জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অনার্স ৪র্থ বর্ষের এক ছাত্রের রিপোর্টের ফলাফলে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গ্রেড করিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী রবিন হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী। এ বিষয়ে উপাচার্য বরাবর একটি অভিযোগপত্র দায়ের করেছেন তিনি। এছাড়া সুবিচার না পেলে অনশনে বসবেন বলে জানিয়েছেন রবিন।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) জাবি উপাচার্য বরাবর অভিযোগ পত্রটি প্রেরণ করা হয়।
অভিযোগকারী রবিন জানান, তার বিগত শিক্ষাবর্ষের ফলাফল কখনও এত বাজে হয়নি। প্রায় ৫ মাস যাবৎ কঠোর পরিশ্রম করে রিপোর্ট তৈরী করেছেন। প্রতিমাসে সুপারভাইজারের সাথে যোগাযোগ রেখেছেন। তার রিপোর্টে সুপারভাইজার কোন বড় ভুল পাননি। তবে সুপারভাইজারের মূল্যায়নের পর পরবর্তী পরিক্ষকগণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নম্বর কমিয়ে দিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমি চাই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক এবং প্রয়োজনে এই রিপোর্ট ঢাবি, রাবি অথবা চবিতে পাঠিয়ে পূনর্মূল্যায়ন করা হোক। যদি একই নম্বর তাঁরাও দেন তাহলে তা মেনে নিবো। আর যদি এমন না হয় তাহলে জড়িত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মোঃ রবিন হোসেন অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, গত ৫ মার্চ আমার অনার্স ৪র্থ বর্ষের রেজাল্ট প্রকাশিত হয়। আমি গত ১০ মার্চ ফলাফলের গ্রেডশীট উত্তোলন করি। সেই গ্রেডশীটে আমার ‘Research Report’ কোর্সে ‘D’ গ্রেড দেখতে পাই, যা আমার প্রত্যাশার চেয়ে বহুলাংশে কম। বিগত বছরে অনার্সের কোন পরীক্ষায় আমি ‘D’ গ্রেড পাই নাই। আমার বিভাগের ‘ওয়াইল্ডলাইফ’ ব্রাঞ্চের কিছু শিক্ষক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এটা করেছেন। এমতাবস্থায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে আমার এই রিপোর্টটির রেজাল্ট পুনঃনীরিক্ষন না করা হলে, আমি আমরণ অনশনে বসবো।
প্রাণিবিদ্যা বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষকদের অভ্যন্তরীণ গ্রুপিংয়ের কারণে এধরনের ঘটনা ঘটেছে। এর আগেও শিক্ষকদের এমন গ্রুপিংয়ের শিকার হয়েছেন অত্র বিভাগের অনেক শিক্ষার্থী। এক শিক্ষার্থী বলেন, রিপোর্টে ফেইল দেওয়ার ইতিহাস এই প্রথম রচিত হল।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সুপারভাইজার অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খানের নিকট রিপোর্টের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগের। আমি ৮জন শিক্ষার্থীর রিপোর্ট মূল্যায়ন করেছি। তাদের রিপোর্টের মান মোটামুটি পাশাপাশি ছিল। কিন্তু দুজনের ফলাফল একেবারে অস্বাভাবিক এসেছে। রনজিত সরকার নামের একজন শিক্ষার্থীকে ফেইল দেওয়া হয়েছে। আর অভিযোগকারী রবিন হাসানকে টেনেটুনে পাস করানো হয়েছে। ফলাফল কোন অবস্থাতেই এমন হওয়ার কথা নয়। আমি ইতোমধ্যেই এই বিষয়ে বিভাগীয় সভাপতিকে জানিয়েছি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, আমি এখনও অভিযোগপত্র হাতে পাইনি। সম্ভবত আমার অফিসে রাখা হয়েছে। কেউ অধিকার বঞ্চিত হলে অভিযোগ দেওয়ার অধিকার রয়েছে। অভিযোগ হাতে পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যেকে/এইচ
মন্তব্য