মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪
 

লালপুরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২৪

---
এ জেড সুজন মাহমুদ, লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি:
নাটোরের লালপুরে উধনপাড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও নিয়োগ বানিজ্যের করে অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (২১অক্টোবর ২০২৪) সকাল ১১টায় উপজেলার উধনপাড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক অভিভাবক সদস্য সহ এলাকাবাসীরা মানব বন্ধন করেছেন। এঘটনায় প্রধান উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন তারা।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, উধনপাড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেলাল হোসেন ২০০৫ সালে নিয়োগ প্রাপ্তির পর থেকে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি তার পছন্দের মানুষদের নিয়ে গঠণ করে অত্র প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে প্রায় ৪৬ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতেও তিনি ক্ষান্ত হয়নি। সে ছাত্রছাত্রীদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ করার অভিপ্রায়ে ছাত্রছাত্রীদের উপবৃত্তি প্রাপ্তির বিকাশ একাউন্টের পিন নাম্বার নিজের দখলে রেখে নিজেই তার ইচ্ছা মত টাকা ভাগবাটোয়ারা করে দেন, যা ছাত্রছাত্রীরা জানেই না তার উপবৃত্তির বিকাশ পিন নাম্বার কত। প্রধান শিক্ষক এমন দুর্নীতি করে নিজ গ্রাম রাজশাহীর বাঘা উপজেলার তুলসীপুর গ্রামে বানিয়েছেন ডুপ্লেক্স বিলাশ বহুল বাড়ি। চলেন আরাম আয়েশি বিলাসিতা এক জীবনে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে রাজনৈতিক নেতা হওয়ার সুবাদে বিগত  সরকারের আমলে পার্শ্ববর্তী বাঘা-চারঘাট আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহারিয়ার আলমের ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় কাউকে তোয়াক্কা না করে ইচ্ছা স্বাধীন ভাবে চলতেন তিনি। এমনকি স্কুল শিক্ষকদের টিউশনের ফিও কাউকে দিতেন না। সব সময় শিক্ষক ও কর্মচারীদের রাখতেন চাপের মুখে যখন যা খুশি লিখে সই করে নেন রেজুলেশন বহি ও হিসাব খাতায়। প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে আজও এক শিক্ষকের বেতন হয়নি বলে জানা যায়। এক শিক্ষক ও কর্মচারীকে বেতন করে দেওয়ার কথা বলে অগ্রিম ঘুষ বানিজ্য করার অভিপ্রায়ে ব্যাংকের ব্লাংক চেক স্বাক্ষর করে রেখে তাদের জিম্মি করে খুশিমত হয়রানি করে আসছেন প্রধান শিক্ষক। এঘটনায় উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আরও একটি পৃথক অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী। এ বিষয়ে এলাকায় ব্যাপক বিতর্ক ও চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে।

বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান তার উপবৃত্তির বিকাশ হিসাব নম্বরের পিন নম্বর জানে না। প্রধান শিক্ষক তার বিকাশ পিন নম্বর দেন নাই। পিন নম্বর না দেওয়ার কারণে তারা তাদের উপবৃত্তির টাকা উত্তোলন করতে পারে না। কিছু আগে উপবৃত্তির ৩৬০০ টাকা আসলেও তাকে ২০০০ টাকা দিয়েছে। প্রধান শিক্ষক টাকা উত্তোলন করে খেয়াল খুশিমত তদেরকে টাকা দেন।

রফিকুল ইসলাম জানান বিদ্যালয়ে তার ছেলের চাকুরী ও বেতন করে দেওয়ার কথা বলে প্রধান শিক্ষক বেলাল হোসেন তার নিকট থেকে ৫লাখ টাকা নিয়েছে। তিনি আরো জানান চাকুরী থেকে রিজাইন দিলে তার দেওয়া টাকা ফেরত দিবেন বলে স্বাক্ষর করে নেন তিনি কিন্তু এক বছর পার হলেও তাকে টাকা ফেরত দেন নাই।
জালাল উদ্দিন জানান ২০০১ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রধান শিক্ষক হিসাবে বেলাল হোসেন নিয়োগ প্রাপ্তির পর থেকে বিদ্যালয়ে বিভিন্ন অনিয়ম, শিক্ষক কর্মচারি নিয়োগ বানিজ্য  ও দুর্নীতি করে আসছেন। আমরা এই প্রধান শিক্ষকের বিচার চাই।
বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী শহিদুল ইসলাম জানান তার নিকট থেকে বেতন করা বাবদ এক লাখ টাকাসহ স্বাক্ষরকৃত দুইটি ফাঁকা ব্যাংক নিয়েছেন। বর্তমানে তার চাহিদা অনুপাতে টাকা না দেওয়ায় তাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিয়ে আসছেন। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে প্রধান শিক্ষক বেলাল হোসেনকে তার মুঠো ফোনে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই।
এ ব্যাপারে লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেহেদী হাসান জানান, এব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। একজন কর্মকর্তাকে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্য

সর্বশেষপঠিত

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon