজন্য ইটভাটার মাটির স্তূপ সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, গেল এপ্রিলে স্থানীয় এক ব্যক্তি ফেসবুকে লিখেন, ‘আরবিবি নামে একটি ইটভাটায় ইট প্রস্তুতের জন্য সংরক্ষিত মাটি খুঁড়লেই মিলছে স্বর্ণ।’
এমন খবরে কোদাল, খুন্তি ও বশিলা নিয়ে মাটির খোড়ার প্রতিযোগিতায় নামে স্থানীয়রাসহ উৎসুক জনতা।
এ বিষয়ে রাণীশংকৈল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুল হাসান জানান, মাসখানেক ধরে মানুষ সেখানে উপস্থিত হয়ে মাটি খুঁড়ছিল। যেহেতু সেখানে মাটি খোড়ার কোদাল, খন্তি সরঞ্জামাদি নিয়ে দলবদ্ধ হচ্ছে। সে কারণে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ইট ভাটার আশপাশ এলাকা ১৪৪ ধারা জারি থাকবে।
মন্তব্য