বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫
 

জবিতে দ্বিতীয়দিনের মত চলছে কমপ্লিট শাট ডাউন

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারী ২০২৫

---

আশিকুর রহমান, জবি প্রতিনিধি 

সেনাবাহিনীর কাছে জবি দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণ কাজ হস্তান্তরসহ ৩ দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালন করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা৷ তবে চালু রয়েছে কিছু দপ্তরের প্রশাসনিক কার্যক্রম।

আজ মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল থেকেই সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে  বিশ্ববিদ্যালয়টিতে৷ আগামীকাল বুধবার(১৫ জানুয়ারি)  শিক্ষা মন্ত্রণলয়ের স্টিয়ারিং কমিটির মিটিংয়ে তাদের দাবি পূরণের দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেয়া না হলে আন্দোলন জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা৷

গত রবিবার সকাল ৮টা থেকে ৩ দফা দাবিতে গণ-অনশন শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। এদিন রাতে অনশনে অসুস্থ হয়ে প্রায় ১৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। উপাচার্যের বারবার অনুরোধেও অনশন ভাঙেনি শিক্ষার্থীরা।সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে লিখিত অঙ্গীকার পাওয়ায় টানা ৩৫ ঘন্টা পর অনশন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী একেএম রাকিব। তবে বুধবার সভায় সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে শাট ডাউন কর্মসূচি চালু রাখার ঘোষণা দেন তিনি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পুরো ক্যাম্পাসেই অচলাবস্থা বিরাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক, প্রশাসনিক সব ভবনেই ঝুলছে তালা। কমপ্লিট শাটডাউনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে কোনো বিভাগেই ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। এমনকি কোনো শিক্ষার্থী ক্লাস পরীক্ষার জন্য ক্যাম্পাসে আসেনি। পুরো ক্যাম্পাসেই সুনশান নীরবতা বিরাজ করছে।  ক্যাম্পাসে কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতি দেখা মিললেও তাদেরও কোনো কাজের ব্যস্ততা নেই।

তবে শাটডাউনের মধ্যেও শিক্ষার্থীদের আনতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিভিন্ন রুটে নিয়মানুযায়ী বাস ছেড়ে গেছে বলে জানান পরিবহন দপ্তরের ডেপুটি রেজিস্টার মুনসুর আলম। তিনি বলেন, নিয়মানুযায়ী বাস আজ সকালে শিক্ষার্থীদের আনতে গিয়েছিল। আগামীকালও যাবে। তবে আজকে বিকালে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বাস ক্যাম্পাস ছেড়ে যাবে কিনা বলা যাচ্ছে না। যদি কোনো রুটে যাওয়ার মত শিক্ষার্থীদের পায়, তাহলে বাস যাবে। অন্যথায় বাস যাবে না।

এর আগে সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা পোষণ করে দাবি আদায়ে পাশে থাকার ঘোষণা দেয় শিক্ষক সমিতি। সোমবার দুপুর দুইটায় সেনাবাহিনীকে দ্বিতীয় ক্যম্পাসের কাজ হস্তান্তর নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়।এই চিঠিতে সেনাবাহিনীকে কাজ হস্তান্তর বিষয়ে বুধবার সচিবালয়ে সভা অনুষ্ঠিত হবে বলা হয়।

এ চিঠি আসার পর অনশনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে পাল্টা তিনটি দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো- সেনাবাহিনীর কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তরের চুক্তি অনতিবিলম্বে স্বাক্ষর করতে হবে। প্রয়োজনে স্পেশাল মিটিংয়ের মাধ্যমে তা সম্পূর্ণ করতে হবে এবং ভিজ্যুয়ালভাবে সকলের সামনে তা উপস্থাপন করতে হবে। শিক্ষার্থীরা অনশনে থাকাবস্থায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত অঙ্গীকার নিয়ে তা প্রকাশ করতে হবে। কয়েক মাস সময় নেওয়ার নাম করে কোনো প্রকার দীর্ঘসূত্রতার বন্দোবস্ত করা চলবে না। পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড. হাবিবুর রহমান হলের স্টিল বেইজড ভবনের কাজ দ্রুত শুরু এবং শেষ করতে হবে। যতদিন অবধি আবাসন ব্যবস্থা না হয়, ততদিন পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।

মন্ত্রণালয় থেকে লিখিত অঙ্গীকার পাওয়ায় টানা ৩৫ ঘন্টা পর অনশন প্রত্যাহার করে নেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় সংবাদ সম্মেলনে একেএম রাকিব বলেন, আগামী বুধবার যে মিটিং হবে সেখানে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর চুক্তি স্বাক্ষর হবে- এ মর্মে লিখিত অঙ্গিকার পেয়েছি।

এছাড়া বাণী ভবন ও ডা. হাবিবুর রহমান হলে অস্থায়ী স্টিল বেজড ভবনের নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এছাড়া ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীদের ভাতা দেওয়ার ব্যাপারে যাচাই ও আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ফলে আমরা আমাদের অনশন প্রত্যাহার করে নিচ্ছি।

যেহেতু তাঁরা তিনটি দাবির দুইটি মেনে নিয়েছেন এবং একটি যাচাই করে দেখবেন, সেহেতু আমরা অনশন প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। তবে বুধবারের মিটিংয়ের আগ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম শাট ডাউন থাকবে।

মন্তব্য

সর্বশেষপঠিত

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon