জাবি প্রতিনিধি
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অন্যতম সমন্বয়ক জিয়াউদ্দিন আয়ান ২ দফা দাবীতে জাবি প্রশাসনিক ভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসেছেন।
রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টা নাগাদ তিনি আমরণ অনশন শুরু করেন।
তার দাবি গুলো হলো, ১. জুলাই মাসে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হাম*লাকারী ও হাম*লার সাথে জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করা। ২. অবিলম্বে জাকসু কার্যকরের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
এব্যাপারে জিয়াউদ্দিন আয়ান বলেন, জুলাই গনঅভ্যূথত্থানে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনে হামলা করা হয়, হামলাকারীদের গ্রেফতার বা বিচার এই ব্যাপারে এখন পর্যন্ত প্রশাসন কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেনি। আমরা দেখেছি, যারা হামলাকারীরা, তারা প্রকাশ্যে ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা ক্লাস পরীক্ষা দিয়ে বেড়াচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গত সেপ্টেম্বর মাসে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, এবং তাদের 30 কর্মদিবস তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার কথা ছিল, ৩০ কর্ম দিবস পার হয়ে যাওয়ার পর আজকে চার মাস পেরিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত তদন্ত কমিটি কোন রিপোর্ট প্রদান করতে পারেনি এবং মামলা গ্রহণের কোন প্রস্তুতি নিতে পারেনি। আমি এই ব্যাপারে হতাশ, এবং আজকে এই কারণেই দুই দফা দাবিতে আমরা অনশনে বসেছি।
গত ৮ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটকের বিপরীত পাশে, আমাকে এই জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিচার কার্য নিয়ে আন্দোলনে সরব হওয়ার জন্য আমাকে সরাসরি প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে এক মুখোশধারী ব্যক্তি পালিয়ে যায়। এবং তারই প্রেক্ষিতে, আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জিজ্ঞাসা করি, তারা একটি জিডি করে। কিন্তু এই ব্যাপারে কোন শনাক্ত করা এবং তাদের ধরার ব্যাপারে প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তাই আমি মনে করি যে আমাদের নিরাপত্তা আজ হুমকির পথে। আমাদের জীবন হুমকির পথে, যেহেতু হামলাকারীরা প্রকাশ্যে ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যেকোন সময় আমাদের উপর আঘাত আসতে পারে। তাই আমার দাবি হচ্ছে, আজকের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত কমিটি রিপোর্ট প্রদান করে মামলা গ্রহণের প্রস্তুতি নিবে, এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে মামলা করার জন্য একটা কমিটি গঠন করবেন। এই লিখিত আশ্বাস দিলে তবেই আমি অনশন থেকে সরে দাঁড়াবো।
একই সাথে বলতে চাই যে আমাদের যে জুলাই বিপ্লব, সেই বিপ্লবের অন্যতম নয় দফার অন্যতম সাত নম্বর দফা ছিল যে প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ কার্যকর করা। কিন্তু এখন পর্যন্ত এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, সে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখন পর্যন্ত এই আমাদের ছাত্র সংসদ জাকসু কার্যকর করার জন্য কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়নি। তারা বারবার দফায় দফায় মিটিং করেছে, আশ্বাস দিয়েছে। আমার দাবি, আজকের মধ্যেই জাকসু নির্বাচনের জন্য প্রশাসন রোডম্যাপ প্রকাশ করবে, এবং একই সাথে জাকসু নির্বাচনের জন্য আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন করবে।
উল্লেখ্য, এর আগে জিয়াউদ্দিন আয়ান কে হত্যার হুমকি দেওয়া হলেও প্রশাসন এখনো হুমকিদাতাদের শনাক্ত করতে পারে নি।
মন্তব্য