জাবি প্রতিনিধি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অটোরিকশা নিষিদ্ধ করায় বিভিন্ন ধরনের তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তারা এই সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট নন। নিয়ন্ত্রিত গতির অটোরিকশা অথবা জোবাইক চালুর মাধ্যমে তাদের চলাচল সহজতর হবে।
গত ১৯ নভেম্বর অটোরিকশা দুর্ঘটনায় জাবি ৫৩ব্যাচের শিক্ষার্থী আফসানা করিমের নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২০ নভেম্বর এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে ব্যাটারি চালিত রিকশা, ভ্যান, ইজিবাইক ইত্যাদি যানবাহন ক্যাম্পাসে চলাচল নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন।
অটোরিকশায় চলাচল সহজতর ও সাশ্রয়ী হওয়ায় এটি অত্যন্ত শিক্ষার্থীবান্ধব ছিল। প্যাডেল রিক্সাগুলো দ্রুত চলতে পারেনা এবং ভাড়াও বেশি দিতে হয়। অনেকক্ষেত্রে ৪ গুণ পর্যন্ত বেশি ভাড়া নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে চালু হওয়া শাটল বাস সবসময় পাওয়া যায়না। কেউ অসুস্থ হলে কিংবা রাতের বেলা কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন হলে রিকশা পাওয়া যায়না। অটোরিকশা থাকাকালীন এমন সমস্যা কম ছিল।
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী লিজন আহমেদ বলেন, অটোরিকশা বন্ধের ফলে ভোগান্তির শেষ নেই। জরুরি প্রয়োজনে রিকশা পাওয়া যায় না,প্যাডেল রিকশার ভাড়া বেশি এবং নির্ধারিত ভাড়া তালিকা নেই, অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে চালকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা করতে হয়, চালকরা শিক্ষার্থীদের সাথে রূঢ় আচরণ করে, রাত ৯/১০টার পর প্যাডেল রিকশা পাওয়া যায় না, ছেলেদের সবগুলো হলে শাটল বাস যায়না, প্যাডেল রিকশায় কম যাত্রী নেওয়া হয়, যা ব্যয়বহুল এবং শিক্ষার্থী-বান্ধব নয়। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা আরও কার্যকর পরিবহন ব্যবস্থা এবং তাদের সুবিধার প্রতি প্রশাসনের নজরদারি দাবি করছেন।
শাশ্বত প্রামাণিক বলেন, রিকশা বন্ধের কারণে ক্যাম্পাসের ৯০ ভাগ শিক্ষার্থী সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। যাদের ব্যক্তিগত বাহন নেই তাদের পাশাপাশি বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীরা
সবচেয়ে বেশি সমস্যা সম্মুখীন হচ্ছেন। রিকশার বিকল্প হিসেবে জোবাইক চালু করা যেতে পারে।
রাতের বেলা কেউ অসুস্থ হলে এই পায়ে ঠেলা রিকশার জন্য কেমন ভোগান্তি পোহাতে হয়ে থাকে তা আমরা যারা অসুস্থ হয়েছি তারাই জানি।
৬৯৭ একরের এতো বড়ো ক্যাম্পাসে অটোরিকশার বিকল্প আমি কিছুই দেখি না। তবে সেটার গতির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকতে হবে। যাতে করে ক্যাম্পাসে কোনোরকমের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে।
সালসাবিল মালিহা ফেরা বলেন, আবার অটোরিকশা চালু করা হউক। এখন রাস্তায় যথেষ্ট লাইটিং করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় যায়গায় স্পিডব্রেকার দেওয়া হয়েছে। এখন প্রয়োজন ফুটপাথ তৈরি করা। মনিটরিং ব্যবস্থা জোড়ালো করা। অটোরিকশার বিকল্প নাই। প্রশাসন কোনভাবেই শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির দায় এড়াতে পারেনা।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডেপুটি রেজিস্ট্রার আজিজুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির বিষয়গুলো আমরাও বুঝি। তাদের সুনির্দিষ্ট লিখিত প্রস্তাবনা আসলে আমরা সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে কাজ করতে পারি। আমরা এখনো পর্যন্ত আমরা কোন অভিযোগ পাইনি। অতিদ্রুতই রাস্তা সংস্কার কার্যক্রম শুরু হবে। রাস্তায় সহজে চলাচলের জন্য ফুটপাত তৈরি করা হবে। তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের যেকোনো সমস্যা জানালে প্রশাসন সেটির সমাধানে সচেষ্ট থাকবে।
মন্তব্য