বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫
 

ইন্দুরকানীতে বিএনপি ও যুবদ নেতার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

---

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)র পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়ন শাখার সদস্য সচিব মো: শাফায়েত হোসেন ও তার ছোট ভাই ইউনিয়ন যুবদল নেতা মো: কাইউম হোসেনের বিরুদ্ধে নিজ এলাকায় বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

 

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, এই বিএনপি ও যুবদল নেতা শাফায়েত ও কাইউম আপন ভাই। জুলাই বিপ্লবের আগে একাধিক মামলায় শাফায়েত দীর্ঘ কয়েক বছর কারাগারে ছিল এবং কাইউম ঢাকায় গাড়ি চালাতেন। হাসিনা সরকারের পতনের পর এলাকায় সরব হতে দেখা যায় এই দুই নেতাকে। এর পর থেকে তাদের নিজ এলাকা চন্ডিপুরের বিভিন্ন জায়গায় জড়িয়ে পড়েছেন চাঁদাবাজি, মাদক কারবারি, ঘরবাড়ি লুটসহ নানা অপরাধে৷ এই দুই নেতা ও তার আরও দুই ভাইদের মাধ্যমে স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এছাড়াও শাফায়েত এর নামে রয়েছে একাধিক মামলা।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর আমাদের ঘরের জমি নিয়ে পাসের ঘরের সাথে বিরোধ থাকায় তারা বিএনপি নেতা শাফায়েতসহ কয়েকজন লোক এসে রাতে আমার ঘর ভাংচুর করে।

আরও এক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপি কর্মীর সাথে কথা বলে জানা যায়, সে পেশায় একজন ভ্যান গাড়ি চালক। সেই গাড়ি থেকে বিএনপি নেতা শাফায়াতের বোন পড়ে যাওয়ায় ভ্যান চাকের ছেলেকে তুলে নিয়ে বিএনপি অফিসে এনে শাফায়েত এর লোকজন এলোপাতাড়ি মারধর করে গুরুতর আহত করে।

 

চন্ডিপুর এলাকার বলেশ্বর নদী সংলগ্ন মন্ডলবাড়ির এক হিন্দু নারী জানান, সরকার পতন হওয়ার পরে আমাদের প্রতিবেশী এক ঘর থেকে রাতে কয়েকজন লোক এসে টিভি, স্মার্ট মোবাইল ও নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এবং বিভিন্ন হুমকি দিয়ে চলে গেছেন ওইসব লোকজন। পরে এলাকায় জানাজানি হলে স্থানীয়দের চাপের মুখে শাফায়েত টিভি ও মোবাইল ফেরত দিয়ে আসলেও নগদ টাকা ফেরত দেয়নি। বর্তমানে এখানকার ৩/৪ টি পরিবার বসতঘর ছেড়ে চলে গেছে।

 

স্থানীয় এক যুবদল কর্মী অহিদুল ইসলাম জানান, চন্ডিপুর বাজারের একজন দোকানদার ও দুজন শিক্ষার্থীদের দিয়ে জোরপূর্বক মাদকদ্রব্য বিক্রির জন্য বল প্রয়োগ করে শাফায়েত ও তার ভাই কাইয়ুম এছাড়াও তারা স্থানীয় বিভিন্ন মানুষের ওপর নির্যাতন ও নিপীড়ন চালিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।

 

এসব বিষয় নিয়ে চন্ডিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ মশিউর রহমান মঞ্জুর সাথে কথা বল্লে তিনি এসব ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, শাফায়াত ও কাইয়ুম দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে আসছে। বিশেষ করে ৫ই আগস্ট ২৪ সালের পর থেকে বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজি অবৈধ ভাবে জায়গা ও দোকানপাট দখলসহ এলাকায় নানা ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে আসছে মানুষজন তাদের ভয়ে মুখ খুলতে পারছে না।

 

তিনি আরও বলেন, শাফায়েত একটি মামলায় যখন জেলে ছিলো তখন এলাকার কিছু মানুষের কাছ থেকে টাকা তুলে ওর জামিন করিয়েছে। শাফায়েতের রাজনীতি ছাড়া কোন ইনকাম নাই। বর্তমানে তার বসতঘর সে ইট দিয়ে বিল্ডিং করে। কিছুদিন আগে এক ঔষধ ব্যবসায়ী টাকা পাবে সেই টাকা চাওয়ায় তাকে মারধর করে।

 

তবে বিএনপির ওই নেতা শাফায়েত ও তার ভাই যুবদল নেতা কাইউম এর কাছে এ বিষয়গুলোর সত্যতা জানতে চাইলে তারা বলেন, এলাকার বিভিন্ন মানুষের দুর্দশা ও অসহায়দের পাশে দাঁড়ান এবং মাদকবিরোধী কর্মকান্ডে বাধা দেওয়ার কারণে তাদেরকে উদ্দেশ্য প্রণীতভাবে গুজব ছড়িয়ে তাদেরকে ফাঁসনোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে ঘর লুটপাট করার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, কিছু লোকজন ওই রাতে মন্ডলবাড়ি থেকে টিভি, মোবাইল ও টাক আনে। পরে টিভি ও মোবাইল তাদের কাছথেকে উদ্ধার করে ফেরত দিয়ে আসি।

 

এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মো: ফরিদ আহমেদ জানান, এসব ঘটনার মধ্যে দু’একটা জানতে পেরেছি। যদি তথ্য এবং প্রমাণ পাই তাহলে আমরা উপজেলা কমিটি আলোচনা করে বহিষ্কার করবো।

 

ইন্দুরকানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মারুফ হোসেন জানান, এসব ঘটনা শুনেছি। তবে আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ আসেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্য

সর্বশেষপঠিত

এলাকার খবর

Developed By: Dotsilicon