কে. ডি পিন্টু (চট্টগ্রাম) :
বাংলাদেশের বিরাট আয়ের উৎস হচ্ছে বন্দর নগরী চট্টগ্রাম। আয়ের দিক থেকে ঢাকার পরেই এর অবস্থান। বর্তমানে চট্টগ্রামের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোটামুটি ভালো আছে, তবে এখনো সন্তোষজনক নয়। এই অবস্থা থেকে সন্তোষজনক অবস্থানে আনতে প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিভাবে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরো উন্নত করা যায় সে বিষয়ে চট্টগ্রামে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করেছি। শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষে সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে গণমাধ্যমের আন্তরিক সহযোগিতা থাকলে আরো দ্রæত এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
আজ স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব:) চট্টগ্রামের দামপাড়া পুলিশ লাইন্সে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সিভিল ডিফেন্স, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এর কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় শেষে সিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।
জুলাই অভ্যুত্থানে পুলিশ যে মনোবল হারিয়েছে সে অবস্থার কতটুকু উন্নতি হয়েছে এ প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, পুলিশের মানসিক অবস্থা উন্নতির গ্রাফ ধীরে ধীরে উপরের দিকে উঠতে শুরু করেছে । যেকোনো বিষয়ে মানুষের মনোবল হারালে সেটা কাটিয়ে উঠতে একটু সময় লাগে। এটা তো এমন বিষয় নয় যে আমি বললেই পরিবর্তন হয়ে যাবে। সকলের সহযোগিতা থাকলে আশা করি আরো দ্রæত এ অবস্থার উন্নতি ঘটবে।
চট্টগ্রামে অস্ত্রধারী অনেক চিহ্নিত সন্ত্রাসী আছে যারা জুলাই অভ্যুত্থানে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের উপর গুলি চালিয়েছে, তাদের অনেকেই এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে, তাদের জন্য কোন পদক্ষেপ আছে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ইতিমধ্যে অনেককেই ধরা হয়েছে, অভিযান চলছে। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মাধ্যমে আমাদেরকে যদি সহযোগিতা করেন, তবে আরো দ্রæততম সময়ে তাদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবো। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসীদের বিষয়ে তথ্য নিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি নির্দেশ দেন।
সর্বশেষ গুজব রটানো হলো পাকিস্তান থেকে আসা একটি জাহাজ নিয়ে। এটি নিয়ে জনমনে অনেক বিভ্রান্তিকর তথ্য এখনো ঘুর-পাক খাচ্ছে। জাহাজটি দেশের বন্দরে আসায় দেশের জন্য কোন আশঙ্কা সৃষ্টি হচ্ছে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, জাহাজটা মধ্যপ্রাচ্য থেকে আমাদের বন্দরে এসেছে, পণ্য খালাস শেষে অন্য আরেকটি বন্দরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। এ সময় তিনি বলেন, আমাদের বন্দর সকলের জন্য উন্মুক্ত। যে কোন দেশের জাহাজ এখানে আসতে পারে। আমরা কারো কাছে বন্দি নয়। জাহাজে করে বিশেষ করে খেজুর, পেঁয়াজ এবং গার্মেন্টস শিল্পের কাঁচামাল সহ অন্যান্য পণ্য আনা হয়েছে। যা দেশের মানুষের খাদ্য ঘাটতিসহ কাঁচামালের চাহিদার যোগান দিবে। তা নিয়ে যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে তারা দেশের শত্রু।
জুলাই অভ্যুত্থানের পর চট্টগ্রামে অনেক সাংবাদিকের নামে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে, মামলার তদন্ত হচ্ছে কি হচ্ছে না সে বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসব মামলা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি। এখন দেশের জনগণের পক্ষ থেকে নামে, বেনামে শত শত মামলা দিচ্ছে। এসব মামলার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোন সত্যতা নেই। কোন মিথ্যা মামলায় যাতে সাধারণ মানুষ অন্যায়ভাবে অপদস্থ না হয় সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
এসময় বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ, জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম ও র্যাবের মহাপরিচালক শহিদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য