ঝালকাঠি প্রতিনিধি
কোরআনে কারিম শিক্ষার প্রাথমিক স্তর হচ্ছে মক্তব। ধর্মীয় জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে মক্তব হচ্ছে মুসলমানদের প্রথম পাঠশালা। প্রাচীনকাল থেকে মসজিদকে কেন্দ্র করে চলে আসছে মক্তব শিক্ষার কার্যক্রম। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়া মক্তবকে চালু করতে ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার আওরাবুনিয়া ইউনিয়নের ছোট কৈখালীতে হযরত মাওলানা মো: আব্দুল করিম (রহ.)এর স্মৃতি বিজরিত ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন সৈয়দ মুনছুর আহম্মদ নুরানী হাফেজী মাদ্রাসা ও ফিরোজা করিম এতিমখানায় শত ভাগ উপস্থিত ও বার্ষিক পরীক্ষায় ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করা হয়েছে।
সৈয়দ মুনছুর আহম্মদ নুরানী হাফেজী মাদ্রাসা ও ফিরোজা করিম এতিমখানায় আয়োজনে বৃহস্পতিবার দুপুরে মাদরাসা প্রাঙ্গণে মাদরাসার পরিচালক মাওলানা মিজানুর রহমান মুন্সীর সভাপতিত্বে পুরুস্কার বিতরন করেন এবং বক্তব্য রাখেন অত্র প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মো. গোলাম আজম সৈকত। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মাওলানা মসুদুর রহমান, মো. শের আলী, মো. আব্দুল হকসহ অভিভাবক গন ও ছাত্র/ছাত্রী বৃন্দ।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন, মুসলমান সন্তনদেন প্রথম পাঠশালা হচ্ছে এলাকাতেই মসজিদভিত্তিক কুরআন শিক্ষার প্রভাতী মক্তব। এখন আর আগের মতো শিশুদের দলবেঁধে কুরআন শিক্ষার জন্য মসজিদের মক্তবে যেতে দেখা যায় না। শিশুদের কুরআন শিক্ষা এবং ইসলাম সম্পর্কে প্রাথমিক জ্ঞানার্জনের শিক্ষাকেন্দ্র ছিল সকালের এসব মক্তব। সেখানে স্কুলের শিক্ষার্থীরা শুদ্ধভাবে কুরআন তেলাওয়াত, প্রয়োজনীয় মাসয়ালা, দোয়া-দরুদ ও নামাজ-রোজার নিয়ম-কানুন শিখত। এজন্যই আমার সৈয়দ মুনছুর আহম্মদ নুরানী হাফেজী মাদ্রাসা ও ফিরোজা করিম এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করেছি এ প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়মিত শুদ্ধভাবে কুরআন তেলাওয়াত, প্রয়োজনীয় মাসয়ালা, দোয়া-দরুদ ও নামাজ-রোজার নিয়ম-কানুন সকল ছাত্র ও ছাত্রীরা শিখবে।
এ বিষয়ে সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম বলেন, গ্রামবাংলার জনপদ ভোরবেলা মুখরিত ছিল কোরআন তেলাওয়াতে, এখন এসব ইতিহাস হয়ে যাচ্ছে। নানা কারণে মক্তবগুলো বন্ধ কিংবা বন্ধের পথে। এর প্রভাব পড়ছে নতুন প্রজন্মের মধ্যে। এ কারণে এলাকার শিশু-কিশোররা কুরআন শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কোথাও কোথাও নামমাত্র মক্তব চালু আছে। কিন্তু সেগুলোতেও আগের মতো জৌলুশ নেই। শিশুদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। ফলে আমাদের এখনকার ছেলেমেয়েরা শিক্ষিত হলেও শুদ্ধভাবে কুরআন শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে না। কোনো কোনো অভিভাবক হয়তো বাসায় প্রাইভেট টিউটর রেখে কুরআন শেখাচ্ছেন, তাতে কেউ কেউ কুরআন এক খতম করে দায়িত্ব শেষ মনে করছে। কিন্তু প্রতিযোগিতাপূর্ণ অনুশীলন ও চর্চা না থাকার কারণে পরবর্তী জীবনে কুরআন পাঠ ভুলে যাচ্ছে। আর তাই, এসব মক্তব নুরানী মাদরাসা চালু রাখতে আমাদের সবার আন্তরিক সহযোগিতা একান্ত কাম্য।
মন্তব্য